ঢাকা ২০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:০২ অপরাহ্ণ, জুন ১০, ২০২০
খাদেমুল মোরসালিন শাকীর,
রংপুরে করোনার লাগাম টেনে ধরার ব্যর্থতা দিন দিন স্পষ্ট হচ্ছে। আর এতে করে জেলার পরিস্থিতি এখন উদ্বেগজনক। স্বাস্থ্যবিধি না মানাসহ সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে বেপরোয়া চলাফেরায় ক্রমাগত বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
চলতি মাসের গেল (১ হতে ৯ জুন পর্যন্ত) নয়দিনে এ জেলায় করোনা সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে ১০৪ জন। এখন এই ভাইরাসে রংপুর জেলায় মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫৪০ জনে দাঁড়িয়েছে। যা রংপুর বিভাগের আট জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
সারাদেশের মধ্যে আক্রান্তের দিক থেকে রংপুর জেলা এখন এগারো নম্বরে অবস্থান করছে। এই জেলার আগে রয়েছে ময়মনসিংহ, সিলেট, নোয়াখালী, কক্সবাজার, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও ঢাকা।
আক্রান্তের হার বলছে, রংপুরে গড়ে প্রতিদিন দশজনেরও বেশি মানুষ করোনা সংক্রমিত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন। যার মধ্যে রংপুর মহানগর এলাকায় সংক্রমিত রোগী মারাত্মকভাবে বেড়ে চলেছে। আক্রান্তদের মধ্যে পুলিশ, র্যাব, চিকিৎসক ও নার্সসহ বিভিন্ন সরকারি-সেরকারি স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা সংশ্লিষ্টরা এবং ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
রংপুর মেডিকেল কলেজের করোনা শনাক্তকরণ (পিসিআর) ল্যাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২ এপ্রিল থেকে ৯ জুন পর্যন্ত ঊনসত্তর দিনে ৬৬ ধাপে ৯ হাজার ৯৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ৬’শ ৯৬ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণের পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। মোট শনাক্তের মধ্যে রংপুর জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল ৪ এপ্রিল। এরপর থেকে পুরো এপ্রিল মাসে শনাক্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৩৯ জনে। মে মাসে সেই সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বাড়ে। শুধু ওই মাসের শনাক্ত হয় ৩৮১ জন। বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব ও রংপুর থেকে ঢাকায় পাঠানো নমুনা পরীক্ষার সবশেষ (৯ জুন পর্যন্ত) তথ্য হিসাবে জেলার মোট করোনা শনাক্ত রোগী ৫৪০ জন।
জেলায় একদিনে সর্বোচ্চ ৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয় ৮ মে। এরপর থেকে ক্রমেই বাড়তে আছে আক্রান্তের সংখ্যা। বর্তমানে মোট আক্রান্তের মধ্যে চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়িতে এবং হাসপাতাল থেকে সুস্থ্যতার সংখ্যা ২৪০ ছাড়িয়েছে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন নয়জন।
এদিকে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে করোনা প্রতিরোধে রংপুরে গঠিত নাগরিক কমিটির আহবায়ক খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জু বলেন, মানুষের বেপরোয়া চলাফেরা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় কারণে করোনা এখন ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। এই পরিস্থিতিতে যতবেশি নমুনা পরীক্ষা করা হবে, ততই বেশি শনাক্তের বাড়ছে। সচেতনতা, সতর্কতা এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে না চললে করোনার হটস্পটে পরিণত রংপুরে ভয়াবহ বিপর্যয় মেনে আসবে।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST