ঢাকা ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২ আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৫৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০২১
আশুলিয়া থানার কাঠগড়া এলাকার ডিস ব্যবসায়ী হাজী মোঃ ফজল হক সরকারের ছেলে এলিম সরকার (৪২) কে নৃশংস হত্যার ঘটনায় স্ত্রী সহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেসটিগেশন) পিবিআই ঢাকা জেলা। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ভিকটিম মৃত এলিম সরকারের স্ত্রী সুলতানা আক্তার কেমিলি এবং নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানার তেলটুপি গ্রামের আঃ সামাদের ছেলে মোঃ রবিউল করিম পিন্টু (৩৫)। মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) আশুলিয়া থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
২৫ আগষ্ট বুধবার পিবিআই ঢাকা জেলা অফিস থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৭ শে মার্চ রাত অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় অন্যান্য দিনের ন্যায় রাতের খাওয়া দাওয়া শেষে বাদীর ছেলে এলিম সরকার তাহার স্ত্রী সন্তান সহ ঘুমাইয়া পড়ে। পরের দিন অর্থাৎ ২৮ আগষ্ট সকাল অনুমান ০৮.০০ ঘটিকার সময় বাদীর পুত্র বধু কেমিলি ঘুম হইতে জাগিয়া জরুরী প্রয়োজনে বাদীর বাড়িতে আসে এবং বাড়ির অন্যদের সাথে আলাপ আলোচনা শেষে উক্ত দিন সকাল অনুমান ১০.০০ ঘটিকার সময় তাহার বাড়িতে ফিরে যায়। এসময় বাদীর ছেলে ভিকটিম এলিম সরকার এর গলার নিচে ১ টি, পেটে ১১ টি ও পিঠে ধারালো অস্রের ১ টি কাটা গুরুতর রক্তাক্ত জখম হইয়া মৃত্যু বরণ করিয়াছে মর্মে দেখতে পায়। ভিকটিমের স্ত্রীর ডাক চিৎকারে এবং কান্নাকাটি করিতে থাকায় বাদী সহ অন্যান্য লোকজন বাড়িতে আসিয়া খাটের উপরে ভিকটিমের মৃতদেহ জখমপ্রাপ্ত অবস্থায় দেখতে পায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সালেহ ইমরান জানান, মামলাটি পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর নির্দেশে গত ২১ জুলাই মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেন।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতারকৃত রবিউল করিম পিন্টু আশুলিয়া এলাকায় পল্লী বিদ্যু সমিতিতে লাইন ম্যান হিসেবে চাকুরী করে। চাকুরীর সুবাধে ভিকটিম এলিম সরকারের বাসায় বিদ্যুৎ এর মিটার লাগানোর কাজ করতে গিয়ে ভিকটিমের স্ত্রী কেমিলির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে পিন্টুর।
বিষয়টি কেমিলির স্বামী টের পেয়ে গেলে তিনি তার স্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের ডেকে তা প্রকাশ করে দিবেন বলে জানান। এই ঘটনা নিয়ে তাদের মধ্যে মারাত্মক দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। উক্ত পরকীয়া বিষয়টি যাতে অন্য কেউ জানতে না পারে তার জন্য ঘটনার এক সপ্তাহ আগে কেমিলি এবং তার পরকীয়া প্রেমিক পিন্টু মিলে এলিম সরকারকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী পরকীয়া প্রেমিক পিন্টু ভিকটিমের বাসায় দুজন ভাড়াটিয়া খুনি বাসা ভাড়া করে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। তারা কাজটি না করতে পারায় পিন্টু নিজেই কাজটি করার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন ২৮ মার্চ সকাল অনুমান ০৯ টার দিকে কেমিলির পরামর্শে পিন্টু তার এক বন্ধুকে নিয়ে বাসায় প্রবেশ করে।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কেমিলি রাতের বেলা দই এর সাথে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে এলিম সরকার কে খাইয়ে দেয়।
উক্ত ঘুমের ট্যাবলেট গুড়া করে কেমিলিকে সরবরাহ করে পিন্টু। ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে এলিম সরকার নিস্তেজ হয়ে গেলে সকাল বেলা পিন্টু তার অপর সহযোগী নিয়ে বাসায় এসে চাকু দিয়ে কুপিয়ে এলিম সরকারকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার আগে এলিম সরকারের বাসার সিসিটিভি ফুটেজ এর ডিভিআর খুলে নিয়ে যায়।
বিষয়টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে ক্যামিলির স্ত্রী ডিস ব্যবসার বিরোধকে কেন্দ্র করে উক্ত ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রচার করতে থাকে। মামলার আরো কোন আসামী জড়িত আছে কিনা তা যাচাই করা হচ্ছে বলে তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান।
প্রয়োজনে-
তদন্তকারী কর্মকর্তাঃ-এসআই (নিরস্ত্র) সালেহ ইমরান , মোবাইল ফোন- ০১৭২৭৪৫০২০১
তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা ও পিবিআই (ঢাকা জেলা) ইউনিট ইনচার্জ ঃ- জনাব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম পিপিএম সেবা মোবাইল ফোন-০১৩২০০২৮০৩৫)
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST