ঢাকা ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭ মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:০১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
মোঃ ফিরোজ হোসেন, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ ভাষা আন্দোলনের দীর্ঘ ৬৮ বছর পরেও নওগাঁর ধামুইরহাট সরকারি কলেজসহ জেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখনো তৈরি করা হয়নি কেন শহীদ মিনার। শহীদ মিনার না থাকায় এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মহান ভাষা আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে ধারণাও স্পষ্ট নয়। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোমলমতি অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা এ বিষয়ে কিছুই জানে না। নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং মাদ্রাসা মিলিয়ে জেলায় মোট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৬৭১টি। এর মধ্যে শহীদ মিনার আছে ১২১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার ১১টি উপজেলায় সরকারি, রেজিস্ট্রার্ড ও অন্যান্য মিলিয়ে মোট ১ হাজর ৩শ’৭৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর বিপরীতে শহীদ মিনার রয়েছে মাত্র ৪২টি। শহীদ মিনার নেই এ রকম কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে দেখা যায়, অমর একুশে, ভাষা আন্দোলন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে তাদের অনেকেই কিছুই বলতে পারেনি। এর মধ্যে যে কয়েকজন জানে তাও অস্পষ্ট। এদিকে, জেলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে সেগুলোও অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে। ২১ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকার কারণে এবং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যথাযথভাবে দিবসটি পালন না করায় অধিকাংশ শহীদ মিনারে ২১ ফেব্রুয়ারি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় না। কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনারে স্থানীয় রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান মাঝে মধ্যে ফুল দিয়ে থাকে। তবে ভাষা আন্দোলন বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কোন আয়োজন হয়না। ফলে শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা সম্পর্কে কিছু শিখতে বা জানতে পারছে না। সদর উপজেলার শিকারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র সাদিক জানায়, ২১ ফেব্রুয়ারি এই দিবস কিসের জন্য তা সে জানে না। মহাদেবপুর উপজেলার ঘাসিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী মাহমুদা একুশে ফেব্রুয়ারি সম্পর্কে বলে তারা ওইদিন স্কুলে গিয়ে ফুল দেয়। তবে দিবসটির বিষয়ে সেও কিছু বলতে পারেনি। মান্দা উপজেলার গনেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ঝর্ণা পারভীন বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সরকারি কোন ফান্ড না পাওয়ায় নির্মাণ করা যাচ্ছে না। নওগাঁ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার নাইয়ার সুলতানা বলেন, সদর উপজেলায় ১৩৯টির মধ্যে ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার আছে। আমি সদর উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা দিয়েছি। আশা করি মুজিব বর্ষের মধ্যে সদর উপজেলার সকল প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোবারুল ইসলাম ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই তার একটি তালিকা শিক্ষা প্রকৌশলীর মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে তবে এখনও কোন সিদ্ধান্ত না পাওয়ায় শহীদ মিনার নির্মাণ করা যাচ্ছে না।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST