মণিরামপুরে ৭১’এর স্মৃতি হয়ে আছে যুদ্ধবিমান থেকে পড়া অবিস্ফোরিত বোমাটি

প্রকাশিত: ৭:৫৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯

মণিরামপুরে ৭১’এর স্মৃতি হয়ে আছে যুদ্ধবিমান থেকে পড়া অবিস্ফোরিত বোমাটি

উত্তম চক্রবর্তী,মণিরামপুর(যশোর)অফিস৷৷ মণিরামপুরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন হয়ে আছে ৭১’এর যুদ্ধবিমান থেকে পড়া অবিস্ফোরিত একটি বোমা। ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মণিরামপুরের রাজগঞ্জের চালুয়াহাটি গ্রামের আকাশ দিয়ে উড়ে যায় তিনটি যুদ্ধবিমান। বিমান থেকে ফেলা হয় একটি শক্তিশালী বোমা। সেই বোমাটি বিস্ফোরিত হয়নি। অবিস্ফোরিত বোমাটি আজো স্মৃতিচিহ্ন হয়ে রয়েছে ওই গ্রামে।
বর্তমানে ওই গ্রামের মোড়ল বাড়ির সামনে সেই বোমাটি ইটের ওপর রডের বেষ্টনী দিয়ে রাখা হয়েছে।
সে সময় বোমাটি পড়েছিলো রাজগঞ্জের চালুয়াহাটি গ্রামের মোড়লপাড়ার তাহের ফকির ও রহমতুল্যাহ ফকিরের পারিবারিক কবরস্থানে।
সে সময়ের স্মৃতিচারণ করে অবসরপ্রাপ্ত মাদরাসা শিক্ষক গোলাম মাওলানা (৮০) ও নিজাম উদ্দিন (৮০) এপ্রতিনিধিকে বলেন- ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার ‘দুপুরের দিকে আমি বাড়ির পাশের জমিতে কাজ করছিলাম। হঠাৎ তিনটি প্লেন পরপর উড়ে এলো। পশ্চিম দিকে যে প্লেনটা গেলো, মনে হলো, সেটা ভেঙে পড়েছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই কবরস্থান ধোঁয়ায় ভরে গেলো। তাৎক্ষনিক বাঁশের একটি ঝাড় উড়ে গেলো। আমরা কয়েকজন অনেক পরে ভয়ে ভয়ে সেখানে যাই। গিয়ে দেখি, একটা বোমা পড়ে রয়েছে।
তারা আরো বলেন- ‘যেখানে বোমাটি পড়েছিল সেখানে বড় গর্ত হয়ে গিয়েছিলো। প্রায় এক বছর পর ওই গ্রামের মফিজ উদ্দীন মৌলভী, রাহাত মোড়ল, জালাল মোড়ল ও মোসা মোড়ল বোমাটি কবরস্থান থেকে উদ্ধার করে সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি, বীরমুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানের বাড়িতে রাখে। সেই থেকে বোমাটি ওখানেই রয়েছে। বোমার কভারে লেখা ছিল ‘ইউএসএসআরথ। বোমাটির ওজন সাড়ে ২৭মন। ৬ ডিসেম্বর যশোর পাকিস্তানি বাহিনী মুক্ত হলেও তারপর যশোরের রাজগঞ্জ এলাকায় রাজাকারেরা ঘাঁটি গেড়েছিলো। হয়তো ভারতীয় মিত্র বাহিনী রাজাকারদের ঘাঁটি ধ্বংস করতে বোমাটি ফেলেছিল।
স্থানীয়রা জানান- ‘বোমা দেখতে প্রতিদিন বহু লোক এ গ্রামে আসে।
তাই গ্রামবাসী বোমাটি সংরক্ষণের জন্য গ্রামেই একটা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।


alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest