রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, ঝালকাঠি:
আজ থেকে প্রায় তিন বছর আগে বিএনপি’র একটি বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাবু অনাদি দাস । তিনি বিএনপির সকল প্রোগ্রামে থাকার চেষ্টা করতেন। এবং লোক জন নিয়েই থাকতেন । ওই প্রোগ্রামটি বিএনপিকে করতে দেয়নি পুলিশ। এক পর্যায়ে সবাই যার যার মত চলে গেলেন। অনাদি বাবুও চলে গেলেন। পথের মধ্যে অনাদি বাবুকে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হতে হয় ।তার মটর সাইকেল জ্বালিয়ে দেয়া হয়। আঘাত করা হয় তার বিভিন্ন শরীরের স্থানে । একটি আঘাত তার ঘাড়ের উপর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিছুদিন পরে ঐ আঘাতটি তার ঘারকে এদিক ওদিক ফিরতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় । এই চিকিৎসা তিনি দেশের বাহিরেও করিয়েছেন। কিন্তু দিন দিন অবনতি ছাড়া উন্নতি হয়নি ।একপর্যায়ে ধীরে ধীরে তার সকল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে পড়ে । বাকরুদ্ধও হয়ে যান তিনি ।আজ থেকে আট দশ মাস আগে তিনি কারো সাহায্য নিয়ে দুয়েক পা হেটে চেয়ার এসে বসতে পারতেন । কিন্তু কথা বলতে পারতেন না । সবাইকে তিনি চিনতে পেরেছেন । বিএনপির নেতা কর্মীদের দেখে কেঁদে দিতেন । নেতা কর্মীদের কথাগুলো তিনি শুনেতেন কিন্তু তার কথাগুলো একটি কাগজে লিখে উত্তর দেন। রাজনৈতিক কারণে তার সাথে নেতা কর্মীদের যোগাযোগ একটু বেশি ছিল। ঝালকাঠির তার সমসাময়িক যারা ঠিকাদার বন্ধু ছিল তারা কিন্তু বিএনপিকে ফেলে চলে গেছেন। তিনি দলীয় মনোনয়নে ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র প্রার্থী ছিলেন। সুনামের সহিত দুইবার তার এলাকায় কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। যারা বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত অনাদি বাবুকে একজন ভালো মানুষ হিসাবে সবাই চেনে। এ ছাড়া অন্য কিছু বলার লোক খুব কমই আছে। তিনি ধানের শীষের স্বপক্ষের একজন বিশ্বস্ত নির্বাচনীয় মেকার। স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম লিটন জানান, “গতকাল আমরা দাদাকে দেখতে গিয়েছিলাম। যে অবস্থায় তাকে দেখেছি তা বর্ণনা করা যায় না। তাকে এখন রাইস টিউব পড়ানো হয়েছে। নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তার সাথে অনেকবার কথা রাজনৈতিক সাহায্য সহযোগীতা দিয়েছেন । কিন্তু আমরা উনার জন্য কি করতে পেরেছি ? কতটুকুই বা খোঁজখবর নিতে পেরেছি? আসলে রাজনীতি কখনো অসহায়ত্ব নিয়ে ভাবে না। রাজনীতি সব সময় বর্তমান নিয়ে চিন্তা করে। অনাদি দাস তার একটা দৃষ্টান্ত।
তাকে দেখে আমিও চিন্তিত। আল্লাহ না করুক এরকমের যদি আমার পরিস্থিতি হয় তাহলে হয়তো এর চেয়েও করুন পরিস্থিতি ভোগ করতে হবে। আমি সবার কাছে আকুল আবেদন করছি দাদার জন্য সবাই একটু অন্তত দোয়া করবেন।”
অনাদি বাবুর জন্য বিএনপি’র ও সরকারী দলের মধ্যে অনেকই তার জন্য অনুতাপ করেছেন। এই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, ঠিকাদার ও সাবেক কমিশনার আজ মৃত্যুর পথযাত্রী।