ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের উদ্যোগে এইডস সচেতনতা কর্মশালা অনুষ্ঠিত |

প্রকাশিত: ৭:২৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০২২

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের উদ্যোগে এইডস সচেতনতা কর্মশালা অনুষ্ঠিত |

মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান |
আলোকিত সময়.কম |

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের উদ্যোগে তাদের কনফারেন্স রুমে ‘পর্যটন নগরী কক্সবাজারের স্পা সেন্টারে কর্মরত সদস্যদের সাথে এইডস সচেতনতা’ শীর্ষক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের পুলিশ সুপার মোঃ জিললুর রহমান। অনুষ্ঠানে কক্সবাজারে অবস্থিত ১৬ টি স্পা সেন্টারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার চৌধুরী মিজানুজ্জামান ও নারী কল্যান কক্সবাজার জেলার প্রধান শাহেদা পারভীন উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত কর্মশালায় বিভিন্ন স্পা সেন্টারের পরিচালক/ কর্মরত সদস্যরা বক্তব্য প্রদান করেন।

নারী কল্যান সংস্থার প্রধান শাহেদা পারভীন বলেন প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে কর্মিদের নিরাপত্তার জন্য একটা কমিটি করা যেতে পারে,যারা তাদের কর্মিদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা প্রদান করবে। সি পার্ল রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের কর্মকর্তা জিম বলেন, কোন থেরাপি নিলে কি হয় তা কাস্টমারকে আগেই বুঝিয়ে দেয়া এবং কাস্টমারদের মাইন্ড সেট আপে চেঞ্জ আনা দরকার। সায়মন বিচ রিসোর্টের কর্মকর্তা এসকে মৌদুদুর রহমান বলেন, গেস্টের বা ক্লায়েন্টের আইডি নিতে হবে। হংকং স্পা এর স্বত্বাধিকারী রুপা পাশা বলেন স্পা করানোর সময় রুমের ভেতর থেকে দরজা লক করা যাবেনা। কর্তৃপক্ষ যেকোন সময় প্রবেশ করে মনিটর করতে হবে।
ওশেন প্যারাডাইসের প্রতিনিধি শারমিন আক্তার বলেন, ক্লায়েন্টকে আগে থেকেই সচেতন করতে হবে যে এখানে থেরাপি ছাড়া অন্য কিছু হবেনা। সুইডিশ থাই স্পা সেন্টারের প্রতিনিধি রিয়া বলেন, স্পা সেন্টারের সেবা প্রদানের সময় নির্ধারণ করে দিতে হবে। গোল্ড থাই স্পা সেন্টারের প্রতিনিধি জানান কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গা কিনা সেটা যাচাই করা দরকার। এএসপি মিজানুজ্জামান বলেন স্পা সেন্টারগুলোতে গ্লাস ডোর দেয়া জরুরি যাতে কি হচ্ছে তা বাইরে থেকে দেখা যায়।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম জানান, এটি একটি শিল্প, এটাকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে আপনাদের সবাইকে সততার সাথে প্রকৃত স্পা যাকে বলে সেটা দিতে হবে। আইনী কাঠামোর মধ্যে কিভাবে আনা যায় সে ব্যাপারে আমরা সহায়তা করব। তাছাড়া স্পা সেন্টার সঠিকভাবে চললে এইডস্ হবার কোন চান্স থাকার কথা নয়। ট্যুরিস্ট পুলিশ স্পা সংশ্লিষ্ট অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের পুলিশ সুপার মোঃ জিললুর রহমান বলেন সম্প্রতি বেশ কিছু পত্রিকায় এসেছে কক্সবাজারে ৭১০ জন এইচআইভি রোগী সনাক্ত হয়েছে যার মধ্যে রোহিঙ্গা রয়েছে ৬১২ জন। এটা পর্যটনের জন্য হুমকি। স্পা সেন্টারগুলো এইডস ছড়ানোর অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। স্পা সেন্টারের নামে পতিতাবৃত্তি করা বা অবৈধ কার্যক্রম কোনভাবেই আমরা বরদাসত করবনা। এ লক্ষ্যে প্রতিটি স্পা সেন্টারে কর্মি নিয়োগের ক্ষেত্রে এইচআইভি পরিক্ষা করিয়ে তাদের নিয়োগ দিতে হবে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে বিনামূল্যে এইচআইভি পরিক্ষা করা যায়।


প্রত্যেক কর্মীর বায়োডাটা ও মেডিকেল রিপোর্ট ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছে জমা দিতে হবে। প্রত্যেক কর্মির নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ দিতে হবে। প্রতি ৩ মাস অন্তর অন্তর এইচআইভি টেস্ট করাতে হবে। প্রত্যেক স্পা সেন্টারের ফ্রন্ট ডেস্কে এইচআইভি রোগ সম্পর্কে লিফলেট/ফেস্টুন রাখতে হবে। স্পা সম্পর্কিত সেবা ও তার মূল্যতালিকা দৃশ্যমান স্থানে টাঙ্গিয়ে রাখতে হবে। ট্যুরিজম বিকাশের জন্য সবাইকে সচেতন হয়ে নিজ নিজ ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। আগামি ১০ তারিখের মধ্যে সকল স্পা সেন্টারের কর্মিদের বিস্তারিত তথ্য ট্যুরিস্ট পুলিশ অফিসে জমা দিতে হবে। ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়ন নিয়মিত তদারকি করবে৷ যেকোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কক্সবাজার একটি পর্যটন নগরী এখানে সবাই সচেতনভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করলে পর্যটনের বিকাশ সম্ভব হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই এইডস প্রতিরোধে সচেতন হবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।


alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest