গল্পটা কার্টুন ভর্তি মোবাইল সেট ও সেগুলোর মালিকদের খোঁজার

প্রকাশিত: ৮:৪০ অপরাহ্ণ, জুন ১২, ২০২০

গল্পটা কার্টুন ভর্তি মোবাইল সেট ও সেগুলোর মালিকদের খোঁজার

আলোকিত সময় ডেক্স: চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসের ঘটনা। রাজবাড়ী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এর একটি দল দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যায়। উদ্দেশ্য অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার অভিযান পরিচালনা। দলটি সেখানে গিয়ে ঘাটের ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সিসি ক্যামেরাসমূহ পর্যবেক্ষণ করছিল। ঘাট এলাকায় প্রচুর মানুষের সমাগম। হঠাৎ একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, কার্টন হাতে এক লোক ঘাট এলাকায় হেঁটে যাচ্ছেন। লোকটির মুখটা অস্পষ্ট। কিন্তু তাঁর হাঁটার গতি স্বাভাবিক নয়। তিনি এদিক-ওদিক তাকাচ্ছেন। কেউ তাঁকে অনুসরণ করছে কি-না, সেটি বোঝার চেষ্টা করছেন।

ওই ব্যক্তির গতিবিধিতে পুলিশের সন্দেহ হয়। দ্রুতই ঘাটের এলাকা ওই অংশে ছুটে যায় পুলিশ। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হাতে থাকা কার্টুনটি ফেলে ভীড়ের মধ্য মিশে যান তিনি। অনেক চেষ্টা করেও ওই ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপর যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া মেনে কার্টুনটিকে জব্দ করে পুলিশ। কার্টুনটিকে খুলে সেটির মধ্যে ২৪টি মোবাইল ফোন সেট পাওয়া যায়। সেটগুলো বিভিন্ন দামি ব্রান্ডের। দাম ২০ হাজার থেকে ৩২ হাজার পর্যন্ত। কিন্তু ফোন সেটগুলো দেখে সেগুলো ব্যবহৃত সেট, তা স্পষ্টভাবেই বোঝা যাচ্ছিল।

এবার মোবাইল ফোন সেটগুলোর মালিককে খুঁজে পেতে উদ্যোগী হয় পুলিশ। কিন্তু শুরুতেই বিপত্তির মুখোমুখি। কিছু ফোন লক করা। কোনটির আবার ব্যাটারির চার্জ নেই। দু-একটিতে সিম আছে। কোনটিতে আবার সিম নেই। এজন্য প্রতিটি ফোনের মালিককে খুঁজে পেতে পুলিশকে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি ও কৌশল অবলম্বন করতে হয়। মালিকের সন্ধান পেলে তাঁর সাথে যোগাযোগ করে পুলিশ। এরপর মালিকের দেওয়া তথ্যের সাথে ফোন সেটের তথ্য মিলিয়ে এবং এ সংক্রান্তে থানায় অভিযোগ কিংবা জিডি করা হলে, সেগুলোর কপি দেখে প্রকৃত মালিকদের খুঁজে বের করে পুলিশ। মালিকদের তথ্যে দেখা যায়, কারও বাড়ি পিরোজপুর,কারও বাড়ি বাগেরহাট। কারও বাড়ি খুলনা, আবার কারও বাড়ি যশোর। কারও বাড়ি ঝিনাইদহ। এভাবে একে একে ২০ টি ফোনের প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

এরপর ওই ২০ জন প্রকৃত মালিকদের হাতে যথাযথ আইনী প্রক্রিয়া মেনে স্ব স্ব মোবাইল সেট ফিরিয়ে দেয় রাজবাড়ী জেলা পুলিশ। মোবাইল সেট ফেরত পাওয়াদের একজন ছিলেন যশোর জিলা স্কুলের শিক্ষক শরীফুল। প্রিয় মোবাইল ফোন সেটটি পুনরায় হাতে পেয়ে তিনি বিস্মিত ও আপ্লুত হয়ে বললেন,”বাংলাদেশ পুলিশ সত্যিই আজ জনগণের বন্ধু হয়েছে। আমার ফোনে সিম কার্ড ছিল না, তারপরও পুলিশ অনেক কষ্ট করে প্রযুক্তির সাহায্যে আমাকে খুঁজে বের করে আমার হাতে মোবাইল সেটটি ফেরত দিয়েছে। “
মোবাইল ফোন সেট ফেরত পাওয়া অন্যান্য প্রকৃত মালিকগণও নিজেদের ফোন ফেরত পেয়ে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ অশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
সর্বদাই জনগণের পাশে, বাংলাদেশ পুলিশ।
BANGLADESH POLICE MEDIA, PHQ
[12 JUN 2020]


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest