শেবাচিমে চিকিৎসক লাঞ্চিত:ডাঃ মাসুদ ও ডাঃ মাহফুজের নিকট জিম্মী মেডিসিন ওয়ার্ড

প্রকাশিত: ১১:৩৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০২০

শেবাচিমে চিকিৎসক লাঞ্চিত:ডাঃ মাসুদ ও ডাঃ মাহফুজের নিকট জিম্মী মেডিসিন ওয়ার্ড

বরিশাল অফিস ॥ নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে রোগীদের পরীক্ষা-নীরিক্ষায় করাতে বাধ্য করায় শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুই চিকিৎসক শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। লাঞ্ছিত চিকিৎসকরা হচ্ছেন, মেডিসিন ইউনিট-৩ এর রেজিস্টার ডা. মাহফুজ ও মেডিসিন ইউনিট-৪ এর রেজিস্টার ডা. মো. মাসুদ খান। তাদেরকে মঙ্গলবার চার তলায় ডা. মাসুদ খানকে লাঞ্ছিত করা হয়।

এই দুই চিকিৎসক নগরীর চাদমারী এলাকায় একই ভবনে থাকেন। তাছাড়া ডা. মাসুদ খান ছাত্র জীবনে শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন বলেও প্রমান মিলেছে। অভিযোগ রয়েছে ওই দুই চিকিৎসক নগরীর বাংলা বাজার এলাকার পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মেডিকেলের সামনের মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিস সেন্টার এবং লাইফ সিটি সেন্টার থেকে পরীক্ষা-নীরিক্ষা না করালে রোগীদের রিপোর্ট দেখেন না। এমনকি ওই রিপোর্ট ছুড়ে ফেলেন এবং ছিড়ে ফেলেন। এমনকি ওই দুই ওয়ার্ডের নার্স থেকে শুরু করে আয়া-বুয়া এবং ব্রাদারদের ওই তিন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করানোর জন্য রোগীদের বলার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই দুই চিকিৎসক তাদের পোষাকৃত দালাল জানু, রানী, রিনা রেবা ,ফিরোজা,মিকাইল,নাজমা ও সেলিম এর মাধ্যমে রোগীদের নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করতে বাধ্য করছেন। বিষয়টি ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টরা জানতে পারেন। মঙ্গলবার ডা. মাসুদ খানের কক্ষে গিয়ে মাসুদ ও অপর চিকিৎসক মাহফুজকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। কেন রোগীদের তাদের নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হবে এ নিয়ে তাদের সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এর এক পর্যায়ে ওই দুই চিকিৎসক ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সাথে খারাপ আচরন করেন। এমনকি তাদেরকে গালাগালও করা হয়। তাদের গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করেন। এ সময় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ও উপস্থিত জনতা ওই দুই চিকিৎসককে লাঞ্চিত করে।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই বিভাগে দায়িত্বরত একাধিক নার্স জানান, মেডিকেলে নিয়ম নেই কোন চিকিৎসক রোগীদের তার নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠাতে পারেন। কিন্তু ডা. মাসুদ ও ডা. মাহফুজ নার্স থেকে শুরু করে আয়া-বুয়াদের নির্দেশ দিয়েছেন তাদের নির্ধারিত ওই তিন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে পরীক্ষা করানোর জন্য।এমনকি মেডিসুন -৪ এর সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার জাহিদুল ইসলাম এ বিষয়ে মাসুদ খানের কাছে জানতে চাইলে তাকেও মাসুদ খান লাঞ্চিত করেন। নির্ধারিত ঐ তিন ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে পরীক্ষা নিরীক্ষা না করালে তাদের পরীক্ষার রিপোর্ট দেখা হবে না বলে রোগীদের সাফ জানিয়ে দিতে বলেন ডাঃ মাসুদ খান ও মাহফুজ। আর তাদের নির্দেশ না মানলে ওই দুই চিকিৎসক নার্স ও আয়া-বুয়াদের সাথে অশালীন আচরন করেন। এ কারণে আমরাও তাদের নির্দেশ মানতে বাধ্য হই।

তারা আরো জানান, মঙ্গলবার যে ঘটনা ঘটেছে তা এ ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিয়েই। কারণ ওই ৩টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বড় অংকের টাকা পান ডা. মাসুদ ও ডা. মাহফুজ। ওই টাকার হিসেব জানতে চায় ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।এবং ঐ টাকা কি কাজে ব্যয় হয় তা জানতে চান তারা। এমনকি তাদের নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কোন রোগী পাঠানো যাবে না বলে তারা ওই দুই চিকিৎসককে সাফ জানিয়ে দেন। এ নিয়ে দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সাথে খারাপ আচরন করায় তারাসহ রোগীর লোকজন ওই দুই চিকিৎসককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এদিকে ইন্টার্ন ডাক্তারদের ডাঃ মাসুদ ও মাহফুজ জানিয়েছেন তোমরা যদি আমার কথার বাইরে যাও তাহলে পরীক্ষার মার্ক কমিয়ে দিবো এবং কত যে হয়রানী হবে তা সময় বলে দিবে। এছাড়া তোমাদের দ্কারা ডিউটি না করিয়ে ছাত্রদের দ্বারা ডিউটি করাবো।

এ ব্যাপারে ডা. মাসুদ খান বলেন, যা ঘটেছে তা আমাদের নিজস্ব। পরিচালক স্যার ঢাকায় আছেন। সে আসার পর নিজেরাই বসে সমাধান করবো। আপনাদের (সাংবাদিক) কাছে তথ্য দেয়া যাবে না।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest