সৈয়দপুরে আদম শুমারীর গণনাকারী নিয়োগে টাকার খেলা শিক্ষক-মেম্বার-এনজিও কর্মীসহ অন্যত্র কর্মরতরা কাজ পেয়েছে

প্রকাশিত: ৭:১৩ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২০

সৈয়দপুরে আদম শুমারীর গণনাকারী নিয়োগে টাকার খেলা শিক্ষক-মেম্বার-এনজিও কর্মীসহ অন্যত্র কর্মরতরা কাজ পেয়েছে

খাদেমুল মোরসালিন শাকীর,রংপুর ব্যুরো :-  নীলফামারীর সৈয়দপুরে আসন্ন আদম শুমারী তথা জনগণনার কাজ করার জন্য গণনাকারী ও সুপারভাইজার নিয়োগে টাকার খেলা হয়েছে। নিয়োগ বিধি অনুযায়ী শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীরা নিয়োগ পাওয়ার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সমঝোতায় অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ পেয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ক্লার্ক, এনজিও কর্মী, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিবর্গসহ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত ও চলমান দায়িত্বরত মেম্বার। এতে মেধা বা যোগ্যতার কোন মূল্যায়ন না করে শুধুমাত্র আর্থিক সুবিধা নিয়ে অযোগ্য ও অবৈধ লোকদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ফলে শিক্ষিত বেকাররা বঞ্চিত হয়েছে। একারণে উপজেলা জুড়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা। কিন্তু তারপরও বিন্দু মাত্র বিচলিত নয় উপজেলা পরিসংখ্যান বিভাগসহ নিয়োগ কমিটি। অনুসন্ধানে দেখা যায়, সৈয়দপুর উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার আনোয়ারুল ইসলাম, হাজারীহাট আলিয়া মাদরাসার অফিস সহকারী ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আজম ্আলী সরকার, কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের হাজারীহাট শিশু নিকেতনের শিক্ষক মোঃ সাগর ইসলাম ও তার স্ত্রী হাজারীহাট ব্র্যাক অফিসের রিসিপসনিষ্ট আয়েশা সিদ্দিকা, তার বোন সুমনা বেগম এবং ভগ্নিপতি রোকনুজ্জামান রুবেল, একই ই্উনিয়নের সুতারপাড়া প্রতিবন্ধি স্কুলের শিক্ষক নাহিদ ইসলাম চোধুরী সোহাগ, কীট নাশক কোম্পানীর রিপ্রেজেন্টেটিভ নুরুল হুদা তার স্ত্রী নাজমিন আক্তার নিয়োগ পেয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর এসও মোঃ আতাউর রহমানের ভাগিনা সাগর, ভাগিনি সুমনা, ভাগিনা বউ আয়েশা সিদ্দিকা ও ভাগিনি জামাতা রুবেল। এছাড়াও উপজেলা সমবায় অফিসার ও পরিসংখ্যান অফিসারের সমন্বয়ে একাধিক প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এমনকি কয়েকজন সাংবাদিকের মাধ্যমেও নিয়োগ সংক্রান্ত অর্থ লেনদেন হয়েছে মর্মে অভিযোগ রয়েছে। যে কারণে এ নিয়োগ নিয়ে চরম সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। যা এখন উপজেলার সর্বত্র প্রধান আলোচনার বিষয়ে পরিণ হয়েছে। বঞ্চিতদের অভিযোগ নিয়োগের অনিয়ম ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই নিয়োগপ্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র রোল নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে যদি প্রার্থীদের নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করা হয় তাহলে এধরণের অনিয়মের আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। তারা নতুন করে নাম ঠিকানা সহ তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন এবং অভিযোগগুলো তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মোঃ আখতারুজ্জামান জানান, অর্থ নেওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে কোথাও কোথাও দু’একজন চাকুরীজীবি ও নিয়োগ বিধি বহির্ভূতভাবে ব্যক্তি নিয়োগ পেয়েছেন হয়তো। আসলে তারা নিজেদের পরিচয় গোপন করেছেন বা মিথ্যে বলেছেন। তাই তাদের ভাইবা বোর্ডে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপনারা লিখিত আবেদন করলে তাদেরকে বাদ দেওয়া হবে। নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাসিম আহমেদ জানান, যদি কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তা তদন্ত করে দেখা হবে। অনিয়ম পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest