চৌধুরী নুপুর নাহার তাজ বিশেষ প্রতিনিধি, দিনাজপুর:- করোনা ভাইরাসের প্রাদোর্ভাবে খেটে খাওয়া মানুষগুলো যখন কর্মহীন হয়ে পড়ে, যখন মানুষগুলোর বাড়িতে খাবার নেই ঠিক তখনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার কৃতি সন্তান বিশিষ্ট সমাজসেবী মাই ফ্রেশ ওয়াটার টেকনোলজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক লিয়ন চৌধুরী। লিয়ন দিন নেই রাত নেই ছুটে যাচ্ছেন দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলায়। অনাহারির মুখে খাবার তুলে দেওয়াই তার উদ্দেশ্য। করোনা ভাইরাস যেন ছড়াতে না পারে সরকার সে জন্য হোটেল রেস্তোরা সব বন্ধ করেন যার কারনে রাস্তার অবলা পশুরা যখন না খেয়ে দিন পার করছেন তখন তাদের কথাও ভেবেছেন লিয়ন চৌধুরী। শুধু অনাহারী মানুষের নয় পশুদেরো খাবারের ব্যাবস্থা করেন তিনি। কয়েকদিন আগে লিয়নের প্রদত্ত খাদ্য দ্রব্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করেছেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মোঃ মাহমুদুল আলম। তিনি হত-দরিদ্রদের মাঝে এ খাবার সামগ্রী বিতরণ উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। ২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে খানসামা উপজেলার হোসেনপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সহায়তা সামগ্রী বিতরণকালে জেলা প্রশাসক বলেন, করোনা ভাইরাস আমাদের দেশের শুধু নয়, সারা বিশ্বের সমস্যা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বিভিন্নভাবে এ ভাইরাস মোকাবিলা করছে। আমাদের দেশেও বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সরকার ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, আমরা তা পালনের চেষ্টা করছি। আর জনগনকেও সচেতন হতে হবে। আমাদের কাজে সহায়তা করতে হবে। হত-দরিদ্রদের মাঝে সহায়তা সামগ্রী বিতরণকালে লিয়ন চৌধুরী খানসামার নিজের বাড়ীকে হাসপাতাল তৈরীর ঘোষনা দিয়ে বলেন, সরকার যদি মনে করেন, আমার বাড়ীটি করোনা আইসোলেশন হাসপাতাল করার প্রয়োজন, আমি সঙ্গে সঙ্গে তা সরকারকে দিয়ে দিবো। সেখানে সরকার ইচ্ছা করলেই হাসপাতাল গড়ে তুলতে পারবে। বাড়ীটি সম্পূর্ণ নতুন বাড়ী। পানি-বিদ্যুৎসহ সব লাইন করা রয়েছে। শুধু বেড বসালেই হাসপাতাল গড়ে তোলা সম্ভব। তিনি বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষের তথা আমাদের মমতাময়ী মা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের আশা-ভরসার আশ্রয়স্থল। তার নির্দেশ মোতাবেকই আমি আমার ক্ষুদ্র কোম্পানীর পক্ষ থেকে সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করছি। প্রধানমন্ত্রী সহায়তা সামগ্রীর মধ্যে সাবান যুক্ত করতে বলায় আমি তাতে সাবান যুক্ত করেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী সকল কাজ করলে আমরা করোনা মুক্ত বাংলাদেশ সহজেই গড়তে পারবো। সেজন্য সবার আগে প্রয়োজন সচেতনতা। সবাইকে বাড়ী বাড়ী থাকতে হবে। কারো বাড়ি বের হওয়া যাবে না। এ ভাইরাস মোকাবেলা করতে ঘরে থাকার কোন বিকল্প নেই। যারা আমরা এটা মানতে পারবো না, তারা নিজের এবং দেশের ক্ষতিই করবো। কাজেই সবাইকে সচেতনতার সাথে এ নিয়ম মানতে হবে। দিনে আনে দিন খায়-এমন ধরনের মানুষের ঘরে থাকা কষ্টকর। তাই তাদের সাহায্য সহযোগিতায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। সমাজের সকল বিত্তবান মানুষ যদি হত-দরিদ্রদের পাশে দাঁড়াই, তাহলে সমাজে আর কোন গরীব মানুষ না খেয়ে থাকবে না। আর কেউ বাড়ী হতেও বের হবে না। যে কোন মূল্যে এটা নিশ্চিত করতে হবে।বিতরণকৃত সামগ্রীর মধ্যে ছিল চাল, ডাল, তেল, লবন, চিড়া, সাবানসহ নিত্য প্রয়োজনীয় ৮ প্রকার সামগ্রী। এছাড়া তিনি গরীব অসহায় মানুষকে সহায়তার জন্য খানসামা উপজেলা প্রশাসনের নিকট ২০ হাজার টাকার একটি চেক হস্তান্তর করেন। তার এই কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় আজ ফুলবাড়ীতে ৩০০ পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করেন তিনি। এর আগে ৩০ মার্চ লিয়ন চৌধুরী খানসামা এলাকার গরীব অসহায় ও শ্রমজীবি মানুষের মাঝেও এসব সামগ্রী বিতরণ করেছেন। শুধু খানসামা নয়, দিনাজপুরের এপ্রান্ত থেকে ও প্রান্তে তিনি খাদ্য সামগ্রী দিচ্ছেন। একইভাবে তিনি ঢাকার বিভিন্ন এলাকাতেও সহায়তা করেছেন। তার এই মহান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।