ঢাকা ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯ ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:৫১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৬, ২০২২
সাগর হোসেন, বদলগাঁছী,নওগাঁ, প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বালুভরা ইউনিয়ন পরিষদে অসহায় ও দুস্থ পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির (ভিজিডি) চাল বিতরণে সরকারি নিয়মনীতিকে অমান্য করে কার্ডধারী উপকারভোগীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও চটের বস্তা রেখে চাল বিতরণের অভিযোগ উঠেছে।
চাল দেবার জন্য উপকারভোগীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ২০ টাকা। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ৮নং বালুভরা ইউনিয়ন পরিষদে।
সরেজমিনে গত বুধবার (২৪ আগস্ট) ভিজিডির চাল বিতরণ সময় এসব অতিরিক্ত টাকা বালুভরা ইউপি চেয়ারম্যান আল এমরান হোসেনের প্রতিনিধি হিসেবে আনোয়ার নামের একজন গ্রামপুলিশ এ টাকা আদায় করছিলেন। এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই চেয়ারম্যান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, বুধবার (২৪ আগস্ট) বালুভরা ইউনিয়নে দিনব্যাপী ভিজিডির চাল বিতরণ হয়েছে। বালুভরা ইউনিয়নে মোট ১৮৬ জন উপকারভোগীদের কার্ড রয়েছে। প্রতি জনের জন্য ৩০ কেজি করে চটের বস্তায় প্যাকেটিং চাল বরাদ্দ থাকলেও চটের বস্তা রেখে উপকারভোগীদের ব্যক্তিগত বস্তায় ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। উপকারভোগীরা ভিজিডির কার্ড নিয়ে চাল নেওয়া জন্য পরিষদের চাল বিতরণের কক্ষের সামনে বসা গ্রাম পুলিশ আনোয়ারের কাছে গিয়ে ২০ টাকা করে দিয়ে টিপসহি দেন। তারপর ৩০ কেজি চালের চটের বস্তা খুলে উপকারভোগীদের নিয়ে আসা বস্তায় ঐ চাল পার করে দেওয়া হয়। চাল নেওয়ার পর পরিষদ চত্বরের গেইটেই চাল ব্যবসায়ীরা অনেক উপকা ভোগীদের নিকট থেকে চাল কিনে নিচ্ছেন। প্রতি বস্তা চাল ব্যবসায়ীদের কাছে ১১২০ টাকা থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন উপকারভোগীরা।
এদিকে নিয়ম না থাকলেও কার্ড প্রতি ২০ টাকা করে নেওয়া এবং চটের চাল সহ চটের বস্তা উপকারভোগীদের না দিয়ে বিক্রয়ের জন্য বস্তা রেখে চাল বিতরণ করা প্রশাসনের ট্যাগ অফিসারে সহযোগিতায় এই অনিয়ম দেখা দিয়েছে। উপকারভোগীরা এ বিষয়ে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কমনা করেছেন।
উপকারভোগী রুমি আক্তার চাল নিতে এসেছেন। তিনি বলেন, চাল নেবার সময় আগে ১৫ টাকা করে করে নিতো, কিছু সময় টাকা নেওয়া বাদ ছিল। এখন আবার ২০ টাকা করে নিচ্ছে ও চালের বস্তা খুলে চাল দিচ্ছে।
চাল নিতে আসা উপকারভোগী বুলি আক্তার বলেন, এসব চাল খাওয়া যায়না। এজন্য বিক্রি করে দেই, আজও ৩০ কেজি চাল ১১২০ টাকায় বিক্রি করেছি। চালের বস্তা আমাদেরকে দেওয়া হচ্ছে না।
চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি হিসেবে ২০ টাকা করে নেওয়া গ্রাম পুলিশ আনোয়ার বলেন, চাল পরিষদে আনার জন্য যে খরচ হয়, ওই খরচের জন্য এসব টাকা ও বস্তা নেওয়া হচ্ছে। বালুভরা ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে টাকা তুলতে বলেছে। আর ট্যাগ অফিসার টাকা না নিয়ে বস্তা রেখে দিতে বলেছে। টাকা নিলে সমস্যা হবে আর বস্তা রেখে দিলে ঝামেলা হবে না বলেন আনোয়ার হোসেন।
এ ব্যপারে বালুভরা ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা ট্যাগ অফিসার উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমি থাকা অবস্থায় বস্তা খুলে চাল বিতরণ করা হয় নি। টাকা নেওয়ার বিষয়টি আমি জানি না।
এ বিষয়ে বালুভরা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ এমরান হোসেন বলেন, কোন টাকা নেওয়ার নিয়ম নেই। বস্তা রেখে চাল বিতরণ করছেন কেন বলে জানতে চাইলে, তিনি নিউজ না করার ব্যপারে অনুরোধ করে বলেন এসব করা যাবেনা।
এব্যপারে মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মাহমুদা সুলতানার সাথে কথা বলতে তাঁর অফিসে গেলে তাঁকে পাওয়া যায় নি। বারবার ফোন করেও ফোন রিসিভ করেননি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিন সাথে কথা বলার জন্য অফিসে গেলে ইউএনও বাসায় গেছে বলে জানাযায়, মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেন নি।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST