নওগাঁ’র মহাদেবপুরে মাটি ছাড়াই অভিনব কোকো ডাষ্ট প্লাষ্টিক ট্রে’তে সবজি চারা উৎপাদন করে সফলতা অর্জন করেছেন এক নার্সারী মালিক

প্রকাশিত: ৪:৪৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২০

নওগাঁ’র মহাদেবপুরে মাটি ছাড়াই অভিনব কোকো ডাষ্ট প্লাষ্টিক ট্রে’তে সবজি চারা উৎপাদন করে সফলতা অর্জন করেছেন এক নার্সারী মালিক

মোঃ ফিরোজ হোসেন নওগাঁ প্রতিনিধি নওগাঁ’র মহাদেবপুরে মাটি ছাড়াই অভিনব কোকো ডাষ্ট প্লাষ্টিক ট্রে’তে সবজি চারা উৎপাদন করে সফলতা অর্জন করেছেন এক নার্সারী মালিক এমদাদুল হক সুমন ঃ নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলায় কোকো ডাস্ট এবং প্লাস্টিক ট্রে ব্যবহারের মাধ্যমে মাটি ছাড়াই আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নত জাতের সবজির চারা উৎপাদন স্থানয়ি সবজিচাষীদের এক দিগন্ত খুলে দিয়েছে। মহাদেবপুর উপজেলা সদরের বালুকাপাড়া এলাকার ‘সরদার ফারমার্স হাব সবজি নার্সারি’র পরিচালক এসএম এমরান আলী মাটি ছাড়াই অভিনব পদ্ধতিতে সবজির চারা উৎপাদন করে সফল হয়েছেন। মাটির পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে কোকো ডাস্ট (নারিকেলের ছোবড়া’র ধুলা) দিয়ে এই পদ্ধতিতে নেট হাউজের ভিতরে চারা উৎপাদন করায় চারাগুলো মাটি ও বায়ুবাহিত রোগ থেকে রা পাচ্ছে। মহাদেবপুর সদর ইউনিয়নের শালগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা এসএম এমরান আলী। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী হলেও কৃষির উৎপাদন নিয়ে ভাবতেন সবসময়। কিভাবে আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নত জাতের সুস্থ্য-সবল সবজির চারা উৎপাদন করে সুলভ মূল্যে কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেয়া যায়। এক সময় সেই পদ্ধতিও তিনি পেয়ে যান। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার প্রযুক্তি সহায়তায় নানা পরিকল্পনা প্রয়োগ করেন কৃষিতে। এরপর শুরু করেন আধুনিক পদ্ধতিতে সবজির চারা উৎপাদন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে বর্তমানে তিনি সফলতার দ্বারপ্রান্তে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোকো ডাস্ট ব্যবহার করে কেঁচো সারের সমন্বয়ে মাটি ছাড়াই সবজির চারা উৎপাদন করা হচ্ছে প্লাস্টিক ‘ট্রে’ তে। এ প্রযুক্তিতে চারা পুরো শিকড় পেচিয়ে নেয়; এতে শিকড়ের কোন তি হয়না। এই চারা জমিতে লাগানোর পরপরই খাদ্য গ্রহণ শুরু করে। আধুনিক এ পদ্ধতিতে তৈরি হাউজের চারপাশে নেট দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। যেখানে পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রবেশ নিশ্চিত হয় এবং তিকারক পোকামাকড় থেকে সবজির চারাগুলো রা পায়। তাপ নিয়ন্ত্রণ ও ঝড়-বৃষ্টি থেকে চারাগুলো নিরাপদে রাখতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিশেষ পলিথিন। এসএম এমরান আলী বলেন, ‘মাটিতে চারা উৎপাদন করলে আবহাওয়ার কারণে চারা উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটতো। গত বছরের নভেম্বর মাসে সিনজেনটা ফাউন্ডেশনের ‘ফারমার্স হাব’-এর সহযোগিতায় প্রাথমিকভাবে দুই শতক জমিতে সবজি নার্সারি গড়ে তুলি। আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে গ্রিন হাউজের আদলে তৈরি করি নেট হাউজ। এতে অল্প খরচে পেঁপে, করলা, চাল কুমড়া, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, শসা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, টমেটো, লাউসহ বিভিন্ন সবজির চারা উৎপাদন করা হয়। এছাড়াও গোলাপ, গাধাঁ, অর্কিড, অ্যান্ধরিয়াম, চন্দ্র মল্লিকা ফুলের চারাও উৎপাদন করা যায়।’ ‘প্রচলিত পদ্ধতিতে একই জমিতে বার বার চারা উৎপাদন করায় জমিগুলো রোগ প্রতিরোধ মতা হারিয়ে ফেলছে। উৎপাদিত চারা আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগে। এতে লোকসান গুণতে হয় নার্সারি মালিকদের। সবজি উৎপাদনেও তির মুখে পড়ছেন কৃষকরা। অন্যদিকে আধুনিক এ পদ্ধতিতে অল্প খরচে সুস্থ-সবল চারা উৎপাদন করা যায়।’ সরদার ফারমার্স হাব সবজি নার্সারিতে বিভিন্ন সবজির চারা উৎপাদন কার্যক্রম অত্যন্ত সম্ভাবনাময়ী উল্লেখ করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন, ‘আধুনিক এ প্রযুক্তি কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে সবজি চাষিরা দারুণ ভাবে লাভবান হবেন। অপরদিকে মাটির উর্বরতা হ্রাস এবং রোগ বালাইয়ের কারণে সবজি উৎপাদনে যে চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে তা মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest