দিনাজপুর জেলাসহ ১৩টি উপজেলায় যত্রতত্র ইটভাটা স্থাপন হুমকির মূখে কৃষিজমি ও পরিবেশ

প্রকাশিত: ২:২৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯

দিনাজপুর জেলাসহ ১৩টি উপজেলায় যত্রতত্র ইটভাটা স্থাপন হুমকির মূখে কৃষিজমি ও পরিবেশ
দিনাজপুর থেকে সিদ্দিক হোসেন ॥ দিনাজপুর জেলাসহ ১৩টি উপজেলায় যত্রতত্র ইটভাটা স্থাপন হুমকির মুখে কৃষিজমি ও পরিবেশ । সরকারী নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে শত শত ইটভাটা। কাঠপোড়ানোর কালো ধোঁয়া ও কৃষি জমির টপসয়েল সংগ্রহের ফলে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। ফলে ১৩টি উপজেলায় হাজার হাজার একর আবাদি কৃষি জমি চাষাবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। জানা গেছে, দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলায় শত শত ইটভাটায় পুরোদমে ইট তৈরি হচ্ছে। সিংহভাগ ইটভাটায় গ্যাস ও কয়লার পরিবর্তে বছরে হাজার হাজার টন কাঠ পুড়ানো হয়। সব কটি ইটভাটা গড়ে উঠেছে আবাদি কৃষি জমির উপর। এতে আশঙ্কা রয়েছে হাজার হাজার একর আবাদি কৃষি জমির ফসল নষ্ট হওয়ার। পাশাপাশি আশঙ্কা ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণ ঘটছে। ফলে জনজীবন বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। ইটভাটার মালিকেরা প্রভাবশালী হওয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারছে না ভুক্ত ভোগী সাধারণ জনগণ। ইটভাটা স্থাপনে পরিবেশ অধিদপ্তর, বনবিভাগ কৃষি বিভাগের নিদেশনা অনুযায়ী হাইব্রিড হফম্যান, জিগ-জ্যাগ, ভার্টিক্যাল শ্যাফট কিলন বা বিএসটিআই পরীক্ষিত প্রযুক্তি সহ সরকারী অন্য দফতরের অনুমতি প্রয়োজন। সরেজমিনে দেখা গেছে, দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলায় এসব নিয়ম-নীতি অমান্য করে জেলা-উপজেলা প্রসাশনের এক শ্রেনীর অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ইটভাটা মালিকরা। বিভাগীয় পরিবেশ অধিদফতর দায়সারভাবে মাঝে-মধ্যে কয়েকটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করলেও জেলা-উপজেলা প্রশাসন রহস্যজনক কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছে। জানা যায়, অধিকাংশ ইটভাটার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ইট তৈরির উন্নত ও পরীক্ষিত কোনো সরঞ্জাম নেই বললেই চলে। স্থানীয় প্রশাসনের সূত্রে জানা যায়, গত ২০০৬ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর এক পরিপত্র জারি করে সরকার। পুনরায় ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পূর্বেও সনাতন পদ্ধতির ইটভাটার কোনো প্রত্যয়নপত্র ও ছাড়পত্র নবায়ন করা হবে না বলে সংশোধিত আরেকটি পরিপত্র জারি করা হয়। এমনকি একই সময়ে পূর্বের সনাতন পদ্ধতির ইটভাটাকে পরিবেশবান্ধব কমপ্রেসড ব্লক ইট বা অনুরূপ কোনো ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর করার নির্দেশনা প্রদান করে। জেলা পরিবেশ অধিদফতরের এক কর্মকর্তা জানান, সরকারী বিধিমালা অনুসারে পরিবেশ ও আইন বিভাগের ছাড়পত্র এবং প্রত্যয়নপত্র ব্যতিরেকে কেই কোনো ইটভাটা স্থাপন কিংবা পরিচালনা করলে তা দন্ডনীয় অপরাধ। পরিবেশ অধিদফরের সহকারী পরিচালক জানান, দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে মাত্র কয়েকটি অনুমোদিত ইটভাটা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, বাকিগুলো বা অবৈধভাবে স্থাপিত ও সরকারী বিধিমালাকে তোয়াক্কা না করা ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এব্যাপারে বন ও পরিবেশ মন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest