যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল বিচারক হলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নুসরাত চৌধুরী

প্রকাশিত: ২:৫৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২২

যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল বিচারক হলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নুসরাত চৌধুরী

অনলাইন ডেস্ক :যুক্তরাষ্ট্রে ফেডারেল বিচারক হিসেবে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক নুসরাত জাহান চৌধুরীসহ আটজনকে মনোনয়ন দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সরকারি দপ্তর হোয়াইট হাউস থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে প্রেসিডেন্টের এই মনোনয়ন পাস হলে নুসরাত চৌধুরী হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম মুসলিম নারী ফেডারেল বিচারক। নুসরাত চৌধুরীর বাবার বাড়ি ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাগডুবি গ্রামে।


তাঁর বাবা প্রয়াত নূরুর রহমান চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এক বছর আগে ক্ষমতা নেওয়ার পর বাইডেন ফেডারেল আপিল ও ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মোট ৮১ জনকে নিয়োগ দিলেন। বিচারক পদে তাঁর মনোনীত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই নারী ও অশেতাঙ্গ। নতুন বিচারকদের মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে বাইডেন বিচার বিভাগে বৈচিত্র্য আনার ওপর জোর দিয়েছেন।

হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফেডারেল বিচারক হিসেবে প্রেসিডেন্ট আটজনকে মনোনয়ন দিয়েছেন এবং তাঁদের সবাই অসাধারণ যোগ্যতাসম্পন্ন, অভিজ্ঞ এবং আইনের শাসন ও সংবিধানের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

চূড়ান্ত নিয়োগ পাওয়ার পর নুসরাত নিউ ইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ফেডারেল বিচারকের দায়িত্ব পালন করবেন।

নুসরাত চৌধুরী ২০০৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নে (এসিএলইউ) বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন। সর্বশেষ তিনি এসিএলইউয়ের রোজার প্যাসকাল লিগ্যাল ডিরেক্টর ছিলেন। তিনি এসিএলইউয়ের রেসিয়াল জাস্টিস প্রগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন।

এসিএলইউয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, নুসরাত জাহান চৌধুরী এসিএলইউয়ের রজার প্যাসকেল লিগ্যাল ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত থাকাকালে ইলিনয়জুড়ে নাগরিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতার উন্নয়ন নিয়ে কাজ করা একটি দলের তত্ত্বাবধান করেন। ফৌজদারি আইনি ব্যবস্থা এবং পুলিশিং ব্যবস্থা সংস্কার নিয়ে নুসরাতের এক দশকেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি অভিবাসীদের ভয়ংকর পরিবেশে আটক থাকার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য মামলা পরিচালনা করেছেন। পাশাপাশি শিকাগো পুলিশের অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রদর্শনের যে বৈশিষ্ট্য রয়েছে, তার সংস্কার নিয়ে কাজ করা সংস্থাগুলোর পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন।

ইলিনয়ের এসিএলইউয়ে যোগদানের আগে নুসরাত ন্যাশনাল এসিএলইউয়ের রেসিয়াল জাস্টিস প্রগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর ও এসিএলইউ ন্যাশনাল সিকিউরিটি প্রজেক্টের স্টাফ অ্যাটর্নি হিসেবে কাজ করেন।

এসিএলইউতে থাকাকালে নুসরাত অন্যায়ের প্রমাণ ছাড়াই নজরদারির জন্য অশেতাঙ্গদের টার্গেট করা এবং দরিদ্র ব্যক্তিদের অন্যায়ভাবে শাস্তি দেওয়ার চর্চার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করার প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দেন। তিনি আদালতে ধনী-দরিদ্রের প্রতি ন্যায্যতা এবং সমান আচরণের যে জাতীয় নির্দেশনা রয়েছে তা সমুন্নত রাখতে সহায়তা করেন।

নুসরাত সাউথ এশিয়ান বার অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাকসেস টু জাস্টিস অ্যাওয়ার্ড এবং প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির উড্রো উইলসন স্কুল অব পাবলিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের এডওয়ার্ড বুলার্ড ডিস্টিংগুইশড অ্যালামনাস অ্যাওয়ার্ড পান। নুসরাত কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি, প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি এবং ইয়েল ল স্কুল থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেন। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest