কুড়িগ্রামে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায়।। একই পরিবারের ৪ ভাইসহ ৮জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

প্রকাশিত: ৮:৪৪ অপরাহ্ণ, মে ৯, ২০২২

কুড়িগ্রামে চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার রায়।।  একই পরিবারের ৪ ভাইসহ ৮জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

সাইফুর রহমান শামীম,, কুড়িগ্রাম।। কুড়িগ্রামে যুবক হত্যার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় একই পরিবারের ৪ ভাইসহ ৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালত। আজ সোমবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় দেন বিজ্ঞ বিচারক আব্দুল মান্নান।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের কাঁচকোল এলাকার বাসিন্দা মোখলেছুর রহমানের ছেলে মুদি দোকানদার নুরনবীর সাথে সড়কটারী গ্রামের বাসিন্দা খেতু শেখের ছেলে মোসলেম উদ্দিনের গম ক্ষেতে পানি দেওয়া-নেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। এরই জের ধরে প্রতিপক্ষ মোসলেম উদ্দিনের লোকজন নুরুন্নবীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং ভবিষ্যতে তাকে পৃথিবী থেকে বিদায় করে দেয়ার হুমকি দেয়। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে গ্রামে সালিশ বৈঠক বসে এবং বৈঠকে মোসলেম উদ্দিন ও তার ছোট ভাই রাশেদকে দোষী সাব্যস্ত করে বিরোধ নিষ্পত্তি করা হয়। এরপর থেকে নুরনবীর সাথে রাশেদের গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্বের সুবাদে রাশেদ প্রায় দিন নুরনবীর মুদি দোকানে এক সাথে রাত্রি যাপন করতো।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৪ সালের ২২ জানুয়ারি রাতে রাশেদসহ নুরনবী তার মুদি দোকানে রাত্রি যাপন করে। পরদিন সকালে মুদি দোকান থেকে গলায় মাফলার পেঁচানো অবস্থায় নুরুন্নবীর লাশ উদ্ধার করে স্বজনরা। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নুরনবীর পিতা মোখলেছুর রহমান বাদী হয়ে চিলমারী মডেল থানায় ৯ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
এরপর আদালত চার্জগঠন শেষে বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেন এবং পর্যাক্রমে ৪৪ জন সাক্ষী আদালতে তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। দীর্ঘ ১৮ বছর চাঞ্চল্যকর এ মামলার কার্যক্রম শেষে জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মান্নান আজ ৯ মে সোমবার দুপুরে তার জনাকীর্ণ আদালতে অভিযুক্ত ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন হলেন, রাশেদ মিয়া (২২), মকবুল হোসেন (৩৫), তছলিম উদ্দিন (৩২), মোসলেম উদ্দিন সকলের পিতা খেতু শেখ। চাঁন মিয়া (৪০) পিতা মৃত: ফুলুদ্দী। আব্দুল কাদের (২৫) পিতা-দারাজ উদ্দিন। মিন্টু মিয়া (২৩) পিতা মতিয়ার রহমান। মোনাল উদ্দিন (২৫) পিতা-সেকেন্দার আলী এবং নুরুমিয়া, পিতা-মৃত: ওসমান আলী। এদের মধ্যে চাঁন মিয়া মৃত্যুবরণ করেছেন।
চাঞ্চল্যকর এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন, পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড: এসএম আব্রাহাম লিংকন এবং আসামী পক্ষের আইনজীবি ছিলেন, অ্যাড:আমজাদ হোসেন ও শামছুদ্দোহা রুবেল।


alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest