আজ আলোচিত ফেলানী হত্যার ১০ বছর ll

প্রকাশিত: ৪:২৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৭, ২০২১

আজ আলোচিত ফেলানী হত্যার ১০ বছর ll

সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।।
আজ ৭ জানুয়ারি। সীমান্তে কিশোরী ফেলানী হত্যার দশ বছর। ২০১১ সালের এই দিনে ভারতীয় রক্ষী বাহিনী বিএসএফর গুলিতে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে ফেলানী। দীর্ঘ সাড়ে চার ঘন্টা কাটাতারে ঝুলে থাকে ফেলানীর মৃত দেহ। গণমাধ্যমসহ বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত।

ঘটনার দিনটি ছিলো শুক্রবার। ভোর ৬টা ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত টপকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে ভারতীয় বিএসএফর গুলিতে বিদ্ধ হয়ে আধাঘন্টা ধরে ছটফট করে নির্মমভাবে মৃত্যু হয় কিশোরী ফেলানীর। এরপর সকাল পৌনে ৭টার থেকে নিথর দেহ কাঁটাতাঁরের উপর ঝুলে থাকে দীর্ঘ সাড়ে ৪ ঘন্টা। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে ২০১৩ সালের ১৩ আগষ্ট ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়।

বিএসএফর এ কোর্টে স্বাক্ষী দেন ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম ও মামা হানিফ। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় বিএসএফর বিশেষ কোর্ট। পরে রায় প্রত্যাখ্যান করে পুন:বিচারের দাবি জানায় ফেলানীর বাবা।

২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুন:বিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে স্বাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ০২ জুলাই এ আদালত পুনরায় আত্মস্বীকৃত আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়। ২০১৬ এবং ১৭ সালে কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারী শুনানির দিন ধার্য হলেও শুনানি হয়নি । এরপর ২০১৯ এবং ২০২০ সালে কয়েকবার শুনানীর তারিখ ধার্য্য হলেও শেষ পর্যন্ত সম্পন্ন হয়নি আজও।

এদিকে মেয়ের হত্যাকারীর বিচার না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ফেলানীর বাবা-মা।

ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম জানান, ফেলানী হত্যার বিচার চেয়ে অনেক ঘুরেছি, মানবাধিকার সংস্থাসহ বহুজনের কাছে গেছি, বিচার পেলাম না। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ করোনার পূর্বে শুনানির তারিখ থাকলে তা হয়নি। এখন আর কোন খোজখবর জানিনা।

ফেলানীর মা জাহানারা বেগম জানান, ফেলানী হত্যার দশ বছর হয়ে গেছে আজও বিচার পাইনি। আমি দুই দেশের সরকারের কাছে সঠিক বিচার দাবি করছি। সীমান্তের অধিবাসীরা জানান, ফেলানী হত্যার বিচার হলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ হলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ হয়ে যেত।

কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিটর এস এম আব্রাহাম লিংকন জানান, ভারতের সুপ্রিমকোর্টে ফেলানী হত্যার রীটটি কার্যতালিকার তিন নম্বরে ছিলো। কয়েক দফা শুনানির তারিখ পিছিয়ে গেছে। বর্তমান কোভিট -১৯ এর জন্য ভার্চুয়াল কোর্ট চলছে। পরিস্থিতি ভালো হল রিটটি শুনানি হবে। আশা করছি ফেলানীর পরিবার ন্যায় বিচার পাবে।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনীটারী গ্রামের নুরুল ইসলাম নুরু পরিবার নিয়ে থাকতেন ভারতে বঙ্গাইগাঁও গ্রামে। মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয় বাংলাদেশে। তাই ২০১১সালের ৬ জানুয়ারি মেয়েকে নিয়ে রওনা হয় দেশের উদ্দেশ্যে। ৭ জানুয়ারী ভোরে ফুলবাড়ী অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে কাঁটাতারের উপর মই বেয়ে আসার সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় ফেলানীর।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest