লালমনিরহাটে অনুদানের টাকার গরু চুরি,উদ্ধার হলেও ধরা পড়েনি চোর!

প্রকাশিত: ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১, ২০২০

লালমনিরহাটে অনুদানের টাকার গরু চুরি,উদ্ধার হলেও ধরা পড়েনি চোর!

পরিমল চন্দ্র বসুনিয়া,লালমনিরহাট প্রতিনিধি:

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় ক্যান্সারে আক্রান্ত অসহায় এক রোগীকে স্থানীয় সাংসদ মোতাহার হোসেন এমপির দেয়া অনুদানের টাকায় ক্রয়কৃত একটি গরু চুরির দুদিন পর উদ্ধার হলেও রহস্যজনক কারণে গরু চোরের লিডার জাহাঙ্গীর আলম (বুলু)সহ এখনো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ফলে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে এলাকাজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এদিকে চোরকে বাঁচাতে একটি পক্ষ বিভিন্ন যায়গায় জোর চেষ্টা তদবির করছেন বলে জানা গেছে।

বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার গেন্দুকুড়ী এলাকার মিয়াজি পাড়ার মন ভোলার ছেলে নুর হোসেন (৪৫) এর বাড়ি হতে গরুটি উদ্ধার করেন শাহা আলসহ স্থানীয়রা।
এর আগে গত সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দইখাওয়া এলাকার ভুটিয়া মঙ্গল এলাকার ক্যান্সারে আক্রান্ত শাহ আলমের বাড়ি হতে গরুটি চুরি হয়। পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে এবিষয়ে হাতীবান্ধা থানায় অভিযোগ করেন গরু মালিক শাহ আলম।

উক্ত গরু চুরির সাথে উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়ন (৬ নং ওয়ার্ড) গেন্দুকুড়ীর মিয়াজি পাড়া এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বুলু (৫৫), মৃত্যু শমসের আলীর ছেলে সাবিরুল ইসলাম (৪৫) মৃত্যু আবু কালাম/কাল্লাসুর ছেলে আব্দুর রহিম/গোবিন (৩০) ও দইখাওয়া এলাকার বাবুর ছেলে লাবলু (৩০), এছার উদ্দিনের ছেলে এনামুল (৪০) ও আজগারের ছেলে নওয়াব (৩৫) এর জড়িত থাকার সত্যতা পাওয়া গেছে। গরু চুরির ঘটনার লিডার জাহাঙ্গীর আলম বুলু সীমান্ত এলাকার কাটা তারের ব্যাড়া কেটে ভারতীয় গরু পারাপার, চোরাকারবারি, মাদক, বহু বিবাহসহ বিভিন্ন অপকর্মে সাথে জড়িত বলে এলাকাবাসী জানান।

জানা গেছে, উপজেলার দইখাওয়ার ভুটিয়া মঙ্গল এলাকার ক্যান্সারে আক্রান্ত শাহ আলমের চিকিৎসার জন্য দুই বছর আগে সরকারি ৫০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন স্থানীয় সাংসদ মোতাহার হোসেন এমপি। চিকিৎসার পাশাপাশি ঐ টাকার থেকে সাড়ে ১৫ হাজার ৫ শত টাকা দিয় এটি বাছুর ক্রয় করে লালনপালন করেন শাহা আলম দম্পতি। যার বর্তমান বাজার মুল্য প্রায় ৭৫ হাজার টাকা।

গত সোমবার গভীর রাতে সেই গরুটি চুরি হয়। অনেক খোজাখুজি পর মঙ্গলবার দুপুরে এবিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন গরু মালিম শাহা আলম। এরপর বুধবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার গেন্দুকুড়ী এলাকার মিয়াজি পাড়ার মন ভোলার ছেলে নুর হোসেনের বাড়ি থেকে গরুটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় শাহা আলমসহ স্থানীয়রা। পরে টংভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান (আতি) ও গোতামারী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাসেম সাবু মিয়াকে বিষয়টি অবগত করলে তারা নুর হোসেনের বাড়িতে গিয়ে গরু চুরির সাথে উপরোক্ত চোরদের নাম শুনতে পারেন।

এব্যাপারে কথা হলে নুর হোসেন বলেন, মঙ্গলবার রাত একটার দিকে চোরাকারবারি জাহাঙ্গীর আলম বুলুসহ সাবিরুল ও আব্দুর রহিম অরফে গোবিন তার বাড়িতে গরুটি রেখে যায়। তবে তিনি এ চুরির সাথে জড়িত নন বলে জানান।
এদিকে গরু চুরির সাথে জড়িত সাবিরুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি মঙ্গলবার রাতে জাহাঙ্গীর আলম বুলুর নেতৃত্বে ঐ গরুটি নুর হোসেনের বাড়িতে রেখে আসার সত্যতা স্বীকার করেন। (যার অডিও কল রেকর্ড মোবাইলে সংরক্ষিত আছে)।
চোরাকারবারি ও গরু চুরির লিডার জাহাঙ্গীর আলম বুলুর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি সাংবাদিকের কাছে বিষয়টি অস্বীকার করলেও পরে ম্যানেজ করার ব্যার্থ চেষ্টা করেন। তবে গোতামারী ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে ঐ ভুটিয়া মঙ্গল এলাকার এনামুল, নওয়াব ও লাভলু এ চুড়ির সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। (যার অডিও কল রেকর্ড মোবাইলে সংরক্ষিত আছে)।
এবিষয়ে কথা হলে টংভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান (আতি) ও গোতামারী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাসেম সাবু মিয়া জাহাঙ্গীর আলম বুলুর নেতৃত্বে গরু চুরির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কোন চোরকেই ছাড় দেয়া হবেনা এবং সকল চোরের নামেই থানায় লিখিত অভিযোগ করা হবে।

এবিষয়ে হাতীবান্ধা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, গরু উদ্ধারের বিষয়ে গোতামারী ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে অবগত করেন এবং চোরদের নামে অভিযোগ দিবেন বলে জানিয়েছেন। তবে গরু চুরির সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দিবেন না বলে জানান তিনি।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest