ঢাকা ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:২০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৬, ২০২৩
রাজশাহী প্রতিনিধি :
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার আকুবাড়ি গ্রামে প্রতিপক্ষের লোকজন কর্তৃক জমিতে কেটে রাখা পাকা আমন ধান লুটের চেষ্টা ও বাধা দিলে হামলা এবং হামলাকারীদের আইনের আওতায় নিয়ে এসে কঠোর শাস্তির দাবিতে নগরীতে সংবাদ সম্মেলন সম্মেলন করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে নগরীর রেলগেট এলাকায় ভুক্তভোগী পরিবার কর্তৃক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মোহনপুর উপজেলার মৌগাছি ইউনিয়নের আকুবাড়ি গ্রামের প্রতিপক্ষের হামলায় আহত কামরুজ্জামান জনির স্ত্রী শাহিনুর আক্তার। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার শ^শুর মৃত. রুপবান প্রামানিক গত ৫৩ বছর আগে ১৩০ নং আকুবাড়ি মৌজায় ৪৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেছিলেন। তপসীল-সিএস ৭২, দাগ নং সাবেক-৮০২, হাল-৯১৭, এস.এ-৭১। তিনি বেঁচে থাকাকালীন সেই জমি চাষ করে জীবীকা নির্বাহ করেছেন। গত ৩ বছর আগে আমার স্বামী কামরুজ্জামানসহ ওয়ারিশরা সেই জমিতে ধান রোপণ করেন। তখন ধান আধাপাকা অবস্থাতেই প্রতিপক্ষের লোকজন আহচান মন্ডলের নেতৃত্বে জোর করে কেটে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিলে তারা বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয়। পরে স্থানীয় ৪নং মৌগাছি ইউনিয়ন পরিষদে বিষয়টি জানানো হয়। তারা দুই পক্ষ নিয়ে বসে কিন্ত সেই ব্যাপারটি স্থায়ীভাবে অমীমাংসিত থেকে যায়। এরপর থেকে তিন বছরে সব মিলিয়ে তারা আমাদের বিরুদ্ধে ১১/১২টি অভিযোগ ও মামলা করেন। তাদের হামলা-মামলায় আমাদের গ্রামে টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও মোহনপুর থানার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিন তদন্তপূর্বক জেলা রাজশাহীর অতিঃ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মামলার প্রেক্ষিতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, মৃত রুপভান প্রামানিকের নামে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ আছে। জমিটি তার নামে প্রচলিত আছে। আমাদের সব কাগজ থাকার পরেও তারা জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, গত ২১ নভেম্বর বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে আমাদের জমিতে কেটে রাখা পাকা আমন ধান আকুবাড়ি গ্রামের আলিমুদ্দীন ওরফে ভোদার ছেলে মিলন (২৯), আলিমুদ্দীন (ভোদা), আহচানের ছেলে বেলাল (৩৬), মৃত নসিরুদ্দীনের ছেলে নাজিমুদ্দীন (৫৫), বেলালের ছেলে শিহাব (১৮), নাজিমুদ্দীনের ছেলে রায়হান রায়হান ওরফে বাবু, আজিমুদ্দীনের ছেলে কামরুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা আরো ২৫/৩০ জন ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র হাসুয়া, কোদাল, রড এবং কাস্তেসহ জোরপূর্বক আমাদের জমির ধান তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। লোখমুখে বিষয়টি জানার পর আমার মেজ জা রেবেকা, আমার স্বামী কামরুজ্জামান জনি, ভাসুরের ছেলে মাহফুজুর রহমান ও মেজ ভাসুর আতাউর রহমান জমিতে যাওয়ার পথে জনৈক রিয়াজের বাড়ির সামনে পৌঁছালে প্রতিপক্ষরা কোনোকিছু বুঝে উঠার আগেই দেখামাত্র আমাদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। তারা হামলা করে রেবেকা, কামরুজ্জামান জনি, মাহফুজুর রহমান ও আতাউর রহমানকে আহত করে। তাদের হামলায় আমাদের লোকজন আহত হয়ে মাটিতে পড়ে ছিল।
এ সময় ঘটনাস্থলে স্থানীয় প্রতিবেশীরা এসে আমাদের আহত লোকজনকে উদ্ধার করে মাহিন্দ্রা গাড়িতে করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে। চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ৩ জন ছাড়া পেলেও বাকি ১ জন আমার ভাসুরের ছেলে মাহফুজ এখনও অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হওয়ার পর থেকে সে কথা বলতে পারছেনা। চিকিৎসকরা তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে। তারা উল্টো আমাদের নামে থানায় অভিযোগ করেছেন। ঘটনার পর থেকে সবাই বাড়ি ছাড়া। আমাদের সহযোগীতা ও আসামীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপারসহ উর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, আফরোজা খাতুন সন্ধ্যাসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজন। এ বিষয়ে মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি হরিদাস মন্ডল বলেন, থানায় লিখিত দিয়ে অভিযোগ দিয়ে থাকলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST