ঝিকরগাছা রেলস্টেশনে টিকিট নিয়ে তেলেসমাতি, সর্ষের মধ্যেই ভুত(পর্ব ২)

প্রকাশিত: ৩:২৩ অপরাহ্ণ, মে ১২, ২০২২

ঝিকরগাছা রেলস্টেশনে টিকিট নিয়ে তেলেসমাতি, সর্ষের মধ্যেই ভুত(পর্ব ২)

স্টাফ রিপোর্টারঃ গত ৬ই মে তারিখ ঢাকা যাওয়ার জন্য আব্দুল খালেক JCG845 নং এ ২টি, JCG846 নং এ ২টি এবং JCG847 নং এ ২টি মোট ছয়টি টিকেট কেটেছেন ঝিকরগাছা রেলস্টেশনের কাউন্টার থেকে। অথচ রেলওয়ের নিয়ম অনুযায়ী একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট কাটতে পারেন। সেখানে ফোন নং দিয়েছেন ০১৭৩৪৫৮০৫৫৪, আই ডি নং ২৮১৬০৪৯৩০৪। যেহেতু এই ব্যক্তির নামে ৬টি টিকিট বরাদ্দ হয়েছে তাই সন্দেহর বশে তার তথ্য ধরে শুরু হয় অনুসন্ধান। আই ডি কার্ডের ঠিকানায় আব্দুল খালেক নামের কোনো মানুষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ফোন নং এ ফোন দিলে জানা যায় এই নাম্বারটি মাধব নামের একজনের। সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। আই ডি কার্ড এর নং দিয়ে তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায় এই কার্ড এর মালিকের নাম নাফিসা নওরিন অন্তরা।
একই তারিখে সৈয়দ নুরুল নামে JCG844 নংএ চারটি টিকেট কাটা হয়েছে। ফোন নং ০১৩১৯৯১৮১৭৫, আই ডি নং ৪১২২৩০৯৭৯৮৬৮৮। মোবাইল নংটিতে কয়েকবার ফোন দিলেও খোলা পাওয়া যায়নি।

১০মে ঢাকা যাওয়ার জন্য মনিরুল ইসলাম, পিতা অজের আলী এবং সুমন হোসেন পিতা মনিরুল, গ্রাম মোবারকপুর নামে দুটি টিকিট কাটা হয়েছে। কিন্তু সমগ্র মোবারকপুর গ্রামে খুজেও এই নামে কাউকে পাওয়া যায়নি।একই তারিখে শম্ভু দাস, বুলু দাস,কাঞ্চন দাসী এই তিনজনের আইডি কার্ড দিয়ে তিনটি টিকিট কাটা হয়েছে। অনুসন্ধানে ১১মে এই তিনজনকেই তাদের বাড়ি ঝিকরগাছাতে পাওয়া গেছে।
সন্দেহ এখন সত্যতাই রুপ নিয়েছে। যাদের অস্তিত্ব নেই বা যারা ঢাকা যায়নি তাদের নামে টিকেট কাটছে কে বা কারা। আনুসন্ধানে ইমদাদুল নামে একজনের নাম উঠে আসে। যার কাছে বেশি টাকা দিলে টিকেট পাওয়া যাচ্ছে। খোঁজ শুরু হয় কে এই ইমদাদুল? খোঁজ নিতে গিয়ে যে তথ্য সামনে আসে সেটি আরও চাঞ্চল্যকর। তাকে খুঁজতে ঝিকরগাছা রেলস্টেশনে গেলে স্টেশন মাস্টারের রুমে স্টেশন মাস্টার নাইমুর রহমানের সাথে এক টেবিলে বসে খোশগল্পে মত্ত অবস্থাতে ইমদাদুলকে আবিষ্কার করা হয়। সেখানে কি করছে, সে এই স্টেশনে কি দায়িত্বে আছে প্রশ্ন করলে ইমদাদুল জানায় টিকেট বুকিং সহকারী মেহেদী হাসান তাকে ব্যক্তিগতভাবে নিয়োগ দিয়ে স্টেশন তদারকির দায়িত্ব দিয়েছেন । তিনি সরকারের কোনো কর্মচারী নন, নেই কোনো নিয়োগপত্র, রেলের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই, পেশায় ছিলেন দর্জি অথচ এখন স্টেশনের চাবি থাকে এই ইমদাদুল এর কাছে। শুনতে অবাক লাগলো তার বেতন দেয় টিকিট বুকিং সহকারী নিজে।

স্টেশন মাস্টারকে ইমদাদুল এর বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, স্টেশনে কর্মচারী কম থাকায় ইমদাদুলকে রাখা হয়েছে। সরকারি কোনো নিয়ম বা অনুমতি নেয়া আছে কিনা এই প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান। টিকিট কালোবাজারির সাথে ইমদাদুল এর সম্পৃক্ততার কথা বললে তিনি জানান, প্রমাণ দেন তাহলে আমরা তাকে এখান থেকে বের করে দেবো।
(আগামীকাল শেষ পর্বে থাকবে কালোবাজারির সাথে সম্পৃক্তদের পরিচয়।)


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest