বরিশাল নদী বন্দর : কালোবাজারে টিকিট বিক্রির মুল হোতা মাইনুল ধরাছোঁয়ার বাইরে

প্রকাশিত: ২:১১ অপরাহ্ণ, জুলাই ৭, ২০২২

বরিশাল নদী বন্দর : কালোবাজারে টিকিট বিক্রির মুল হোতা মাইনুল ধরাছোঁয়ার বাইরে

বরিশাল ব্যুরো : ছাত্র হোক আর রাস্তার ফুটপাতের দোকানী; কেউই পার পায়না মহা আতঙ্ক ‘মাইনুলের খপ্পড় থেকে। বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র আওতাধীন পোর্টের কাচা বাজার ও চরকাউয়া যাত্রীছাউনি হতে স্পীডবোর্ড ঘাট পর্যন্ত সকল ফুটপাতের দোকান বসিয়ে এককালীন ও মাসিক মাসোয়ারা ভাড়া গ্রহন করেন মাইনুল। তিনি নিজেকে দাম্ভিকতার সাথে পরিচিত করে বলেন ‘ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের ক্ষমতা কম? তারাই ওঠেবসে আমার ঘাটে ‘ এছাড়াও টিকেট চেকার মাইনুলের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন,টিকেট কালোবাজারি সংশ্লিষ্টতা, ক্ষমতার অপব্যবহার, যাত্রীদের সাথে অসদাচরণ, বিআইডব্লিউটিএ’র আওতাধীন পোর্টের কাচা বাজার ও চরকাউয়া যাত্রীছাউনি হতে স্পীডবোর্ড ঘাট পর্যন্ত সকল ফুটপাতের দোকান থেকে প্রতি ৩০-৩৫ হাজার টাকা এডভান্স ও ভাড়া হিসেবে রোজ দোকান অনুযায়ী ভাড়া তোলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রযেছে। মাসিক ভাড়া বাবদ ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন মোবাইল মেকানিক বলেন ‘ আমার দোকান রাস্তার পাশে একটু ভাল পজিশনে রাখতে তাকে(মাইনুলকে) ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছি সাদ্দামের মাধ্যমে। মাইনুলের অবৈধ টাকার উৎস কাচাবাজরের চাদা, ফুটপাতের দোকানের অবৈধ চাদা উত্তোলন।

এদিকে ২৮ জুন বরিশাল নদী বন্দরে টিকিট কালোবাজারিসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালিয়ে নদী বন্দরের দ্বিতীয় টিকিট কাউন্টার থেকে ৮৬৩টি অবৈধ টিকিট জব্দ করা হয়। একই সঙ্গে কাউন্টারের হিসাবের খাতা জব্দ করে দুদকের টিম। অভিযোগ আছে- ওইসব টিকেট যাত্রীদের কাছে ফের বিক্রি করার জন্য রাখা হয়েছিল। অন্যদিকে, এক নম্বর কাউন্টারে বিক্রি হওয়া টিকেটের দামের চেয়ে বেশি টাকা পওয়া যায়। একই টিকেট একাধিকবার বিক্রি করায় বাড়তি টাকা আদায় করা হয়েছে বলে দুদক কর্মকর্তাদের ধারণা।

বরখাস্তরা হলেন- শুল্ক আদায়কারী মো. ফারুক সর্দার, মাসুদ হোসেন খান এবং মো. মনির হোসেন। অভিযোগ আছে- ওইসব টিকেট যাত্রীদের কাছে ফের বিক্রি করার জন্য রাখা হয়েছিল। অন্যদিকে, এক নম্বর কাউন্টারে বিক্রি হওয়া টিকেটের দামের চেয়ে বেশি টাকা পওয়া যায়। একই টিকেট একাধিকবার বিক্রি করায় বাড়তি টাকা আদায় করা হয়েছে বলে দুদক কর্মকর্তাদের ধারণা।

এ ব্যাপারে দুদকের বরিশাল অফিসের উপ-পরিচালক দেবব্রত মণ্ডল জানান, টিকিট কালোবাজারিসহ বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বরিশাল নদী বন্দরের টিকিট কাউন্টারে এ অভিযান চালানো হয়। এসময় বিপুল পরিমাণ অবৈধ টিকিট ও কাউন্টারের হিসেব খাতা জব্দ করা হলেও আটক হয়নি মাইনুল।

গত ২৫ মার্চ রাতে বরিশাল নদী বন্দরে প্রবেশ টিকিট নিয়ে নয়ছয়কে কেন্দ্র করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীকে কান ধরে ওঠবস ও মারধর ও উপরে চড়াও হয়ে হামলা ও অপমান, লাঞ্চিত করার মূল কারিগরও ছিলেন এই মাইনুল। ঘটনার রাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে কানধরে ওঠবস করা টিকিট চেকার মাইনুলের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে মাইনুল নিজেই সবার সম্মুখে স্বীকার করেছিল সে বন্দরের গেট থেকে দুই শিক্ষার্থীকে ধরে দোতলায় নিয়ে আসে। আর আহত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের দোতলায় নিয়ে মারধর, কারধরে উঠবসের পাশাপাশি পা ধরে মাফ চাইতেও বাধ্য করা হয়। এই ঘটনায় তিন কর্মচারী সাময়িক বরখাস্ত হলেও উসকানি দাতা মুল হোতা মাঈনুল কৌশলে পার পেয়ে জান।

অভিযুক্ত ও বিতর্কিত কর্মচারী মাইনুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি ব্যস্ত আছি বলে কল কেটে দেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কোন মন্তব্য করেন নাই।

বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক ওয়াকিল নেওয়াজ প্রতিবেদকে বলেন, “ দুদকের ঘটনায় ইতোমধ্যে বরিশাল বন্দর কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানকে বদলি করা হয়েছে। আর ৩ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, এর সাথে যে কেউ জড়িত থাকুক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest