হারুন অর রশিদ,জলঢাকা ( নীলফামারী ) প্রতিনিধি :-
নীলফামারী জলঢাকায় শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যানের নিজ ক্ষমতা বলে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বুড়ি তিস্তা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে ভরাট করা হচ্ছে সরকারি পুকুর। যেখানে নির্মিত হবে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্দ্যোগে ব্যবসায়ী মার্কেট এমনটাই দাবী স্থানীয়দের। তবে এ পুকুর ভরাটে স্থানীয় বাসিন্দাদের বাসাবাড়িতে হাটু পরিমান পানি জমে ভোগান্তী ও বিড়ম্বনা সৃষ্টি হলেও কিছু যায় আসে না চেয়ারম্যানের। অন্যদিকে সরকারি এ পুকুর ভরাট বিষয়ে ইউপি সচিব মামুন অর-রশিদ কিছুই জানেন না। তিনি জানান চেয়ারম্যানের নিজস্ব স্বীদ্ধান্তে ও নিজ উদ্দ্যোগেই এ পুকুর ভরাট হচ্ছে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আমাকে কোন কিছু জানায়নি। অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রায় লক্ষাধিক অর্থ ব্যায়ে শৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ৩১শতাংশ দীর্ঘদিনের একটি সরকারি পুকুরে ৪ হাজার ফিট পাইপ লাইন সংযোজন করে উচ্চ ক্ষমতা সম্পুন্ন ২টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বুড়ি তিস্তা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। ইউপি পরিষদ এবং পুকুর সংলগ্ন প্রায় ৮/১০টি বাড়ি দীর্ঘদিন থেকে উক্ত জমিতে ঘর নির্মান করে বসবাস করে আসছেন। পুকুর ভরাটের কারনে সেই সকল বাসাবাড়িতে হাটু পরিমান জ্বলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে পানিবন্দী হয়ে পরেছে পরিবারগুলো। এমনকি ভুমিহীন এ পরিবারগুলোকে বাড়ি সরানোর তাগিদ দিয়েছেন চেয়ারম্যান বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পানিবন্দী মানুষজন।
চেয়ারম্যানের এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন কৃতকার্যে পানিবন্দী অসহায় এ পরিবারগুলো বর্তমানে চাতঁক পাখির ন্যায় চেয়ে আছে। অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান নিজ ক্ষমতা বলে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ দীর্ঘদিনের পুকুর ভরাট করে নিজ অর্থায়নে মার্কেট নির্মান করে নিজের স্বক্ষমতা জানান দিতে এমন স্বীদ্ধান্ত গ্রহন করেছেন। পুকুর খননে পানিবন্দী বাসিন্দাদের দাবী চেয়ারম্যান কোনরুপ নোটিশ ছাড়াই আমাদের বাড়ি সরাতে বলেছে। যা নিয়ম বহিঃভূত। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাজারসহ অত্র এলাকায় অগ্নীকান্ড সংঘটিত হলে এই পুকুর থেকে পানি সরবরাহ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হতো। এখন সে জায়গাটি বন্ধ হয়ে গেলো চেয়ারম্যানের খামখেয়ালীপনা স্বীদ্ধান্তে। অন্যদিকে পরিষদ সংলগ্ন ইউনিয়ন ভূমি অফিস কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে উক্ত জমির দাগ ও খতিয়ান নাম্বারসহ কতটুকু জায়গা তা জানতে চাইলে তিনি জানান, যে বালু তুলতেছে তাকে বলেন। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। বলতেও পারবো না। আপনারা চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কোন মেনুয়্যালে এবং ইউনিয়ন পরিষদের কোন ফান্ড থেকে অর্থবহ্ ব্যায়ে পুকুর ভরাট করা হচ্ছে এমন বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় শৌলমারী ইউপি সচিব মামুন অর-রশীদ এর কাছে। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে জানান, চেয়ারম্যান পুকুর ভরাট বিষয়ে আমাকে কোন কিছু জানায়নি এমনকি কোন ফান্ড থেকে অর্থবহ্ ব্যায়ে পুকুর ভরাট করা হচ্ছে সে বিষয়ও আমি অবগত নই। আপনারা চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এ ঘটনায় গত রবিবার পরিষদে যান স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা। এ সময় চেয়ারম্যান রংপুর গেছেন বলে জানান পরিষদ কর্তৃপক্ষ। পরের দিন সোমবার আবারো পরিষদে আশে সাংবাদিকবৃন্দ। এ সময় সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে শুকৌশলে পরিষদ ত্যাগ করে চেয়ারম্যান। পরের দিন ৪ঠা অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে পরিষদে
আশে সাংবাদিকরা। এ সময় চেয়ারম্যান পরিষদ কক্ষে ছিলেন। সাংবাদিকদের স্বচোঁখে দেখে পুনরায় চেয়ারম্যান বাইকে চরে বসেন। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা চেয়ারম্যানকে বলেন কথা আছে একটু কিছু সময় দেন। তখন চেয়ারম্যান বলেন বাজার থেকে আসছি বলেই কৌশলে পরিষদ ত্যাগ করেন। গণমাধ্যমকর্মীরা ঘন্টা ব্যাপী অপেক্ষা করলেও চেয়ারম্যান রহশ্যজনক কারনে গণমাধ্যমকর্মীদের এড়িয়ে গিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। পরে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, আমি বাহিরে আছি। ফোন দিয়ে আসিয়েন। দেখেও চলে গেলেন কি কারন জানতে চাইলে চেয়ারম্যান বলেন, ইউএনও স্যারের ওখানে যান। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসান নয়ন বলেন, শৌলমারী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের বাউন্ডারীর দেয়াল ধসে পরছে। সেটি সংস্কারের জন্য বলেছি। চেয়ারম্যানকে পুকুর ভরাট করে মার্কেট নির্মান করতে বলিনি। তৎক্ষানিক তিনি চেয়ারম্যানকে ফোন দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করার নির্দেশ প্রদান করেন। পরে গণমাধ্যমকর্মীরা পুনরায় বালু উত্তোলন স্থানে এসে দেখতে পান নির্বাহী ম্যাজিট্রেডের কথা অমান্য করে দিব্বি চলছে পুকুর ভরাটের বালু উত্তোলন। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করা হলে তৎক্ষানিক বন্ধ করা হয় বালু উত্তোলন। এলাকাবাসীর অভিযোগ এখন বালু উত্তোলন বন্ধ হলেও রাতে চালাবে এর কার্যক্রম। অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যানের খুটির জোর কোথায়।
শেয়ার : ২৪৯