দেড় লাখ টাকায় কিডনি প্রতিস্থাপন করবে গণস্বাস্থ্য : জাফরুল্লাহ

প্রকাশিত: ৫:১২ অপরাহ্ণ, মার্চ ১১, ২০২১

দেড় লাখ টাকায় কিডনি প্রতিস্থাপন করবে গণস্বাস্থ্য  : জাফরুল্লাহ

অনলাইন ডেস্ক :বিশ্ব কিডনি দিবস উপললক্ষে আজ বৃহস্পতিবার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের গেরিলা কমান্ডার মেজর এটিএম হায়দার, বীর উত্তম মিলনায়তনে এক আলোচনাসভায় তিনি একথা বলেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, কিডনি রোগীদের নিঃস্ব করছে ওষুধ। সরকার চাইলেই তার দাম কমাতে পারে। ডায়ালাইসিসে প্রচুর খরচ, যা আমাদের নিম্ন শ্রেণির মানুষের জন্য বহন করা খুবই কষ্টকর। তাই, প্রতিস্থাপনই একমাত্র পথ। সমাজের বিত্তবান ও দানশীল প্রতিষ্ঠানকে কিডনি প্রতিস্থাপনে জন্যে সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে। আপনাদের মতো দানশীন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুদানে, একটি আন্তর্জাতিকভাবে অভিজ্ঞ ও দক্ষ ট্রান্সপ্লান্ট দলের কারিগরি তত্ত্বাবধানে যুক্তরাজ্যের রয়াল লন্ডন হাসপাতালের সহায়তায় গণস্বাস্থ্য স্যার ফজলে হাসান আবেদ ট্রান্সপ্লান্ট সেন্টার স্থাপনের কাজ শুরু করেছি। যার আনুমানিক প্রাক্কালন ৭৫ কোটি টাকা। কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্যে যেখানে খরচ হয় ৩০ লক্ষ টাকা সেখানে আমরা কম খরছে মাত্র দেড় লাখ টাকায় কিডনি প্রতিস্থাপন করতে পারব।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন কিডনি রোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন মোস্তাফি, ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. মনজুর কাদির আহমেদ প্রমুখ।

তিনি বলেন, কিডনি প্রতিস্থাপন নিয়ে আইনি জটিলতা কাটছেই না। হাইকোর্টের দেওয়া অঙ্গ সংযোজনের রায় আজও বাস্তবায়ন হয়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কিছু মানুষের কারণে আমরা আটকে পড়েছি।

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, প্রতিদিনই কিডনি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অন্যকোনো রোগ হলে ওষুধ খেয়ে তা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব কিন্তু কিডনি দীর্ঘমেয়াদী রোগ হওয়ায় ব্যয়ভার অনেক বেশি। সরকার ভারতীয় কেম্পানিকে ২২শ’ টাকা সাবসিডয়রে দেয়, আমরা ৯শ’ চেয়েছিলাম কিন্তু তাই পাচ্ছি না। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া কিডনি সমস্যা নিরসন করা সম্ভব নয়।

প্রতিবছর হাজারের বেশি কিডনি প্রতিস্থাপন জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে বেসরকারিভাবে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে কিডনি প্রতিস্থাপন হলেও সরকারিভাবে নানা অজুহাতে থেমে আছে। ২০১৯ সালে একটি ট্রান্সপ্ল্যান্টের উদ্যোগ নেওয়া হয় কিন্তু আইনি সংকীর্ণতার কারণে আজও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, কিডনি রোগ প্রকট আকার ধারণ করায় শঙ্কা বাড়ছে। ওষুধের দাম অনেক বেশি। সরকারকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার দাম কমা এ সংক্রান্ত সকল ট্যাক্স বাদ দিতে হবে।

কিডনি প্রতিস্থাপনে ইরানের পদ্ধতি অনুসরণ করা যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইরানে কিডনি দাতাকে সরকারিভাবে সবধরনের সহযোগিতা করা হয়। ব্যক্তির সাথে নয়, কিডনি বিনিময় রাষ্ট্রের সাথে হয় সেখানে। ফলে কোনো ধরনের পাচার হওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা সেখানে।

অধ্যাপক ডা. মামুন মোস্তাফি তার বক্তব্যে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডায়ালাইসিসের মান ও অল্প খরচে উন্নত সেবাসেবা দানের নেপথ্যের বিষয়বস্তু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডায়ালাইসিসের মান সারা বিশ্বের মধ্যে অনন্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিত্তবানদের অনুদান, নিজস্ব ফার্মাসিউটিক্যালসের পণ্য ব্যবহার, ডাক্তারদের সেবা দানের মানসিকতাসহ নানা কারণে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র স্বল্প মূল্যে সেবা দান করতে পারছে।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. মনজুর কাদির আহমেদ বলেন, মানুষের সেবা করা নেশার মতো। মানুষের সেবায় সরকার ও সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসতে আহবান জানান। এ ছাড়া অনলাইনে যুক্ত হয়ে কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা নিরসনে তার বক্তব্য তুলে ধরেন ব্যারিস্টার রাসনা ইমাম।

সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের সামনে বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে ডাক্তার, প্যারামেডিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest