আমি কখনোই অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেনি: বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান

প্রকাশিত: ৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২১

আমি কখনোই অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেনি: বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান

সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে মঙ্গলবার রাতে। কিন্তু এ কমিটি নিয়ে ক্ষুব্দ হন সিলেট বিএনপির তুখোড় নেতা ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক এডভোকেট শামসুজ্জামান জামান। ক্ষুব্দ জামান গতকাল বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। সিলেট নগরীর মিরাবাজারের একটি অফিসে প্রেস ব্রিফিং করে এ পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

এসয় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমার বলতে কষ্ট লাগে এই দল যখন কাদিয়ানীর মত সংখ্যালঘু ছিল। তখন আমরা এই দলকে তিল তিল করে গড়ে তুলেছি। এবং সমস্ত রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করে আমরা এই দলকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলেছি।
সাংবাদিকদের তিনি আরও বলেন, আমি ১৯৮৫ সাল থেকে ছাত্রদল দিয়ে ছাত্র রাজনীতি শুরু করি। আমি জাসদ, আওয়ামীলীগ, জামাত কিংবা ন্যাপ থেকে আসিনি। উড়ে এসে জুড়ে বসা কোন লোক নই। পরে এক লিখিত বক্তব্য পড়ে শুনান বিএনপি থেকে পদত্যাগকারী শামসুজ্জামান জামান।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বরাবরে লিখিত এ পদত্যাগ পত্রে জামান উল্লেখ করেন, ১৯৮৫ সাল থেকে ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমে বিএনপিতে যুক্ত হই। বিএনপির দুর্দিনে এই দলকে প্রতিষ্টা করতে জীবনের সোনালী সময় সাধ্যমত সময় ও অর্থ ব্যয় করেছি। সিমাহীন প্রতিকূলতার মাঝে দলকে প্রতিষ্টা করতে কাজ করেছি। আমি কখনোই হালুয়া রুটির বাগিদার হয়নি। কিংবা অনৈতিক সুবিধা গ্রহন করিনি।

দলের মহাসচিবকে উল্লেখ করে চিঠিতে তিনি আরো লিখেন- আপনার মত বিজ্ঞ মানুষের স্মরণশক্তি যদি মহান আল্লাহ সঠিক রাখেন তাহলে বিগত আন্দোলন সংগ্রামে আমার ও আমার সহযোদ্ধাদের ভূমিকা আপনার মনে থাকার কথা। কিন্তু অত্যন্ত দুখ ও পরিতাপের বিষয় হলো গতকাল (১৭ আগস্ট) সিলেট জেলা ও মহানগর সেচ্ছাসেবক দলের কমিটি ঘোষিত হয়েছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ সেচ্ছাসেবক সম্পাদক হওয়া সত্ত্বেও আমার জেলা ও মহানগর কমিটি ঘোষিত হল আমার, মতামত ও পরামর্শ উপেক্ষা করে। সর্বোপরি যেসব সহযোদ্ধা আন্দোলন করতে যেয়ে জীবন বাজি রেখেছিল, গুলিবিদ্ধ হয়েছিল, এমনকি সমাজ, সংসার থেকে বিতাড়িত হয়েছিল, তাদেরকে চরমভাবে উপেক্ষা করে উপহাসের পাত্রে পরিণত হলো।

বুধবার রাতে সিলেট নগরীর মিরাবাজারের একটি অফিসে এ প্রেসব্রিফিংকালে উপস্থিত ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সহ ক্ষুদ্র ও ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন লস্কর, ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, মওদুদুল হক, আব্দুর রকিব তুহিন, প্রভাষক রায়হান উদ্দিন, ফয়েজ আহমদ দৌলত প্রমুখ।

মহাসচিব বরাবরে লেখ ওই চিঠিতে তিনি আরো উল্লেখ করেন, আজকে অত্যন্ত ব্যতিত চিত্তে জানতে ইচ্ছে করে আপনার দলে নেতৃত্ব পেতে হলে যোগ্যতার মাপকাঠিটা কি? যারা দেশ ও দলকে ভালবাসে, জীবন বাজি রাখে, দুর্দিনে যারা বিশ্বস্থ থাকে, বন্ধুকের বেয়নেটের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়ায় তাদের পাওয়া উচিত, নাকি-লবিং-তদবির অথবা বিশেষ ব্যবস্থায় সবকিছু হাসিল করে তাদের পাওয়া উচিত?

যে দলটাকে ভালবাসে তিল তিল করে বিনির্মাণ করেছিলাম আজকে সেই দলে আমরাই অনাহুত। আপনারা প্রায়শই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলেন, রাষ্ট্রের কাছে ন্যায় ইনসাফের দাবি তুলেন কিন্তু নিজের অন্তর আত্মকে একবার জিজ্ঞেস করে দেখবেন কি- আপনারা আপনাদের নিজেদের কর্মীদের ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন কিনা?

বিগত ৩৬টি বছর আপনার দলকে নিরলস সেবা দিয়ে গেছি। হযরত শাহজালাল (রহ.) এর পূণ্যভূমির মানুষ জানে- আমরা কতটা দুঃখের সাগর পাড়ি দিয়েছি। আজকে আমার সহযোদ্ধাদের প্রতি যে অন্যায় আচরণ আপনারা প্রদর্শন করলেন অবশ্যই ‘প্রকৃতি এর প্রতিবিধান করবে বলে আমার বিঃশ্বাস। আমার জীবনের ৩৬টি বছর আপনাদেরকে সাদকা হিসেবে দান করে দিলাম বলে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এ নেতা।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest