বাগেরহাটে দারিদ্রতার কারনে থমকে গেছে নীলমনির উচ্চশিক্ষা

প্রকাশিত: ২:৪১ অপরাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২০

বাগেরহাটে দারিদ্রতার কারনে থমকে গেছে নীলমনির উচ্চশিক্ষা
মোঃ সাগর মল্লিক বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটে দারিদ্রতার কারনে মেধাবী নীলমনির উচ্চশিক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।এবার এসএসিতে জিপিএ ৫ পেয়েও দুঃশ্চিন্তায় আছে বাগেরহাট সদরের গোমতি গ্রামের মেধাবী ছাত্র নীল মনি। বাবা দিন মজুর চরম অভাবের সংসার কোন প্রাইভেট ছাড়াই কষ্ট করে পড়াশোনা করতে হয়েছে নীল মনি মন্ডলের। অনেক সময় অর্ধহারে অনাহারে থেকে পড়াশোনা করতে হয়েছে। অভাবের মাঝেও কোন সময় স্কুল ফাকি দেয়নী, পড়া শুনায়ও ছিলো মেধা তালিকায় শীর্ষে। সব ক্লাসেই তার রোল ছিলো ১ পিএসসিতে এ, জেএসসি জিপিএ ৫ অর্জন করে পেয়েছেন সম্মাননা। অভাবকে জয় করে এবার এসএসসি পরীক্ষায় সেরা ফল অর্জন করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সে। নীল মনির স্বপ্ন সে বড় প্রকৌশলী হবে। বাগেরহাট সদরের কাড়াপাড় শরৎচন্দ্র মসাধ্যমিক দ্যিালয় থেকে এবারের এসএসসিতে বিজ্ঞান শাখা থেকে জিপিএ ৫ পেয়েে সে। কোন প্রাইভেট ছাড়াই পরিক্ষায় অংশ নিয়ে প্রতি বিষয়ে ৯০ এর উপরে নাম্বার পেয়ে ১১০০শ’ নম্বরের মধ্যে ১০১৫ নম্বর অর্জন করে মেধা তালিকায় শির্ষে রয়েছে। বাগেরহাট সদরের কাড়া গোমতি পাল পাড়া এলাকার দিন মজুর মধুসুদন মন্ডলের ছেলে নীল মনি। বাগেরহাট সদরের কাড়াপাড় শরৎচন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেন নীল মনি। দরিদ্র বাবার একমাত্র সন্তান নীলমনি,মা ভক্তি রানী মন্ডল। অন্ধের যষ্ঠি একমাত্র ছেলেকে নিয়ে মা বাবা দু,জনের বড় স্বপ্ন, ছেলে পরিক্ষায় ভালো ফল অর্জন করায় আশায় বুক বেধেছে বাবা মা দুজনেই। পড়ালেখা করে ছেলে ইঞ্জিনিয়ার হবে সব দুঃখ কষ্ট দুর হবে একদিন এমন নানান স্বপ্নে বিভোর নীল মনির পরিবার। নীল মনি ভালো ফল অর্জন করায় প্রতিবেশীরা যখন নীল মনির বাড়ী এসেছে নীল মনির খোঁজ নিতে, মায়ের চোখে মুখে তখন হতাশা আর দূঃশ্চিন্তার ছাপ। বাড়ীতে অতিথী এসেছে তাদের কি দিয়ে যতœ আত্তিক করবে, ঘরে তো কিছুই নেই। এক দিন কাজ হলে পাঁচ দিন বন্ধ থাকে। যা আয় তা দিয়ে নিজেদেরই পেট চলে না তো অতিথেয়তা রক্ষা করবে কি ভাবে। অথচ বাড়ীর পাশের অন্য ছেলে পাশ করেছে মাত্র, তাদের বাড়ীতে মিষ্টির ছড়া ছড়ি ছলছে। মা ভক্তি রানী, বাবা আর নীল মনি, সংসার বলতে এই, সম্বল বলতে বসত ঘরের এক চিলতে জমি তার উপর একটু মাথা গোজার ঠাই একখানা ঘর। ঘর খানি বাইরে থেকে মুটা মুটি ভালো দেখালেও নেই কোন আসবাব পত্র। নীল মনির বাবা একজন দিন মজুর। শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয় পিতার। শত দারিদ্রতা উপেক্ষা করে ছেলেকে এ পর্যন্ত্য খরচ যুগিয়েছে পিতা মদু সুদন মন্ডলে। এই চরম দারিদ্রতা ও আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে বর্তমানে ছেলের পড়া লেখা নিয়ে শঙ্কিত মা-বাবা দুজনেরই। কথা হয় বাবা মদু সুদন মন্ডলের সাথে তিনি বলেন, অভাবের সংসারে সারাদিন পরের বাড়ীতে কঠোর পরিশ্রম করি। কোন দিন কাজ হয় আবার কোন দিন হয় না শ্রমিকের কাজ করে যা পাই তা দিয়ে কোন রকম সংসারের খরচ এবং ছেলের লেখা পড়া চালাই। সে ভাবে ছেলেকে লেখাপড়ার খরচ দিতে পারি না।আমি দরিদ্র কিন্ত ছেলে আমার মেধাবি আর এ জন্য আমি যেটা পারিনি সে টায় সহযোগিতা করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। স্কুলের শিক্ষদের সহযোগীত্য়া ও ভালো ফল করেছে। তবে আমার ছেলে কে শেষ পর্যন্ত্য লেখা- পড়া করাতে পারবো কিনা তাই নিয়ে শংকায় আছি। কলেজে ভর্তি করতে কতগুলো টাকা লাগবে, তারপর আরো কত খরচ, বইখাতা পোক-অশাক কিভাবে যোগবো এত খরচ চিন্তায় ঘুম আসে না।ছল ছল চোখে আড়ষ্ঠ কন্ঠে কথা গলি বললেন নীল মনির বাবা। কাড়াপাড়া শরৎচন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আসাদুল কবির বলেন, দরিদ্র পরিবারের একমাদ্র সন্তান নীল মনি,বিদ্যালয়ের অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্র। সকল পরীক্ষাতেই প্রথম হত নীল মনি।আমরা বিদ্যালয়ের শিক্ষক মন্ডলী ও কে সার্বিক সহযোগীতা করেছি। জেএসসি, পিএসসিতে জিপিএ ৫ পেয়েছে,আমরা নীল মনির বাবাকে স্কুলের পক্ষ থেকে সম্মাননা দিয়েছি। এবার এসএসসি পরিক্ষায় মোট ১১০০ মার্কসের মধ্যে ১০১৫ পেয়ে স্কুলে মেধা তালিকায় শির্ষে রয়েছে। নীল মনি বলেন, আমি আরো ভাল লেখাপড়া করে প্রকৌশলী হয়ে দেশের সেবা করতে চাই। কিন্ত আমার বাবা দরিদ্র জানি না আমার স্বপ্ন র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্র্পুরণ হবে কি না। আমার বাবার পক্ষে কলেজে ভতিৃ ফিস যোগাতেই আমার বাবা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। আর ভবিষ্যতে আমার লেখাপড়ার খরচ কি যোগাবেন ঈশ^রই ভালো জানেন। হয়তো আমার ভবিষ্যত স্বপ্ন এই আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে স্বপ্ন ই থেকে যাবে। কেই বা হাত বাড়াবে, কেই বা আছে, আমার তো বড় কোন আতিœয় নাই যে সহযোগীতা করবে। এইচএসসিতে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন আমার মা- বাবা।(বি.দ্র. নীল মনিকে সাহায্য করতে চাইলে-০১৯১৪-৬০৫৯৩৮(নীল মনির বাবা)।

মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest