ঢাকা ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৩৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৭, ২০২০
শাকিল আহম্মেদ , নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ বন্দরনগরী নারায়ণগঞ্জের শিল্পাঞ্চলখ্যাত রূপগঞ্জ ঢাকার খুব সন্নিকটে হওয়ার এর গুরুত্ব অনেক। এখানে তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের স্যাটেলাইট শহর (পূর্বাচল উপশহর)। আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যমেলার স্থায়ি কেন্দ্রসহ এখানে সরকারি বেশ কিছু অফিসও পূর্বাচলে স্থানান্তরের চিন্তাভাবনা করছে বলে জানা যায়। রূপগঞ্জের কোল ঘেঁষে শীতলক্ষ্যা নদী এ উপজেলাকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছে। দুঃখজনক হলেও সত্যি শীতলক্ষ্যার পূর্বাঞ্চলে শিল্পকারখানা গড়ে ওঠলেও পশ্চিম তীরে তার বিপরীত চিত্র। নদীর পশ্চিমপাড়ের মানুষ বিভিন্ন কারণে আজও অবহেলিত। কায়েতপাড়া ও রূপগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দাদের যাতায়াতের নেই ভাল
কোনো রাস্তা। যাও আছে তা আবার দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গাচুরা।
ইছাখালি-কাঞ্চন সড়ককে লোকে মাজাভাঙ্গা রাস্তা বলে। “দল পাল্টায়, সরকার যায়, সরকার আসে, এমপি যায় মন্ত্রী আসে, কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের
বালু নদীর উপর বাঁশের সাঁকো আর ব্রিজ হয় না।” ক্ষোভের সঙ্গে
কথাগুলো বলছিলেন খামার পাড়া গ্রামের বয়সের বাড়ে নুজ্জ জয়নাল
আবেদিন। ছোট্ট একটি মফস্বল শহর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ। এ এলাকার
লাখো বাসিন্দার প্রাণের দাবি ভুলতা-রামপুরা ভায়া নগরপাড়া সড়ক ও বালু নদীর ব্রিজ আজও বাস্তবায়ন হয়নি। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বালু নদীর ওপর সেতু নেই, আছে ১৭ টি বাঁশের সাঁকো। এ কারণে বালু
নদীকে সাঁকোর নদীও বলে স্থাণীয়রা। সেখানে বাঁশের সাঁকোয় চলে পারাপার। এ কারণে নদী তীরবর্তী ২৫টি গ্রামের মানুষ দুর্ভোগ
পোহাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন,ভোট এলে সব দলের নেতাই প্রতিশ্রুতি দেন, বাঁশের সাঁকো আর
থাকবে না। কষ্ট করতে হবে না। নদীর ওপর সেতু হবে। কিন্তু দল পাল্টায়,
বাঁশের সাঁকো আর ব্রিজ হয় না। ৫০ হাজার মানুষের কষ্ট-দুঃখও ঘোচে
না। উপজেলার খামার এলাকার সামছুল হক ভুইয়া বলেন, বাল্যকাল থেকেই শুনতেছি বালু নদীর উপর ব্রিজ হবে। এখনও তাই শুনতেছি। ব্রিজের পিলার আর সড়কের বালু আমার আড়াই বিঘা জমি শেষ করে ফেলেছে। কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি। ব্রিজ আর রাস্তা হলে এলাকার উন্নয়ণের কথা ভেবে মামলা পর্যন্ত করিনি। ব্রিজ রাস্তা কিছুই হলো না, এখন আমিতো
একেবারেই শেষ।
তখন নৌকাই তাদের একমাত্র ভরসা। অনেকে কলাগাছের ভেলায় নদী পার হয়। দেইলপাড়া এলাকার মোতালিব মিয়া বলেন, আমাদের দিকে কেউ তাকায় না। স্বাধীনতার পর থেকে এখনও বঙ্গবন্ধুর নৌকাই আমাদের যাতায়াতের অবলম্বন। বালুর পাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণ চন্দ্র সরকার বলেন, বাঁশের সাঁকো দিয়ে স্থানীয় জনসাধারণ স্কুল-কলেজ, হাট-বাজার ও অফিস-আদালতে যাতায়াত করে থাকেন। আমাদের স্কুলের ছেলেমেয়েরা প্রতিদিনই ঝুঁকি নিয়ে নৌকা করে নদী পারাপার হচ্ছে। নাছিরাবাদ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোছাম্মৎ নাছরীন সুলতানা
বলেন, সেতু না থাকায় প্রতিদিন সবাইকে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত
করতে হয়। বৃষ্টির সময় এ দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়।ইছাখালি এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি সংস্থার কর্মী শিখা আক্তার বলেন, চাকরি করি। বাড়ি ফিরতে প্রতিদিনই রাত হয়ে যায়। রাতের বেলা এ
বাঁশের সাঁকো পার হাতে ভয় করে।’নদীর পূর্ব পাড়ের নগরপাড়া গ্রামের নুরুল হক বলেন, সেতু না থাকায় নদীর পূর্ব পারের কৃষকেরা উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী সময়মতো হাটে আনতে পারেন না। কয়েক কিলোমিটার পথ ঘুরে বাজারে পণ্য আনতে অনেক খরচ বেড়ে যায়।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী
বীরপ্রতিক বলেন, বালু নদীর ব্রিজ ও রাস্তা নিয়ে মামলা ছিল।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST