বরিশালে মোবাইল কোর্টের অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে ৭৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায়

প্রকাশিত: ৫:১৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২০

বরিশালে মোবাইল কোর্টের অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে ৭৯ হাজার টাকা জরিমানা আদায়
পারভেজ,বরিশাল প্রতিনিধিঃ বরিশাল জেলা প্রশাসনের নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজও বরিশাল নগরীতে মোবাইল কোর্ট অভিযান অব্যাহত আছে। আজ ২৭ এপ্রিল সোমবার সকাল থেকে বরিশাল মহানগরীতে ৩ টি মোবাইল কোর্ট টিম মাঠে অভিযান পরিচালনা করেন এসময় সাহেবের হাট বাজার, কর্ণকাঠী, চৌমাথা মোড়, নথুল্লাবাদ, কাশিপুর বাজার, বাংলা বাজার, আমতলার মোড়, সাগরদী, রুপাতলী, পুলিশ লাইন, বাজার রোড, গীর্জা মহল্লা, চকবাজার, জেলা খানার মোড়, কাঠপট্টি, নতুন বাজার এলাকায় জেলা প্রশাসন বরিশাল এর পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে বিশেষ বাজার মনিটরিং, জনসমাগম করে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রেখে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বরিশাল জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে ৭ টি প্রতিষ্ঠান এবং একজন ব্যক্তি কে মোট ৭৯ হাজার টাকা জরিমানা অাদায় করা হয়।

নগরীর বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এস, এম, অজিয়র রহমানের নির্দেশনায় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন। এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরিশাল মোঃ মারুফ দস্তেগীর, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম এবং এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আতাউর রাব্বী। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে গণসচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি এ সময় বিভিন্ন টি-স্টল, মুদি দোকান ও এলাকার মোড়ে মোড়ে যেখানেই জনসমাগম দেখা গেছে তা ছত্রভঙ্গ করা হয় এবং নিরাপদ দূরত্বে চলার নির্দেশনা, মাক্স পরার নির্দেশনা প্রদানের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন এর পক্ষ থেকে মাক্স বিতরণ করা হয়। এসময় সবাইকে যৌক্তিক প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে আসতে নিষেধ করা হয় এবং সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে জরুরি ঔষধ ব্যতীত সকল প্রকার দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়। এসময় মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনায় করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মারুফ দস্তেগীর।

অভিযান পরিচালনাকালে নগরীর ফজলুল হক এভিনিউ এলাকায় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে অপ্রয়োজনীয় দোকান মা ক্লোথ খোলা রেখে জনসমাগম করার অপরাধে পলাশ দেবনাথ কে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর ২৫ (১) ধারা মোতাবেক ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। লাইন রোড এলাকায় একই অপরাধে অনুরূপ আইনে মক্কা ইলেকট্রনিক্স দোকান কে ১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। একই স্থানে অপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখার অপরাধে আরএফএল এর রং ও পেইন্ট সামগ্রীর দোকান কে একই আইনে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি বাজাররোড এলাকায় একটি পাইকারি দোকান অতিরিক্ত মল্যে পণ্য বিক্রয় এবং মজুদদারি করার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৪০ ধারা মোতাবেক হাজী জাহাঙ্গীর স্টোর কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি ভোগ্যপণ্যের আড়ৎ, কাঁচা বাজার মনিটরিং করা হয়। অভিযানে প্রসিকিউশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর সৈয়দ এনামুল হক।

আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ এর একটি টিম। অপর একটি মোবাইল কোর্ট টিম এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সাইফুল ইসলাম এর নেতৃত্বে অভিযানকালে নগরীর সোনা মিয়ার পোল এলাকায় দ্রব্যমূল্যের তালিকা না থাকার অপরাধে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৩৮ ধারায় একটি দোকানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। নবগ্রাম রোডে একটি বাইকে গাদাগাদি করে তিনজন যাত্রী পরিবহনের মাধ্যমে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরীর অপরাধে দন্ডবিধির ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারা মোতাবেক বাইকের মালিককে ৫০০ টাকা এবং নতুন বাজার এলাকায় অপ্রয়োজনীয় একটি ইলেকট্রিকের দোকান খোলা রাখায় একই আইনে ১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযানে আইনানুগ সহযোগিতা প্রদান করেন র‍্যাব ৮ এর একটি টিম।

অপরদিকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ ও গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আতাউর রাব্বী এর নেতৃত্বে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় নগরীর বিভিন্ন স্থানে যেমন সাহেবেরহাট এলাকায় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে ১টি দোকানকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অাইন, ২০০৯ এর ৩৮ ধারা মোতাবেক ৫০০ টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করে মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম।

অভিযান শেষে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদ্বয় বলেন, জনগণকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা এবং করোনা ভাইরাসের বিস্তার এবং এটিকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীদের বাজার অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা রোধকল্পে নিয়মিত এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest