রাজশাহীতে মানবিকতায় আটক আসামীর পরিবারের পাশে পুলিশ

প্রকাশিত: ৯:১৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২২, ২০২০

রাজশাহীতে মানবিকতায় আটক আসামীর পরিবারের পাশে পুলিশ
রাজশাহী ব্যুরো : চলতি মাসের ১৯ এপ্রিল সকাল ৬ টার দিকে রাজশাহীর বাগমারা থানাধীন ৯ নম্বর শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের ধামীন কামনগরের এক আম বাগানের মধ্যে আমগাছের নীচে গলায় লাইলনের রশি পেঁচানো অবস্থায় শ্রী সুখেন কুমার সরকাররের লাশ পাওয়া যায়। তিনি ধামিন কামমগর গ্রামের গোবিন্দচন্দ্র সরকারের ছেলে। এ বিষয়ে মৃত ব্যক্তির ভাই বাগমারা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে পুলিশ সুপার মো: শহিদুল্লাহ বিপিএম, পিপিএম এর দিকনির্দেশনায় তদন্তকার্যক্রম শুরু করে থানা পুলিশ। তদন্তের এক পর্যায়ে গোপন সূত্রে রাজশাহীর সদর সার্কেল সুমন দেবের নেতৃত্বে পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত আসামি তাহমিনা বেগম(৩৮) কে আটক করে। ওই নারী ওই ধামইন কামনগর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী। ওই নারী হত্যাকান্ডের বিষয়ে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। অবৈধ সম্পর্ক অর্থাৎ পরকীয়া ও টাকার লোভে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। তাহমিনা দুই বছর ধরে সুখেনের বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করে আসছে। এ সময় তাদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এছাড়া তাহমিনা পল্লব নামক এক ব্যক্তির বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করত এবং তার সাথেও তাহমিনার অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে। আর এ বিষয়টি নিয়ে সুখেন ও পল্লবের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এছাড়া সুখেন পলাশের কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা পেত যা পলাশ দিচ্ছিল না। পল্লবের রাতের বেলায় এক আমবাগানে সুখেনকে ডেকে নিয়ে আসার জন্য তাহমিনাকে পাচ হাজার টাকা দেয় এবং কৌশলে রাতের বেলায় তাহমিনাকে দিয়ে সুখেনকে আমবাগানে ডেকে নিয়ে আসে। সুখেন আমবাগানে আসলে সুখেন ও পল্লবের মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয় এবং একপর্যায়ে পরিকল্পিতভাবে পল্লবের ও তাহমিনা সুখেনের গলায় লাইলনের রশি পেঁচিয়ে সুখেনকে হত্যা করে। লাশ আমগাছের নীচে ফেলে রেখে নিজ নিজ বাড়ি চলে যায়। তাহমিনাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে খোজ নিয়ে জানা যায়, তাহমিনা একজন গরীব মানুষ এবং সংসারে দশম শ্রেণী পড়ুয়া এক মেয়ে ও দুইজন নাবালক ছেলে রয়েছে। তার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে আরেকটি বিয়ে করে ঢাকায় থাকে এবং তাহমিনা ও সন্তানদের কোন খোঁজখবর রাখে না। তাহমিনা মৃত সুখেন ও পল্লবের বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করে সংসার চালাত। করোনায় উদ্ভুত সংকটময় পরিস্থিতিতে তাহমিনা কারাগারে থাকায় তার সন্তানগুলি এক অসহায় ও মানবেতর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। তাই মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার মহোদয়ের দিকনির্দেশনায় তাহমিনার অসহায় সন্তানদের সার্বিক খোঁজখবর নেন ও প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী প্রদান করেন বাগমারার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান । আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় শুধু অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা নয়, পাশাপাশি সমাজের অসহায় মানুষদের পাশে সবসময় রয়েছে রাজশাহী জেলা পুলিশ। জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest