ঢাকা ২২ জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:৫২ অপরাহ্ণ, মে ১১, ২০২৪
সাগর হোসাইন, বদলগাঁছী(নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ
নদীর নাম ছোট যমুনা, অবস্থান নওগাঁর বদলগাছীতে। তবে সেখানে গেলে এই নামে কোনো নদী দেখতে পাওয়া যাবে না। দেখা যাবে বিস্তীর্ণ ধানক্ষেত।
অবাক হওয়ার মতো বিষয় হলেও একসময়ের খরস্রোতা নদী ছোট যমুনা এখন ধানক্ষেতে পরিণত হয়েছে। তাই নদীর পানিও নেই, নেই নৌকাও। যতদূর চোখ যায় শুধু ধান আর ধান।
নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় জেলার বদলগাছী উপজেলার তেজাপাড়া-কাদিবাড়ি পাশাপাশি দুটি এলাকায় ধান চাষ করেছেন শতাধিক কৃষক। সেই নদীর বুকে কয়েকজনকে ধান কাটতে দেখা যায়। আবার অনেক জায়গা থেকে ধান কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কথা হয় কৃষক তসলিম, আফজাল, রফিকুল, শামিম ও মোস্তফার সঙ্গে। তারা জানান, আমরা ৫-৭ জন মিলে বেশকিছু জায়গায় ধান চাষ করেছি। তাই নিজেরাই ধান কাটছি। এই ধান দিয়ে আমাদের সারা বছরের সংসার চলে। অবশ্য বৃষ্টির কারণে পানি জমতে শুরু করেছে। আর কয়েকদিন পর পানিতে ভরে যাবে নদীটি।
তারা আরও জানান, উত্তর দিকের তেজাপাড়া ব্রিজ থেকে দক্ষিণে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় অনেকেই এই নদীর বুকে ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। নদী শুকালে ধান চাষ করা যায়। যা দিয়ে সংসার চলে।
নওগাঁর নদী, খাল-বিল দখল ও দূষণের প্রতিবাদে বিভিন্ন সময় রাস্তায় নামা সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদের সভাপতি অ্যাড. ডিএম আব্দুল বারী বলেন, বিভিন্ন নদী, খাল-বিল, প্রাকৃতিক বনায়নে ভরপুর আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ। কিন্তু আমাদের বিরূপ আচরণের কারণে আমরা নিজেরাই প্রকৃতিকে বিভিন্নভাবে ধ্বংস করে ফেলছি। নওগাঁসহ সারা দেশের নদী, খাল-বিল দখল ও দূষণের জন্য সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি জনসচেতনতাও এর জন্য দায়ী। তবে নদী শুকিয়ে গেলে সেখানে ধান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করা সেটা খারাপ কিছু না। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের অনুমতি নিয়ে চাষ করলে ভালো হয়। এতে অনেকে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে।
বদলগাছী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাবাব ফারহান বলেন, বোরো মৌসুমে উপজেলায় ১১ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এছাড়া নদীর ধারে উল্লেখযোগ্য হারে ধান উৎপাদিত হয়েছে। কারণ নদীর পাশের জমিতে পলির আস্তরণ জমে এবং সেখানে জৈব পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই সেখানে ধান, সবজিসহ সব ধরনের ফসল ভালো উৎপাদন হয়ে থাকে।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফয়জুর রহমান বলেন, ছোট যমুনা নদীসহ কয়েকটি নদী ও খাল পুনঃখননের জন্য আবেদন দেওয়া আছে। অনুমোদন পেলে যে কোনো সময় কাজ শুরু হবে
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST