ঢাকা ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:১৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০২০
মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান |
ঢাকা |
সকল শ্রেনী-পেশার বিত্তশালীদের নিজ নিজ এলাকার অসহায়-দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমাদের বিত্তশালীরা তারা যদি নিজ নিজ এলাকায় প্রত্যেকেই অন্তত কিছু দুস্থ পরিবারের দিকে ফিরে তাকায়। শুধু নিজেরা ভাল থাকবো, নিজে সুন্দর থাকবো, নিজে আরাম আয়েশে থাকবো- আর আমার দেশের মানুষ এলাকার মানুষ কষ্টে থাকবে, এটা তো মানবতা না।
কারণ বাংলাদেশের মানুষ অনেক সাহসী। জাতির পিতা তো এই মানুষগুলোকে নিয়েই যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছেন, সেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সারাবিশে^ সবচেয়ে শক্তিধর সেনাবাহিনী ছিল। তারা খুব গর্ব করত। তাদের আবার কে হারাবে? কিন্তু বাঙালিরা তো হারিয়ে দিয়েছে তাদেরকে। যুদ্ধে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। কাজেই আমরা বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি হিসাবেই আমরা বিশ^ দরবারে উঁচু করে চলবো।
‘‘হ্যাঁ, ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর আমাদের সম্মানহানি হয়েছিল। বাঙালি জাতি সে বিজয়ের বেশে থাকতে পারেনি। বরং একটা খুনী হিসাবে মাথা নিচু করে চলতে হয়েছে। কিন্তু ১৯৮১ সালে আমি দেশে আসার পর আমাদের প্রচেষ্টায় ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর থেকে আমরা বাংলাদেশের মানুষ আমাদেরকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছে। তারপর থেকে মানুষের সেবা করে আমরা অন্তত পক্ষে বলতে পারি, বিশে^ এখন আমরা মাথা উঁচু করে চলতে পারি। সেই সম্মানটা আমরা অর্জন করেছি। ‘দারিদ্র্যের হার আমরা কমিয়েছি। কিন্তু আমরা আরও কমাতে চাই। লক্ষ্য ছিল আমাদের ২০২১ সালের মধ্যে আমরা একেবারে বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত ঘোষণা করবো। করোনা ভাইরাসের কারণে হয়ত সেটা আমরা পারিনি। কিন্তু আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে, অব্যাহত থাকবে।
জাতির পিতা বলেছিলেন যে দেশের মাটি এতো উর্বর, একটা বীজ ফেললে যেখানে গাছ হয়। সেই গাছের ফল হয়, সেই দেশের মানুষ কেন না খেয়ে কষ্ট পাবে, কথাটা অত্যন্ত বাস্তব। একটু চেষ্টা করলেই কিন্তু সবাই নিজেরা ভাল থাকতে পারেন। আর যারা একটু বিত্তশালী তারা একটু পাশে দাঁড়ালে আমি মনে করি আরও সুন্দর জীবন পেতে পারেন। আমার একটাই লক্ষ্য, কারণ আপনারা এটা বুঝতে পারেন—বাবা মা ভাই সব হারিয়ে সেই শোক ব্যাথা বুকে নিয়ে কাজ করি একটা লক্ষ্য সামনে নিয়ে। কারণ এদেশের মানুষের জন্যই তো আমার মা জীবন দিয়ে গেছেন, বাবা জীবন দিয়েছেন, ভাইয়েরা জীবন দিয়েছেন। আমার বাবা সারাটা জীবন কষ্ট স্বীকার করেছেন। কাজেই আমি যদি একটু কিছু করে যেতে পারি মানুষের জন্য এটাই আমার জীবনের সার্থকতা। কি পেলাম, না পেলাম সেই চিন্তা আমি কখনো করি না। আমার চিন্তা একটাই কতটুকু আমি মানুষের জন্য করতে পারলাম। দেশের মানুষের জন্য করতে পারলাম, আপনাদের জন্য করতে পারলাম। মুজিববর্ষে নিজস্ব অর্থায়নে গৃহহীনদের ঘর উপহার জন্য সংশ্লিষ্ট সচিবদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা এই চিন্তাভাবনা থেকে দেশেপ্রেমে উদ্বুর্ধ্ব হয়ে আজকে যে মানুষগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদেও একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিয়েছে, একটা ঘর করে দিয়েছে। এটা একটা মহৎ কাজ আপনারা করেছেন। ভবিষ্যতেও এভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিশে^ ক্ষুধামুক্ত দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধশালী সোনার বাংলাদেশ হিসাবে গড়ে উঠবে, জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা পূরণ করবো। গণভবন প্রান্তে অন্ষ্ঠুানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।এছাড়া গৃহ পাওয়া তিন জন উপকারভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসহাক খান, হাকিম মোল্লা এবং নিগুম চাকমা মতবিনিময় করেন।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST