যানজটে অতিষ্ট শহরবাসী প্রশাসন নির্বিকার

প্রকাশিত: ৭:৪৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০১৯

যানজটে অতিষ্ট শহরবাসী প্রশাসন নির্বিকার
শামসুল কাদির মিছবাহ: সুনামগঞ্জ শহরের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম কিছু স্থানে তীব্র যানজটের কারণে অতিষ্ট সাধারণ মানুষ। শহরের পুরাতন বাসস্টেন্ড, কালিবাড়ি মোড়, ট্রাফিক পয়েন্টসহ বিভিন্ন মোড়ে প্রতিদিন তীব্র যানজট সুষ্টি হয়। বিশেষ করে সকালে যানজটের কবলে পড়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালতগামী মানুষজনকে। দ্বিতীয়দফা যানজটের সৃষ্টি হয় বিকালের দিকে। এতে করে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ মানুষসহ স্কুল, কলেজ শিক্ষার্থী ও অফিসগামী কর্মব্যস্ত মানুষকে। দীর্ঘদিন ধরে সৃষ্ট যানজটের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জোর তৎপরতা লক্ষণীয় নয়। শহরের পুরাতন বাসস্টেন্ডসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না থাকা, পুরাতন বাসস্টেন্ডে আন্ত:জেলা বাস যত্রতত্র পার্কিং, লেগুনা, সিএনজি, অটোরিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা, ফুটপাতে ভ্রাম্যমান দোকানপাটকেই দায়ি করছেন সুধিমহলসহ সাধারণ মানুষ। তবে শহরে প্রতিদিন যানজটের বিষয়টিকে যানজট বলে মানতে নারাজ ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টি আই এডমিন)। মো. শামসুল আলম। তিনি বলেন, গত রবিবারের যানজট সৃষ্টি হয়েছে জামাইপাড়া রাস্তায় কাজ চলায় রাস্তা বন্ধ থাকার কারণে। শহরে রাস্তাঘাটের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য মাঝেমধ্যে কিছুটা যানজন হতেই পারে। এটাকে রেগুলার বলা যাবে না। সুনামগঞ্জ জেলা সিএনজি চালিত অটোরিকশা, বেবিটেক্সি ও টেক্সিকার মালিক সমিতির সভাপতি তাজিদুর রহমান বলেন, শহরের পুরাতন বাসস্টেন্ডে লেগুনা, সিএনজি গাড়ী ২৬/২৭বছর ধরে যাত্রীসেবা দিয়ে আসছে। এগুলো দেশের সব জায়গায়ই শহর কেন্দ্রিক থাকে। এতে করে যাত্রীদের সুবিধা বেশি হয়। শহরে যানজট সৃষ্টি করে মূলত আন্ত:জেলা বাস এবং অবৈধ অটোরিকশা। তিনি আরো বলেন, অটোরিকশা নিষিদ্ধ হলেও এটাকে কেনো পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে না তা বোধগম্য নয়। অটোরিকশা বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জোর তৎপরতা বাড়াতে হবে। আইনজীবী ও সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন বলেন, শহরে যাজট নিরসনে প্রশাসনের সদিচ্ছাই যতেষ্ট। আন্ত:জেলা বাস শহরে প্রবেশ করেও যানজটের সৃষ্টি করে। তাছাড়া ছোট যাবাহনের নির্দিষ্ট কোনো পার্কিং না থাকায় সমস্যাটা বেশি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমরা একসময় নতুন বাসস্টেন্ডে গিয়েই ঢাকাইয়া বাসে উঠতাম। আন্ত:জেলা বাসগুলো নতুন বাসস্টেন্ডের পুকুর ভড়াট করে সেখানে নিয়ে গেলে শহরে যানজট অনেকাংশে লাঘব হতো। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরাতন বাসস্টেন্ডে জনৈক ব্যবসায়ী বলেন, ঢাকাইয়া বাসগুলো সন্ধ্যার পর থেকে শহরে প্রবেশ করে দীর্ঘ সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। বাসগুলো রাস্তার পাশে প্রায় সময়ই দাঁড় করিয়ে রাখে। বড় গাড়ি হওয়ায় রাস্তায় ঘুরানোর সময় অন্যান্য ছোট যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে করে স্কুল, কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের মারাত্বক ভোগান্তি পোহাতে হয়। এবং স্কুলগামী ছোট বাচ্চাদের দুর্ঘটনার কবলে পড়ার ঝুকি থাকে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্কুলশিক্ষার্থী জানায়, আমদের ছোট শহরে যানবাহনের অধিক চাপ থাকায় প্রায়ই যানজটের কবলে পড়ে সটিক সময়ে বিদ্যালয়ে যেতে পারি না। তাছাড়া দুর্ঘটনার আশঙ্কা নিয়ে আমাদের পথ চলতে হয়। শহরকে ঝুঁকিমুক্ত ও শহরের সৈন্দর্য্য ধরে রাখতে যানবাহনগুলো শহরের বাইরে স্ট্যান্ড করার দাবি জানায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, শহরের প্রানকেন্দ্র পুরাতন বাসস্টেন্ডে বিভিন্ন আন্ত:জেলা বাসসহ ছোট পরিবহনগুলোর পার্কিং ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। যার ফলে প্রায়ই রাস্তায় দাঁড় করিয়ে যাত্রী উঠানামা করানো হয়। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে সন্তানদের সড়ক নিরাপত্তাহীতায় সর্বক্ষণ তাঁরা উদ্বিগ্ন থাকেন। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং শহরকে যানজট মুক্ত ও সুন্দর রাখতে আন্ত:জেলা বাস, সিএনজি, লেগুনা, লাইটেস ও কারস্টেন্ড পুরান বাসস্টেন্ড থেকে অন্যত্র স্থানান্তরের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।

মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest