আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো দিতে চায় হাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা।

প্রকাশিত: ৫:২৭ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১২, ২০২১

আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো দিতে চায় হাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা।

মোঃ হাবিবুর রহমান, হাবিপ্রবি প্রতিনিধি (দিনাজপুর) ঃ

করোনা মহামারির কারণে স্থগিত থাকা ও চলমান সেমিষ্টার এর পরীক্ষা নেওয়ার জন্য দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(হাবিপ্রবি) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা.মো.ফজলুল হক বরাবর আবেদনপত্র জমা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।

একই দাবি উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ ও ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেও।

গতকাল সোমবার (১১ জানুয়ারি ) বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর এ আবেদনপত্র জমা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা।

আবেদনপত্রে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, ” আমরা অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে,বিগত কয়েক বছরে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা সময় মত দিতে না পারায় দীর্ঘ সেশন জটের সম্মুখীন হয়ে পরেছি।কেননা আমরা আমাদের শিক্ষাবর্ষ ২০১৭ সালের এপ্রিলে শুরু করেছিলাম।করোনার সময়ে তাল মিলিয়ে আমরাও অনলাইন ক্লাস শুরু করেছি।তাই বর্তমান সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যখন আমাদের শিক্ষাবর্ষের রুটিন প্রকাশ করেছে সেখানে যে আমরা পিছিয়ে পরছি তা বলার অবকাশ রাখে না।

এমতাবস্থায় আগামী ৭ দিনের মধ্যে আমাদের ২০১৭ ব্যাচের চলমান সেমিষ্টার এর ফাইনাল পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করে সেশন জটের হুমকি থেকে আমাদের রক্ষা করার জন্য অনুরোধ করছি।”

এ ব্যাপারে ১৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমরান হোসাইন আকাশ বলেন,আমরা ২০১৭ সালে হাবিপ্রবি তে ভর্তি হই।সে হিসেবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে আমাদের অনার্স শেষ হওয়ার কথা ছিলো।
কিন্তু নানাবিধ কারণে আমরা এখনো ৩য় বর্ষ শেষ করতে পারিনি।আমরা যে অনেক পিছিয়ে আছি,সেটা প্রশাসন সহ সকলেই জানেন।এমন অবস্থায়,আমাদের পরীক্ষার ডেট না দিলে আমরা আরো পিছিয়ে পড়ছি।ক্যাম্পাস খুলার পর আবারো যদি একই সেমিস্টারের ক্লাস নেন,এতে করে আমরা দেড় বছর এর সেশনজট খাওয়ার হুমকির মুখে।

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮ ব্যাচের প্রায় সব অনুষদ ও বিভাগের লেভেল-২ ও সেমিস্টার -২ এর কোর্স শেষ হয়ে গেলেও করোনা বন্ধে পিছিয়ে যায় পরীক্ষা । খোজ নিয়ে দেখা যায় ১৯ ব্যাচ এরও কিছু অনুষদ ও বিভাগের লেভেল-১ সে- ২ এর পরীক্ষা সমাপ্ত হয়নি।

পরীক্ষার দাবিতে ১৮ ব্যাচের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মেরাজ বলেন, ৩ বছরে আমাদের ৬ টি সেমিস্টার হওয়ার কথা থাকলে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে মাত্র ৩ টি সেমিস্টারের। করোনার কারনে আটকে যায় লেভেল -২ সে- ২ এর পরীক্ষা। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পরীক্ষা নেওয়ার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে। চুড়ান্ত বর্ষের পরিক্ষার পাশাপাশি অন্যান্য যে সকল বর্ষের পরীক্ষা বাকি আছে তা দ্রত সময়ে বাস্তবায়নের কার্যকরি উদ্যোগ নেওয়ার আহব্বান জানাচ্ছি।

খোজ নিয়ে জানা যায়, করোনাকালীন বন্ধ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চালু থাকাকালেও বিভিন্ন আন্দোলন ও নানা কারনে প্রায় প্রতিটি অনুষদ ও বিভাগের সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা প্রায় এক থেকে দেড় বছরের সেশনজটে রয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা.মো.ফজলুল হক বলেন,”আমরা আপাতত লেভেল -৪ সেমিস্টার-২ এর শিক্ষার্থীরা যেন বিসিএসসহ অন্যান্য চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের পরীক্ষা নিচ্ছি কিন্তু ১৭ ব্যাচ এখন লেভেল -৩ সে-১ বা লে-৩ সে-২ তে থাকায় গত একাডেমিক কাউন্সিলে অন্যান্য ব্যাচের পরিক্ষার বিষয়টি উত্থাপিত হয় নি।পরীক্ষা নিতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু নিয়ম কানুন আছে,এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত একাডেমিক কাউন্সিলে নেয়া হয়।আমরা পরবর্তী একাডেমিক কাউন্সিলে এ বিষয়টি উত্থাপিত করবো।তবে এর আগে সংশ্লিষ্ট ডিন মহোদয় যারা আছেন,তারা যদি কোন কোন ডিপার্টমেন্ট পরীক্ষা নেয়ার জন্য উপযোগী তা উপাচার্য মহোদয় কে জানায় তাহলে উনি একাডেমিক কাউন্সিল ডেকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।”

সকল শিক্ষার্থীর দাবি একটাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেভাবে ১৬ ব্যাচের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে এভাবে সকল ব্যাচের পরীক্ষা দ্রুত নেওয়া হোক।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest