বদলগাছীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২লাখ ৫০হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

প্রকাশিত: ৭:৪৪ অপরাহ্ণ, জুন ২৮, ২০২২

বদলগাছীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২লাখ ৫০হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

সাগর হোসাইন , বদলগাছী, (নওগাঁ),প্রতিনিধিঃ উপজেলার ইন্দ্রশগুনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সরকারি বরাদ্বকৃত সিলিপের টাকা ও আসবাবপত্র ক্রয় এবং মাটিভরাটের টাকা আত্মসাতসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক রন্জনা আক্তারের বিরুদ্ধে।

উপজেলার ৭নং আধাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইন্দ্রশগুনা গ্রামের, ইন্দ্রশগুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিলিপের ৫০হাজার এবং আসবাবপত্র ও মাটি ভরাটের ২ লাখ টাকার কাজ না করে আত্মসাত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমনটি অভিযোগ করেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও অবিভাবক সূত্রে জানা গেছে, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সময় মতো স্কুলে উপস্থিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন না। সহকারী শিক্ষক গুলো সময় মতো উপস্থিত হলেও স্কুলের তালা খুলতে না পারাই সহকারী শিক্ষক, ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে বাহিরে অপেক্ষা করে বিরম্বনার শিকার হয়। এছাড়াও ঔ স্কুলের প্রধান শিক্ষক রনজনা আক্তার ছুটিতে থাকলে বিষয়টি সহকারী শিক্ষকদের জানানোর প্রযোজন মনে করেন না। ঔ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছুটিতে থাকলেও স্কুলের তালা চাবি তার কাছে রাখেন বলেও জানা গেছে।

ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সাড়ে ৯টার সময় স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের হৈ চৈ দেখে স্কুলে গিয়ে দেখেন স্কুলের ঘড় তালাবদ্ধ রয়েছে। স্কুল সাড়ে ৯টার সময় তালাবদ্ধ দেখে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ফোন দিলে তিনি স্কুলের তালা খুলে দিবার ব্যবস্থা করেন ১০ টার সময়। ঐ ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আরও বলেন, প্রধান শিক্ষকের কাছে স্কুলের সিলিপের ৫০হাজার টাকার হিসাব চাইলে প্রধান শিক্ষক সাবান ক্রয় বাবদ ৪জাহার টাকা এবং ৫০টাকা দামের কয়েকটি টালি খাতা ক্রয় করে ৫ হাজার টাকা রশিদ দেখিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের রেজুলেশন খাতাতে সহি করতে বলেন। স্কুলের মাটি ভরাট এবং বারান্দার গ্রিল ক্রয় এর জন্য ২ লাখ টাকার খরচ দেখানো হয়। কাজ শেষ না হতেই ২লাখ ৫০ হাজার টাকার হিসাব দেখানো হয়েছে।

২০হাজার টাকার গ্রিল সেটিং করতে ২২হাজার টাকা খরচ, একটি টয়লেট পরিস্কার করতে খরচ ধরা হয়েছে ১০ হাজার, ৫শত টাকার রং ক্রয় করে রংসহ মিস্ত্রি খরচ ৩ হাজার টাকা এসব খরচ দেখানো হয়। সরকারি নিয়োম নীতির তোয়াক্কা না করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রনজনা আক্তার

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছলিম উদ্দীন বলেন, ইন্দ্রশগুনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজের জন্য ২লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ আসছে। তবে টাকা গুলো কোন কাজে ব্যবহার করা হয়েছে ।

সে সব বিষয়ে আমাকে জানানো হয়নি। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শুধু নামে বানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন স্কুলের নামে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ কাজ না করে বিভিন্ন ভাবে অনিয়ম দূর্নীতি করে স্কুলের অর্থ উত্তোলন করে নিজেদের পকেটে ভড়াবে কিন্তু বিদ্যালয়ের সভাপতি এবং ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সহি দিতে হবে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন রকমের ভুলভাল রশিদ তৈরী করা হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে সঠিক তদন্ত করে আইনঅনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার ।

এবিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রনজনা আক্তার বলেন, সকলের সাথে পরামর্শ করে ২লাখ ৫০হাজার টাকার উত্তোলন করেছি।কাজ শেষ না করে টাকা উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন,রেজুলেশনের মাধ্যমে সকলের পরামর্শে করেছি।এবং তিনি কাগজপত্র দেখাতে অস্বীকার করেন। তিনি আরও বলেন আমি এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ঐ স্কুলের ২লাখ ৫০ হাজার টাকা স্কুলে খরচ করবো নাকি আমার ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার করবো সেটিও আমার বিষয়। পরে তিনি আরও বলেন আপনাকে দোকানের ক্রয়কৃত রশিদ দেখানো যাবে না আপনে কি পারেন করেন।

ইউনিয়ন পরিষদের সার্ভেয়ার আব্দুল আল মামুন বলেন,মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে।কাজ শেষ না করে টাকা উত্তোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে,তিনি চুপ করে থাকেন।পরে কিছু না বলে ফোন কেটে দেয়।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমান বলেন,স্কুলের কাজের বিষয়টি আমাদের জানার বাহিরে । তবে কাজের বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলী ইনঞ্জনিয়ার কাজের ইসস্টিমেট তৈরী করেন। তিনি আরও বলেন স্কুলের বরাদ্দ কতটাকা সেটি জানা আছে। তবে কাজ সঠিক ভাবে বুঝে নিবার দায়িত্ব শিক্ষক সহ ম্যানেজিং কমিটির। বদলগাছী উপজেলার নিবার্হী প্রকৌশল অফিসার মোকলেছার রহমান বলেন, বদলগাছী উপজেলা ইনঞ্জনিয়ার অফিসের সারভিয়ার আব্দুল আল মামুন পরিদর্শন করেছে। এখনো কাজ শেষ হলোনা ২লাখ টাকা খরচ দেখালেন কি করে প্রধান শিক্ষক। আর সিলিপের ৫০ হাজার টাকার বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই বলে তিনি ফোন রেখে দেন।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest