ঢাকা ১৬ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩১ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:২৬ অপরাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২০
মোঃ সাগর মল্লিক
বাগেরহাট প্রতিনিধি
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার পিলজংগ ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোস্তফা
কামাল হারুন এর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে সরকার কর্তৃক
গৃহহীনদের সরকারী ভাবে ঘর করে দেবার নাম করে ইউপি সদস্য মোস্তফা কামাল হারুন ৫০০
টাকা থেকে ৩০০০ টাকা অবদি গ্রহণ করেছে। কিন্তু অর্থ প্রদান করা সেসকল অসহায় মানুষের
ঘর পাওয়া হলোনা এখনো। মোস্তফা কামাল হারুণ ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে
ক্ষমতার জোরে এমন অনেক দুর্নিতী করেছে।
ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে সরেজমিনের অনুসন্ধ্যানে গিয়ে জানা গেছে , মৃতঃ শেখ মাকসুদ
আলমের স্ত্রী শাহিদা বেগমের কাছ থেকে জানা গেছে বয়স্ক ভাতার জন্য ইউপি সদস্য মোস্তফা
কামাল হারুন ৫০০ টাকা চেয়েছিল কিন্তু হতদরিদ্র এই মহিলা ৩০০ টাকা তার কাছে
দিয়েছিলো। এবং এই টাকা চাওয়ার সময় বলেছিলো কাগজপত্র করার জন্য লাগবে। তিনি আরো
বলেন,আমাকে বলেছিলো ঘর করে দেওয়ার কথা অফিস খরচ বাবদ চেয়েছে ১০০০ টাকা কিন্তু আমি
টাকা দিতে পারিনি। পরে ঝড়ের কবলে আমার ঘরের ক্ষতি হলে এলাকার মানুষের থেকে সাহায্য নিয়ে
এই ঘর কোনভাবে ঠিক করেছি।
একই ওয়ার্ডের মোঃ খালেক শেখ এর ছেলে মোঃ খলিল শেখ বলেন, দেড় মাস আগে আমাকে ঘর করে
দেবার কথা বলে হারুন মেম্বার ৩০০০ টাকা নিছে। আমি যখন জানতে চাইছি কিসের জন্য
টাকা লাগবে তখন হারুন মেম্বার আমাকে বলছে ঘর আনতে গেলে টাকা লাগবে। শুধু তাই নই
শিশু ভাতা করার জন্য ও হারুন মেম্বার ৩০০০ টাকা চেয়েছে,আমার কাছে টাকা না থাকায় কার্ড
করে দেইনি। তিনি আরো বলেন,আমি কৃষান খেটে খাই, অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে তার
কাছে দিছিলাম। ভাবছি ৩০০০ টাকা খরচ করে যদি তিনটা বাচ্চা আর বউ নিয়ে যদি মাথা
গোজার মত ঘর পাই তাহলে সমস্যা কোথায়। কিন্তু তার ঘরের কোন হদিস সে পেলোনা।
শেখ হাবিবুর রহমানের ছেলে মোঃ মারুফ শেখ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, হারুন মেম্বার
আমার কাছে থেকে কাগজপত্র করা লাগবে,ছবি তোলা,এখানে ওখানে ফোন করা লাগবে সেই বাবদ
একবছর আগে ১০০০ টাকা চাইছিল, আমার কাছে টাকা না থাকায় আমি ৫০০ টাকা
দিছিলাম। কিন্তু এখনো আমাকে কোন ঘর দেইনি। আমার টাকা খেয়ে আমাকে শুধু ঘুরাচ্ছে।
আমার থেকে দুইবার কাগজ ও নিছে কিন্তু কোন ফলাফল আসেনি। শুধু তাই নই মারুফ শেখ তার
ছোট মেয়ের জন্য হারুন মেম্বারের কাছে গিয়েছিলো জন্ম সনদ করতে। তখন সে তার কাছ
থেকে ৮০০ টাকা দাবী কওে এত টাকা আমি দিতে পারিনি বলে আজো আমার মেয়ের
জন্মনিবন্ধন কার্ড করা হয়নি।
হারুন মেম্বারের কাছে টাকা হলেই কাজ হয় তাছাড়া কাজ হওয়া অসম্ভব। শুধু এখানেই শেষ নই
তার বিরুদ্ধে রয়েছে হাজার হাজার অভিযোগ। যখন সরকার দেশের অসহায় মানুষের উন্নয়নে কাজ
করে যাচ্ছে তখন কিছু দুর্নিতীগ্রস্থ ইউপি সদস্য শেষ সম্বল টুকুও কেড়ে নিয়ে নিজে
বানাছে টাকার পাহাড়, দামী ফার্নিচার। এমন অসাধু জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টান্ত সাজা দাবী
করেছে অত্র অঞ্চলের সাধারণ মানুষেরা।
এব্যাপারে ইউপি সদস্য মোস্তফা কামাল হারুন সাংবাদিবদের সাথে কথা বলতে চাননি।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খান শামীম জামান পলাশ বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত
ছিলাম না। যেহেতু জানতে পেরেছি সেহেতু অতিদ্রæত তদন্ত পূর্বক ব্যাবস্থা গস্খহণ করবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা: শাহানাজ পারভীন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত
হয়েছি। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যাবস্থা গস্খহণ করবো।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST