থমথমে আমতলী, জনমনে আতঙ্ক।

প্রকাশিত: ৫:৩২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১১, ২০২০

থমথমে আমতলী, জনমনে আতঙ্ক।
 মোঃ হাইরাজ বরগুনা প্রতিনিধি :- বরগুনার আমতলী উপজেলার ত্রিশ হাজার বাড়ীতে বাঁশ ও রশির বেড়া দেয়া হয়েছে। কারো বাড়ীতে কেউ প্রবেশ করতে পারছেনা। বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাইন বিল্লাহ আমতলী উপজেলাকে লকডাউন ঘোষনা করা পর থেকে নিজ উদ্যোগে বাঁশ ও রশির বেড়া দিয়ে বাড়ী লকডাউন করে রেখেছেন উপজেলাবাসী। শনিবার উপজেলার মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক ও গ্রামীণ সড়কে কোন ধরনের যানবাহন চলছে না এবং বাজারে মানুষের সমাগম নেই। জানাগেছে, আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জিএম দেলওয়ার হোসেন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার মৃত্যুবরন করেন। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটায় বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাইন বিল্লাহ আমতলী উপজেলাকে লকডাউন ঘোষনা করেছেন। মানুষকে সচেতন করতে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে উপজেলার সর্বত্র মাইকিং করা হয়েছে। পুলিশ আমতলীর প্রবেশ পথ শাখারিয়া, বান্দ্রা চেকপোষ্ট বসিছেন। সর্বক্ষনিক পুলিশ চেকপোষ্টে অবস্থান করছে। পন্য পরিবহন ও এ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোন গাড়ী প্রবেশ করছে না। মানুষ জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। উপজেলার অন্তত ত্রিশ হাজার বাড়ীতে নিজ উদ্যোগে বাঁশ ও রশি দিয়ে বেড়া দেয়া হয়েছে। কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। ফাঁকা পড়ে আছে উপজেলার মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক ও গ্রমাীন সড়ক। কিন্তু জনমনে রয়েছে অজানা আতঙ্ক। শনিবার খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বাঁধঘাট চৌরাস্তায় শাহজাহান আকনের মুদি মনোহরদি ও ঔষধের দোকান ছাড়া শহরের সকল দোকানপাট বন্ধ। সড়কে নেই কোন লোকজন। মানুষ বাড়ীতে নিরাপদে অবস্থান করছে। গাজীপুর বন্দরের তিন মুদিমনোহরদি ও ঔষধের দোকান ছাড়া সকল দোকান বন্ধ। এছাড়া শাখারিয়া, মহিষকাটা, চুনাখালী, খেকুয়ানী, আড়পাঙ্গাশিয়া, মানিকঝুড়ি, খুড়িয়ার খেয়াঘাট, খলিয়ান, বান্দ্রা, ঘোপখালী, গুলিশাখালী, কাঠালিয়া, অফিসবাজার, আজিমপুর, সোনাখালীসহ উপজেলার সকল বাজারের দোকনপাট বন্ধ রয়েছে। সাড়া উপজেলাব্যপী চলছে সুনসান নিরবতা। অপরদিকে প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষ তাদের বাড়ীর মুল ফটকে বাঁশ ও রশি দিয়ে বেড়া দিয়ে রেখেছেন। তারা কোন মানুষকে বাড়ীতে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। প্রবেশ পথে বেড়ার সাথে লিখে রেখেছেন হাত ধুয়ে নিন। অনুমতি ছাড়া কেউ ভিতরে প্রবেশ করবেন না। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষায় এমন কড়াকড়ি উদ্যোগ তাদের। প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলেও লেগেছে লকডাউনের ছোয়া। পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা বলেন, গ্রামের মানুষ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষায় নিজ উদ্যোগে বাড়ীর দরজায় বাঁশ ও রশির বেড়া দিয়ে রেখেছেন। কাউকে বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের শাহ আলম বলেন, গ্রামে চলছে সুনসান নিরবতা। গ্রামের অনেক বাড়ীর দরজায় বেড়া দিয়ে রেখেছেন। আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ঘোপখালী গ্রামের সাইদুল হাওলাদার বলেন, গ্রামের মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাড. নুরুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসকের ঘোষিত লকডাউন গ্রামের সকল মানুষ মেনে চলছে। লকডাউন ঘোষনার পর থেকে গ্রামের প্রত্যেক বাড়ীতে বাঁশের অস্থায়ী বেড়া দিয়ে রেখেছেন। মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। কুকয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বোরহান উদ্দিন মাসুম তালুকদার বলেন, ইউনিয়নবাসীকে নিরাপদে রাখতে সকল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মানুষ নিজেরে রক্ষায় সচেতন হয়ে বাড়ীতে বাঁশের বেড়া দিয়ে রেখেছেন,যাতে কেউ বাড়ীতে প্রবেশ করতে না পারে। আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, মহাসড়কে চেকপোষ্ট বসিয়ে যথারীতি কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়েই চলছে লকডাউন। পন্যবাহী গাড়ী ও এ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোন যানবাহন সড়কে চলছে না। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কোন মানুষ ঘরের বাহিরে বের হচ্ছে না। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, জেলা প্রশাসকের ঘোষিত লকডাউন ঠিকমত চলছে। কেউ লকডাউন ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest