কখন করাবেন ডেঙ্গুর পরীক্ষা ?

প্রকাশিত: ১:৪৭ অপরাহ্ণ, মে ৮, ২০২০

কখন করাবেন ডেঙ্গুর পরীক্ষা ?

কোভিড-19 করো’না’ভা’ইরাসে সারা বিশ্বের মানুষই এখন আ’ত’ঙ্কিত। এরইমধ্যে আবার এসেছে ডেঙ্গুর ঋতু। কারো শরীরে জ্বর, সর্দি, কাশি থাকলে ক’রো’না সন্দেহ না হলেও তার ডেঙ্গু জ্বরের পরীক্ষা করানোর জন্য চিকিৎসকদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে।

করোনার এই সময়টাতে নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জ্বর দেখা দিলেই রোগী নিয়ে হাসপাতালে ছুটছেন অনেকে। আবার জ্বর দেখা দিলেই ডেঙ্গু হয়েছে কি না তা যাছাইয়ের জন্য ব্যস্ত থাকেন অনেকেই। এ নিয়ে ছুটাছুটিও কম করছেন না।

জেনে নিন ডেঙ্গুর লক্ষণ ও কখন পরীক্ষা করাবেন-

উচ্চমাত্রার জ্বর

ডেঙ্গুর প্রথম উপসর্গ হলো হঠাৎ করেই উচ্চমাত্রার জ্বর। প্রচণ্ড শীত অনুভূত হওয়া, প্রচণ্ড শরীর ব্যথা, অবসাদ ও ক্লান্ত অনুভব করা। জ্বর ১০০ থেকে ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের মধ্যে থাকতে পারে। তবে দ্রুত চিকিৎসা না পেলে জ্বর তীব্র গতিতে বাড়তে থাকে।
চোখের পেছনে ব্যথা

এই রোগের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো– জ্বরের সঙ্গে চোখের পেছনে ব্যথা। অক্ষিকোটরে বিরামহীন চাপ অনুভূত হয়। তাই জ্বরের সঙ্গে চোখের পেছনে ক্রমাগত ব্যথা হলে দ্রুত ডেঙ্গুর পরীক্ষা করানো উচিত।

মাথাব্যথা

কপাল থেকে শুরু হয়ে ব্যথা মাথা পেছন দিক পর্যন্ত চলে যেতে পারে। মাথাব্য’থার এমন আচরণ ডেঙ্গুরই ইঙ্গিত দেয়। আর পেশি ও হাড়ের জোড়ায় ব্যথা হওয়াও ডেঙ্গুর লক্ষণ।

ত্বকের র‌্যাশ

ত্বকে চ্যাপ্টা ও লালচে রঙের র‌্যাশ দেখা দেয় এই রোগে। জ্বর শুরু হওয়ার ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে এই র‌্যাশ দেখা দিতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা চুলকায় ও শরীরের যে কোনো জায়গায় হতে পারে।

বমিভাব ও বমি

এই রোগে আক্রান্ত হলে বমিভাব অনুভূত হতে থাকে। বমি হলে এবং সঙ্গে পেটব্য’থা থাকলে বুঝতে হবে রোগের তীব্রতা বাড়ছে। এসব উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি এবং অন্যান্য তরল পান করতে হবে, যাতে ‘প্লাটিলেট কাউন্ট’ কমতে না পারে।

কোন সময়ে পরীক্ষা করবেন

জ্বরের শুরুতে বা দুই-একদিনের জ্বরে র’ক্ত পরীক্ষায় কোনও কিছু শনাক্ত নাও হতে পারে এবং তা রোগ নির্ণয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে। রোগী এমনকি ডাক্তারও মনে করতে পারেন যে রিপোর্ট ভালো আছে, তাই আর কোনও পরীক্ষার প্রয়োজন নেই।

মনে রাখতে হবে, প্লাটিলেট কাউন্ট ৪ বা ৫ দিন পর থেকে কমতে শুরু করে, তাই জ্বর শুরুর ৫ বা ৬ দিন পর রক্ত পরীক্ষা করা উচিত। এর আগে পরীক্ষা করলে তা স্বাভাবিক থাকে বিধায় রোগ নির্ণয়ে যেমন বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়, তেমনি অপ্রয়োজনে পয়সাও নষ্ট হয়।

অনেকেই দিনে দুই-তিনবার করে প্লাটিলেট কাউন্ট করে থাকেন। আসলে প্লাটিলেট কাউন্ট ঘন ঘন করার প্রয়োজন নেই, দিনে একবার করাই যথেষ্ট, এমনকি মা’রা’ত্মক ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারেও। তাছাড়া একই সঙ্গে একাধিক ল্যাবরেটরি থেকে প্লাটিলেট কাউন্ট না করানোই ভালো, এতে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।

দেখা যায়, বিভিন্ন ল্যাবরেটরি থেকে বিভিন্ন রকমের রিপোর্ট আসছে, এতে কোনও রিপোর্ট সঠিক তা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। ডাক্তার বা রোগী বিভ্রান্তিতে পড়েন। তাছাড়া এতে অযথা রোগীর অর্থের অপচয় ঘটে।

আরও একটি পরীক্ষা অনেকেই করে থাকেন যেমন ডেঙ্গু এন্টিবডি। এই এন্টিবডি সাধারণত ৪ থেকে ৬ দিন পর তৈরি হয়। তাই এই সময়ের আগে এই পরীক্ষা করলে র’ক্তে এন্টিবডি পাওয়া যায় না, যা রোগ নির্ণয়ে সমস্যা সৃষ্টি করে।

ডেঙ্গু এন্টিবডির পরীক্ষা ৫ বা ৬ দিনের আগে করা উচিত নয়। মনে রাখা দরকার, এই পরীক্ষা রোগ শনাক্তকরণে সাহায্য করলেও রোগের চিকিৎসায় এর কোনো ভূমিকা নেই।

সুত্রঃ আরটিভি অনলাইন


মুজিব বর্ষ

Pin It on Pinterest