ঢাকা ৩০ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯:২৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৩১, ২০২১
পারভেজ,বরিশাল প্রতিনিধিঃ বরিশাল নগরের উপকণ্ঠে চরবাড়িয়া এলাকার ঝুনাহার নদে (স্থানীয়ভাবে তালতলী নামেও পরিচিত) বিশাল আকৃতির একটি শাপলাপাতা মাছ ধরা পড়েছে। ১৩ মণের বেশি ওজনের মাছটি বিক্রির জন্য ভ্যানে করে মঙ্গলবার সকাল থেকে বরিশাল নগরীতে মাইকিং করে প্রচার চালাচ্ছেন এক মাছ ব্যবসায়ী। পোর্টরোডের মাছ ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া জানান, সোমবার গভীর রাতে তিনি খবর পান তালতলীতে বেদে সম্প্রদায়ের এক জেলের জালে বড় একটি মাছ ধরা পড়েছে।
৩১ শে আগষ্ট মঙ্গলবার সকালে সেখানে গিয়ে দেখেন বিশাল শাপলাপাতা মাছ। এরপর দরদাম করে ৩৫০ টাকা কেজি দরে তিনি সেটি কিনে নেন। সকালে তালতলী বাজারে মাছটি নিয়ে আসার পর স্থানীয় উৎসুক লোকজন এটি দেখার জন্য ভিড় জমান। ৫২২ কেজি ওজনের মাছটি তিনি ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। জেলের বরাত দিয়ে রুবেল মিয়া আরও জানান, সোমবার রাতে ইলিশ ধরার জন্য তালতলী নদীতে জাল ফেলেন ওই জেলে। মাঝরাতে নদীর পানি কমতে থাকায় জেলেরা নৌকাটি টেনে নদীর মাঝখানে নিয়ে যেতে থাকেন। এরপর অন্য জেলেদের সহায়তায় জাল টেনে কিনারে আনতে সক্ষম হন। এ সময় দেখেন, বিশাল আকৃতির শাপলাপাতা মাছটি জালে পেঁচিয়ে আছে। ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির (ডব্লিউসিএস) তথ্যানুযায়ী, শাপলাপাতার ১৬টির মতো প্রজাতি আছে। বাংলাদেশে যে ৮ থেকে ১০ প্রজাতির শাপলাপাতা পাওয়া যায়, তার মধ্যে ২টি প্রজাতি মহাসংকটাপন্ন ও ৩টি সংকটাপন্ন। পিতাম্বরী বা নাঙলা ও ঘন্টি শাপলাপাতাকে মহাসংকটাপন্ন ঘোষণা করা হয়েছে। পান্ন্যা, শিংচোয়াইন ও ঠোট্ট্যা ঘাপরি শাপলাপাতাকে সংকটাপন্ন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া আছে চিত্রা হাউশ শাপলাপাতা, ছোটলেজি শাপলাপাতা, কালি শাপলাপাতা, ফুল শাপলাপাতা, বাদুড় শাপলাপাতা, বাদা শাপলাপাতা, থাইন ও চুনি প্রজাতি। এর কয়েকটি প্রজাতির বিক্রি নিষিদ্ধ।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকোয়াকালচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী প্রতিবেদককে বলেন, এটা কোনোভাবে নদ-নদীর মাছ নয়। সামুদ্রিক মাছ। দুর্ঘটনাবশত কোনোভাবে গতিপথ পরিবর্তন করে নদীতে ঢুকে পড়েছে। কারণ, এসব মাছের খাবার নদ-নদীতে পাওয়া যায় না। এটা অবশ্যই বাস্তুতন্ত্রের জন্য ‘অ্যালার্মিং’। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায়ই খবর পাচ্ছি নদ-নদীতে স্ট্রিং রে প্রজাতির এই মাছ প্রায়ই ধরা পড়ছে। বিষয়টির অনুসন্ধান হওয়া প্রয়োজন। তবে এটি বিপন্ন প্রজাতির কি না, তা না দেখে বলা যাবে না।’
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST