সিরিজ বোমা হামলায় বিএনপি জড়িত ছিল

প্রকাশিত: ৯:১৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৮, ২০২১

সিরিজ বোমা হামলায় বিএনপি জড়িত ছিল

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলা চালিয়েছিল। সিরিজ বোমা হামলায় বিএনপি জড়িত ছিল বলে অভিযোগ করে তিনি প্রশ্ন করে বলেন, তা না হলে কেন তারা নীরব ছিল?

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এই দেশের রাজনীতিতে ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড, ১৭ আগস্টের সিরিজ বোমা হামলা ও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা অভিন্ন ষড়যন্ত্রের অংশ। এগুলোর মাস্টারমাইন্ড বিএনপি। সব ঘটনায় প্রমাণ হয় বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হচ্ছে তারা। তৎকালীন বিএনপি সরকার সিরিজ বোমা হামলাকারীদের সহায়তা করেছিল।

তিনি বলেন, দেশের মধ্যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে একযোগে সারা দেশে বোমা হামলা করে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীরা। যখন একযোগে সারা দেশে বোমা হামলা হয় তখন বিএনপি কেন নীরব ছিল। নিশ্চয়ই তারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলেই নীরব ছিল। বিএনপি এ সকল ঘটনার সঙ্গে জড়িত এই কথা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। এমনকি ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ডও বিএনপি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, একযোগে বোমা হামলার জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতি ও জনবল একদিনে জোগাড় করা হয়নি। তৎকালীন সরকার নীরব ছিল কেন? তারা এই ঘটনার আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা ও পৃষ্ঠপোষক। তারা এটা করেছিল ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। মুক্তচিন্তা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে মুছে দেওয়ার জন্য। তাদের কাছে রাষ্ট্র ও স্বাধীনতা কখনোই নিরাপদ ছিল না। এখনো নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৭ আগস্টের বোমা হামলা ছিল উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর শক্তি পরীক্ষা। একযোগে তারা শক্তি জানান দিয়েছিল। এর মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসে এ দেশে জঙ্গি কার্যক্রম। তখন সামনে এসেছিল বাংলা ভাই। রাজশাহীর একটি অংশ তার দখলেই ছিল। রাজশাহী শহরে প্রকাশ্যে মিছিল করেছিল তারা। এর ধারাবাহিকতায় অনেকগুলো বোমা হামলা হয়েছিল।

‘আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শিষ্টাচার ও সৌজন্যবোধ নেই’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব এ কথা বলেছেন কারণ আমি বলেছি বেগম জিয়ার জন্মদিন ছয় দিন। তার কাছে জানতে চাই, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছয় দিন জন্মদিবস কেন? আগে ছিল পাঁচটা। সর্বশেষ করোনা পরীক্ষার সময় দেখলাম আরেকটা। ফখরুল সাহেব এখানে শিষ্টাচার ও সৌজন্যতার বিরুদ্ধে কী করলাম? এসব জন্মদিবস আপনাদেরই সৃষ্টি। আওয়ামী লীগের সাজানো কিংবা বানানো কিছু নয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এবারও আপনারা জন্মদিবস পালন করেছেন। প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার মানসিকতা থেকে এখনো সরে যাননি। কেক কাটেননি, কিন্তু ফুলতো দিয়েছেন। মিলাদ মাহফিল করেছেন। মানে হলো ১৫ আগস্ট জন্মদিবস। আপনারা এটাই করবেন। শিষ্টাচার আমাদের শেখাতে আসবেন না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, একটি বিদেশি গণমাধ্যমে দেখলাম হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জাতিসংঘের কাছে জানিয়েছে যে, বাংলাদেশে অনেকে গুম হয়েছে। তাদের অনেককে এখনো পাওয়া যায়নি। এটা বাংলাদেশকে অপমান করার শামিল। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব জোসিকে সরকার গুম করেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। কিন্তু থলের বিড়াল বের হয়ে এসেছে। তিনি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন। অস্ত্র ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তাদের এ রকম গুমের অনেক সাজানো নাটক রয়েছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি জাহানারা বেগম, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest