ঢাকা ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮ ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:৫২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৬, ২০২২
রাবি প্রতিনিধি:
আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের স্মরণে এ দিবসটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিভিন্ন আয়োজন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে উদযাপন করা হয়েছে।
এদিন ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে প্রশাসন ভবনসহ অন্যান্য ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার সকাল সোয়া শহীদ মিনার, এরপর তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে এবং বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীর, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. অবায়দুর রহমান প্রামানিক, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডেসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, প্রতিষ্ঠান, শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ, সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রভৃতি পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
সকাল পৌনে নয়টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলে খেলাধুলা ও সাড়ে নয়টায় শেখ রাসেল মডেল স্কুল মাঠে স্কুলের আনন্দ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল দশটায় সাবাস বাংলাদেশ চত্বরে বিএনসিসি, রোভার স্কাউট, রেঞ্জারের প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য এই প্যারেড পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। এসময় উপ-উপাচার্যবৃন্দ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। সকাল সাড়ে দশটায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় স্কুল শিক্ষার্থীদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা।
বেলা পৌঁনে এগারোটায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে স্মৃতিচারণ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা প্রদান এবং আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপাচার্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শুভেচ্ছা জানান ও সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট উপহার দেন। আলোচনায় আলোচক ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক।
আলোচক মফিদুল হক বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুধু ভূখণ্ড বা জাতিসত্বার স্বাধীনতার জন্য ছিল না। তাতে সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির স্পৃহা অন্যতম চালিকাশক্তি ছিল। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বিশ্বের নানাপ্রান্তে অভূতপূর্ব সাড়া জাগিয়েছিলো। তিনি মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ৫০ বছর পেরিয়ে বিশ্ব বাংলাদেশকে কীভাবে মূল্যায়িত করেছে তাও উল্লেখ করেন।
উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আজ তাঁর কন্যার কুশলী নেতৃত্বে জাতি এগিয়ে যাচ্ছে, দেশ আজ উন্নয়নের এক বিষ্ময়কর অগ্রযাত্রায় ধাবিত হচ্ছে। এ কারণে শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানান। কিন্তু স্বাধীনতার বিরোধী অপশক্তি আজ যে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে তাতে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্যও সকলকে সচেতন হতে আহ্বান জানান।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, আমরা যখন আজ জাতির বিজয় উদযাপন করছি তখন দেশ বিরোধ অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। আমাদের বিজয়কে সুসংগত করতে তাদেরকে প্রতিহত করার জন্য সবাইকে একাত্ম হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি তাঁর বক্তব্যে বলেন, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। আজ তাঁর কন্যা আমাদের এনে দিয়েছেন সমৃদ্ধি, অর্থনৈতিক মুক্তি। সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার প্রফেসর মো. আবদুস সালাম। অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলামসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, দিবসের প্রথম প্রহরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা। সকাল এগারোটায় বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, রাবি ইউনিট কমান্ড, রাবি অফিসার সমিতি এবং সহায়ক কর্মচারী সমিতি, পরিবহন টেকনিক্যাল কর্মচারী সমিতি ও সাধারণ কর্মচারী ইউনিয়ন নিজ নিজ উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বাদ জুমআ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআন খানি ও মিলাদ মাহফিল এবং সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST