ঢাকা ৬ আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২২ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২১
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনিবুর রহমানের সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার (১৮ আগস্ট) দিবাগত রাত থেকে বরিশালের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক ও নৌ যোগাযোগ বিছিন্ন করে দিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। এতে চরম দুভোর্গে পরেছেন যাত্রী ও সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান।
পুলিশ কমিশনার জানান, আজ সকালে নথুল্লাবাদ ও রুপাতলী বাস টামিনাল এবং লঞ্চঘাট শ্রমিকরা সকল রুটের বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়। শ্রমিকদের হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে বিপাকে পরেন সাধারণ যাত্রী ও নগরবাসী। এছাড়া, ওই ঘটনায় সিটি মেয়র সুস্থ থাকলেও বেশ কয়েকজন এখনো গুরুতর অবস্থায় শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। নগর জুড়ে র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরক্ত সদস্য মোতায়েন করা হলেও চলছে না তেমন কোনো যানবাহন। পুরো বরিশাল জুড়ে থমথমে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, সিটি করপোরেশনের আবর্জনা পরিবহনের গাড়ি দিয়ে সদর উপজেলা সংলগ্ন প্রায় এক কিলোমিটার বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের কয়েকটি স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়েছে। এতে ওই সড়ক দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি ও মহানগর যুবলীগের সদস্য মমিন উদ্দিন কালু এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রাতে আনসার সদস্যদের গুলিতে এবং পুলিশের লাঠিচার্জে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে অভ্যন্তরীণসহ দূরপাল্লার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ নগরীর অবৈধ ব্যানার-বিলবোর্ড অপসারণ চলছিল। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিসিসি কর্মীরা উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের বিলবোর্ড অপসারণ করতে গেলে তাদের বাধা দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। একপর্যায়ে তিনি বিসিসি কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং সরকারি কাজে বাধা দেন। এ নিয়ে বাদানুবাদের একপর্যায়ে আনসার সদস্যরা আমাদের কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনিবুর রহমান বলেন, ‘রাতে ব্যানার অপসারণে বাধা দেওয়ায় কিছু লোক আমার ওপর চড়াও হয়। তখন তাদের সঙ্গে কয়েকজন লোক ছিলো। গেট আটকে আমি বাসার ওপরে উঠে যাই। হঠাৎ করে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৬০-৭০ জন লোক এখানে আসে। তারা তখন খুব উচ্চস্বরে আমার বৃদ্ধ বাবা-মায়ের নাম ধরে গালিগালাজ করছিলো। আমি নিচে নেমে একসময় কথা বলছিলাম। এসময় আমার পেছন দিকে লোকজন আসতে শুরু করে, তখন আমি বুঝতে পেরেছি যে আমাকে ঘিরে ধরা হচ্ছে। তখন আনসার সদস্যদের ইশারা দিলে তারা আমার কাছে চলে আসে। আনসাররা বাঁশি বাজালেও যখন তারা সরছিলো না তখন আনসার সদস্যরা ফোর্স করছে। তখন যে যার মতো করে দৌড় দেয়।’
ইউএনও আরও বলেন, ‘আমার পক্ষ থেকে গুলি করার অর্ডার (ডেসপাসের অর্ডার) দেওয়া হয়নি, তবে আমার বাসার সামনে যখন আমাকে ঘিরে ধরা হবে তখন আনসার সদস্যরা তো আমাকে সেভ করার চেষ্টা করবে এটাই স্বাভাবিক।’
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST