আদালতের ব্যতিক্রমী রায় শাস্তির বদলে ৪৫ দম্পতিকে ফিরিয়ে দেয়া হল সংসারে

প্রকাশিত: ৫:০৭ অপরাহ্ণ, জুন ৮, ২০২২

আদালতের ব্যতিক্রমী রায়  শাস্তির বদলে ৪৫ দম্পতিকে ফিরিয়ে দেয়া হল সংসারে

শামসুল কাদির মিছবাহ, সুনামগঞ্জঃ সুনামগঞ্জে যৌতুক ও নির্যাতনসহ পারিবারিক মামলায় শাস্তির বদলে দম্পতির হাতে ফুল দিয়ে ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৮ জুন) দুপুরে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন পৃথক এই ৪৫ মামলার রায় দেন। রায় ঘোষণার পর তাদের হাতে ফুল তুলে দেওয়া হয়।

আদালতের এজলাসে মামলার বাদী-বিবাদীদের রায় পড়ে শোনান বিচারক। এ সময় স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে সদ্ভাব বজায় রাখা, যৌতুক দাবি ও অত্যাচার নির্যাতন না করাসহ ৫ শর্তে আসামিদের আপসে মুক্তি দেওয়া হয়। আদালতের আদেশ মেনে না চললে আবারও রীতি মতো মামলা চালু হবে বলে সর্তক করে দেয়া হয়।
আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ৪৫টি পরিবারকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য এরকম আদেশ দেয়া হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্ন দম্পতিরা সন্তানাদি ও পরিবার-পরিজন নিয়ে আগের মতো সংসার করতে পারবেন। বাবা ও মায়ের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমার কারণে এসব পরিবারের শিশুরা পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত ছিলো। দীর্ঘদিন ধরে মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে উভয় পরিবারের আর্থিক ও মানসিক ক্ষতি হয়েছে। এসবের প্রভাব এসে পড়েছে তাদের সন্তাানদের ওপর। ফলে শিশু সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

এদিকে আদালতের এমন মহানুভবতা ও ব্যাতিক্রমী রায়ে সন্তুষ প্রকাশ করেছেন দম্পত্তিরা।
দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের এক নারী বলেন, পারিবারিক বিরোধে অশান্তি ছিলো আমার জীবনে। স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করি। আদালত তাকে জেলে পাঠায়। আদালতের হস্তক্ষেপে আজ আপোসে মিমাংসা হলো। এতে আমি আনন্দিত ।
জগন্নাথপুর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের এক দম্পতি বলেন, পরিবার সন্তান নিয়ে এতোদিন অনিশ্চিয়তায় ছিলাম। আদালত আমাদের এক করে দিয়েছেন। আদালতের নির্দেশনা মেনে সামনের দিনগুলোতে সুখে শান্তিতে চলতে চাই।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের পিপি নান্টু রায় বলেন, আদালতের কাজ শুধু সাজা দেওয়া নয়। যুগান্তকারী এই রায়ের ফলে ৪৫টি পরিবার রক্ষা পেয়েছে। দীর্ঘদিন মামলা চালিয়ে পরিবারগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। আজ মামলা শেষ হওয়ায় তারা আবার সংসার জীবনে ফিরে যাবে।


মুজিব বর্ষ

Pin It on Pinterest