তেঁতুলিয়ায় শিশুস্বর্গের উদ্যোগে স্কুল ছাত্রীদের স্যানিটারি প্যাড বিতরণ

প্রকাশিত: ৬:৩৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৩, ২০২২

তেঁতুলিয়ায় শিশুস্বর্গের উদ্যোগে স্কুল ছাত্রীদের স্যানিটারি প্যাড বিতরণ

জুলহাস উদ্দীন তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রতিনিধি :
তেঁতুলিয়ায় স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন শিশুস্বর্গের উদ্যোগে,মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদ এর সহযোগিতায় স্কুল ছাত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর ) উপজেলার তেঁতুলিয়া কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক ও কলেজের প্রায় ৫ শত শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে এই স্যানেটারি ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়।

বিতরণ অনুষ্ঠানে স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ ইমদাদুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা রাজিয়া, এসময় উপস্থিত ছিলেন ,শাহ নেওয়াজ আহমেদ রিজিয়নাল সেলস ম্যানেজার রংপুর ডিভিশন( নগদ), মতিউর চৌধুরী রুশৌ এরিয়া ম্যানেজার দিনাজপুর (নগদ), আবুল কাশেম ডাবলু টেরিটরি ম্যানেজার পঞ্চগড় (নগদ)
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মন্নি আক্তার বৃষ্টি,
রওশনারা মেমোরিয়াল শিশুস্বর্গ বিদ্যানিকেতনের শিক্ষকরা সহ প্রমূখ।

সভায় বক্তারা বলেন, প্রত্যেক নারীর পিরিয়ড স্বাভাবিক জীবনচক্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি নিয়ে এখনো আমাদের দেশের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি স্বাভাবিক নয়। তবে বর্তমানে সচেতনতা কিছুটা বাড়লেও দারিদ্রতার কারণে এখনও বহু নারী মানসম্মত স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতে পারছেন না। শিশুস্বর্গের এ কার্যক্রম সত্যিই প্রশংসাজনক।

শিক্ষার্থী মালিহা জেরিন বলেন শিশুস্বর্গের এমন আয়োজন সত্যিই অসাধারন। আমরা শিশুস্বর্গের মাধ্যমে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। ডাক্তার মুন্নি আক্তার বৃষ্টি আপার কাছ থেকে মেয়েদের পিরিয়ড হলে কি কি করণীয় তা জানতে পারলাম। একই কথা বলেন স্কুলটির দুই শিক্ষার্থী ফারজানা ইমাম রাফি ও সুমাইয়া আক্তার।

শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক কবীর আকন্দ বলেন, সীমান্ত জনপদের দরিদ্র পীড়িত পরিবারের মেয়েরা মাসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন নয়। সামাজিক লজ্জায় অনেক কিছু গোপন করে। সামান্য একটু অসচেতনতার কারণে শরীরে বড় বড় রোগের বাসা বাধে। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে বাল্য বিয়ে নিরুৎসাহিত করন এবং মাসিক স্বাস্থ্য সচেতনা কার্যক্রম বিভিন্ন বিদ্যালয়ে করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের বিদ্যালয়গুলোতে মেয়েদের সুবিধার জন্য।নেপকিন ভেন্ডিং মেশিন প্রদান করা হবে।

কবির আকন্দ আরও বলেন, ‘ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮’ অনুযায়ী, দেশে মাসিকের সময় ৪৩ শতাংশ কিশোরী ডিসপোজিবল প্যাড, ৫০ শতাংশ পুরোনো কাপড় এবং বাকিরা নতুন কাপড় ও তুলা ব্যবহার করে। ভালো মানের প্যাড ব্যবহারে একজন কিশোরীর মাসে ১শ টাকার মতো লাগে। গ্রাম অঞ্চলের অনেক নিম্ন আয়ের পরিবারের জন্য মানসম্মত স্যানিটারি প্যাড অনেকটাই দুষ্প্রাপ্য। এক্ষেত্রে শিশুস্বর্গের মাধ্যমে আমরা স্কুলে স্কুলে মাসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা ও নিরাপদ স্যানিটারি প্যাড পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ইতিমধ্যে আমরা এ উপজেলায় তিনটি বিদ্যালয়ে সহ¯্রাধিক নারী শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে সীমান্তের অবহেলিত, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে শিশুস্বর্গ প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের অর্থায়নে। সীমান্তের অবহেলিত, হতদরিদ্র পরিবারের শিশুদের শিক্ষাবৃত্তি, শিক্ষা উপকরণসহ শীতবস্ত্র, ঈদবস্ত্র, বেকার যুবক, নারীদের কর্মসংস্থান তৈরি করে আসছে স্বেচ্ছাসেবী এ শিশুস্বর্গ ফাউন্ডেশন।


alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest