বরগুনা প্রতিনিধি। বরগুনার আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর বন্দরের শাহিদা নামের এক নারী স্থানীয় যুবলীগ নেতা সোহেল রানাকে এক লক্ষ টাকার মিথ্যা ছিনতাই মামলা দিয়ে হয়রানী করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ ফয়সাল প্রাথমিকভাবে তদন্তে এ ঘটনার কোন সত্যতা পাননি বলে জানান। জানাগেছে, উপজেলার সোনাখালী গ্রামের মৃত কাছেম আলীর মেয়ে শাহিদাকে ২০ বছর পূর্বে খুলনার এক লোকের সাথে বিয়ে দেয়। ওই স্বামী তাকে তালাক দিয়ে চলে যায়। এরপর থেকে শাহিদা বিভিন্ন এলাকায় একাধিক বিয়ে করেছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। কিন্তু কোন বিয়েই তার টিকেনি। এরপর তিনি এলাকায় অসামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। তার অসামাজিক কর্মকান্ডে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে তৎকালিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দেন। আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক দুই ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবদুল বারেক তালুকদার ও গোলাম সরোয়ার ফোরকান শাহিদার বিরুদ্ধে অসামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে অসৎ ও চরিত্রহীনা আখ্যা দিয়ে সর্বসাধারনের জ্ঞাতার্থে একটি প্রত্যায়ন পত্র দেন । এরপর কিছুদিন শাহিদা এলাকা থেকে গা-ঢাকা দেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, শাহিদার অসামাজিক কর্মকান্ডে বাঁধা দিলেই তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে। গত তিন বছর ধরে ওই নারী ইব্রাহিম নামের এক যুবকের সাথে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়েন। তার এ অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করেন আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের প্রচার সম্পাদক সোহেল রানা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহিদা গত বছর ১২ ডিসেম্বর সোহেল রানার বিরুদ্ধে বরগুনা দ্রুত বিচার আদালতে ষ্টাম্পে স্বাক্ষর ও এক লক্ষ টাকা মিথ্যা ছিনতাই মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক ওই মামলাটি আমলে নিয়ে আমতলী থানার ওসিকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। আমতলী থানার ওসি ওই মামলাটি সরেজমিনে তদন্তের জন্য এসআই মোঃ ফয়সলাকে নির্দেশ দেয়। সোমবার এসআই ফয়সাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। যুবলীগ নেতা সোহেল রানা বলেন, শাহিদা এলাকায় বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত। তার অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করলেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে সে হয়রানী করে। তিনি আরো বলেন, শাহিদা ইব্রাহিম নামের এক লোকের সাথে অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পরে। আমি এর প্রতিবাদ করলে আমাকে হয়রানী করার জন্য শাহিদা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ছিনতাই মামলা দায়ের করেছে। আমি এর প্রতিকার চাই। মামলার বাদী শাহিদা বেগম বলেন, সোহেল আমার বাসা থেকে এক লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে। তাই আমি মামলা দিয়েছি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। স্থানীয় বাসিন্দা জাফর হাওলাদার, সুখি বেগম ও সাবেক ইউপি সদস্য ওহাব হাওলাদার বলেন, এমন কোন ঘটনা আমাদের জানা নেই। তারা আরো বলেন, সোহেলকে হয়রানী করার জন্য এ মিথ্যা মামলা দিয়েছে শাহিদা। গাজীপুর বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজী মোঃ রুহুল আমিন বলেন, এমন কোন ঘটনা আমার জানা নেই।শাহিদা বিভিন্ন এলাকায় অনৈতিক কাজে জড়িত বলে অভিযোগ আছে। সোহেলকে হয়রানী করার জন্য এ মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কমকতা এসআই ফয়সাল বলেন, ঘটনাস্থল তদন্ত করেছি। প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পাওয়া যায়নি। অধিকতর তদন্তের জন্য মামলার বাদীকে স্বাক্ষী প্রমাণসহ থানায় আসতে বলেছি। আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মনোরঞ্জন মিস্ত্রি বলেন, মামলাটির তদন্তের জন্য এসআই ফয়সালকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।