কলাপাড়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ।

প্রকাশিত: ১২:২১ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৩, ২০২০

কলাপাড়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম বন্ধ।

মো.ওমর ফারুক,কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : ২ জানুয়ারী  পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রভাবশালীরা নদী, খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মান করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পৌরশহরের আন্ধারমানিক নদী পাড়ে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা দঁাড়িয়ে আছে। এ সব স্থাপনার মধ্যে প্রভাবশালীদের বহুতল ভবনও রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ভূমি অফিসের যোগসাজশে চলছে এ অবৈধ স্থাপনা নির্মানের কাজ। স্থানীয় ভূমি অফিসের দাবী চিংগড়িয়া খাল ও আন্ধারমানিক নদী পাড়ের কতিপয় স্থাপনা নিয়ে সহকারী জজ আদালতে পৃথক দু’টি মামলায় স্থিতি আদেশ থাকায় উচ্ছেদ করা যাচ্ছেনা এসব অবৈধ স্থাপনা। তবে মামলার নিস্পত্তি নিয়ে ভূমি অফিসের কোন পদক্ষেপ না থাকা,এমনকি রাষ্ট্র পক্ষের জিপি’র উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন পরিবেশবাদী সংগঠন সহ স্থানীয় সচেতন মহল। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড.মুজিবুর রহমান হাওলাদার সম্প্রতি কলাপাড়া পরিদর্শনে এসে নদী দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তার পরও কোন কাজ হচ্ছে না। এদিকে স্থানীয় ভূমি অফিসকে ম্যানেজ করে পৌরশহরের চিংগড়িয়া নদী, নাচনাপাড়া এলাকার জলাশয় সহ উপজেলার একাধিক খাল ও জলাশয়কে নাল ভূমি দেখিয়ে বন্দোবস্ত নেয়া সহ নদী দখল করে স্থাপনা নির্মানে যোগসাজশের অভিযোগ উঠেছে ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে। মাঝে মধ্যে অবৈধ স্থাপনা নির্মানকারীদের তালিকা তৈরী ও উচ্ছেদ নোটিশ দেয়া হলেও ওই তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হচ্ছেনা কোন প্রভাবশালীর নাম। পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা’র উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দায়েরের পর উচ্চ আদালতের নির্দেশে পর্যটন শহর কুয়াকাটা ও মহিপুর মৎস্যবন্দরের শিববাড়িয়া নদীর দু’তীরে উচ্ছেদ অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন। এছাড়া উপজেলা প্রশাসন পৌরশহরের অভ্যন্তরে প্রবাহিত খালের দু’পাড়ে অভিযান পরিচালনা করলেও ক্ষমতাসীন দলের কেউ এর আওতায় পড়েনি। এমনকি খাল, নদী দখল করে প্রভাবশালীদের তোলা বহুতল স্থাপনা সকলের চোখে দৃশ্যমান থাকলেও প্রশাসনের নজরে আসছেনা। স্থানীয় ভূমি অফিস খাল-নদী-জলাশয় দখলদারের তালিকা তৈরী করে কতিপয় পরিবারকে সময় বেঁধে উচ্ছেদ নোটিশ সরবরাহ করেছে। কিন্তু এতে টিয়াখালীর দোন নদী, আন্ধারমানিক নদী, শিববাড়িয়া, খাপড়াভাঙ্গা, টিয়াখালী সহ পৌরশহরের অভ্যন্তরে প্রবাহিত খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা তোলা প্রভাবশালীদের নাম অন্তর্ভূক্ত হয়নি। চিংগড়িয়া খাল ও আন্ধারমানিক নদী পাড়ের কতিপয় অবৈধ স্থাপনার মালিক সরকারকে বিবাদী করে কলাপাড়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়েরের পর উচ্ছেদ কার্যক্রমের বিপরীতে স্থিতি অবস্থার আদেশ দেয় বিজ্ঞ আদালত। এরপরও ভূমি অফিস কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় নিস্পত্তি হচ্ছে না মামলা। কলাপাড়া ভূমি অফিসের তহশিলদার আবদুল জব্বার বলেন,উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনায় সার্ভেয়ারকে নিয়ে তালিকা করা হচ্ছে। শীঘ্রই উচ্ছেদ করা হবে এসকল অবৈধ স্থাপনা। তবে চিংগড়িয়া খাল ও লঞ্চঘাট সংলগ্ন আন্ধারমানিক নদী পাড়ে সরবরাহকৃত উচ্ছেদ নোটিশ নিয়ে আদালতে দু’টি মামলা আছে। এতে সাময়িক বঁাধা গ্রস্থ হয়েছে উচ্ছেদ কার্যক্রম। কলাপাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনুপ দাশ বলেন,সম্প্রতি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মহোদয় উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে ও জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে প্রশাসন,ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি,সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গনমাধ্যম কর্মীদের নিয়ে সভা করেছেন। উক্ত সভায় মহামান্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় যে নদীর প্রান আছে তার দখলমুক্ত করে স্বত্তা ফিরিয়ে দিতে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে,উক্ত নির্দেশনা শীঘ্রই বাস্তবায়ন করা হবে। ১৭৯টি উচ্ছেদ তালিকা তৈরী করে তার মধ্যে বেশ কিছু উচ্ছেদ কেস নথি তৈরী করে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কার্যালয়ে প্রেরন করেছি,যা শীঘ্রই উচ্ছেদ করা হবে।এ তালিকার বাইরেও নদ, নদী, খাল, বিল, জলাশয় উদ্ধারে নদী রক্ষা কমিশনের নির্দেশনায় উপজেলার ট্রেসিং ম্যাপ তৈরী করে জেলায় পাঠাবো। সকল তহশীলদারকে ট্রেসিং ম্যাপ তৈরী করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া আদালতে চলমান মামলা নিস্পত্তিতেও পদক্ষেপ নেয়া হবে।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest