চিতলমারীতে বিশুদ্ধ পানি সংকট, অনুমোদনহীন বোতলজাত পানি বিক্রি

প্রকাশিত: ৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ১৪, ২০২০

চিতলমারীতে বিশুদ্ধ পানি সংকট, অনুমোদনহীন বোতলজাত পানি বিক্রি
মোঃ সাগর মল্লিক বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ বাগেরহাটের চিতলমারীতে বিগত কয়েক বছর ধরে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট চলছে। এ উপজেলায় পানির সংকট দূর করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি ভাবে কয়েকটি প্রকল্পগ্রহণ করা হয়। ওই সব প্রকল্পের বেশীর স্থাপনা দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে একাধিক পানি ব্যবসায়ী চক্র। তাদের মানহীন ও বিএসটিআই’র অনুমোদন ছাড়া বোতলজাত পানিতে বাজার এখন সয়লাব। প্রতিদিন বাজারজাত হচ্ছে কয়েক হাজার বোতল পানি। ওই পানি কতটা নিরাপদ তা নিয়েও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত এই পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। জানা গেছে, এ উপজেলায় সুপেয় পানির সংকট নিত্য দিনের সমস্যা। বিশুদ্ধ পানীয় জল ও ব্যবহার্য পানির তীব্র সংকটে মানুষ এখন দিশাহারা। এছাড়া এলাকার বেশিরভাগ নদী-খাল ও পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় কোথাও কোথাও গোসলের পানিও মিলছে না। চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব পরিতোষ চক্রবর্তী জানান, এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য চরবানিয়ারী ও চিতলমারী ইউনিয়নে হাই-সাওয়া নামে দুটি পাম্প রয়েছে। তবে পাম্প ২টি এখন অকেজো হয়ে পড়ে আছে। স্থানীয় জনসাধারণ ও বিভিন্ন এনজিওর উদ্যোগে পন্ডস স্যান্ড ফিল্টার (পিএসএফ), রেইন ওয়াটার হার্বেস্টিং (আরডব্লিউএইচ) বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য সহায়তা করলেও তার পরিমান সীমিত। যে সব পুকুরে পিএসএফ স্থাপন করা হয়েছে, তার অধিকাংশ পুকুরে বর্তমানে পানি কম থাকায় এর সুফল পাচ্ছে না সাধারণ জনগণ। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মাটির প্রায় ৮০০ ফুট গভীর ভেদ করে বালুর যে স্তর পাওয়া যাচ্ছে তাতে লবণাক্ততা বেশি। মাটির নিচে সুপেয় পানির আধার পেতে কষ্ট হয়। নলকূপের পানিতে মাত্রারিক্ত আর্সেনিক। তাই উপজেলা পরিষদ চত্বরের পুকুরসহ অন্যান্য পুকুরের পানি পান করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। শুকনো মৌসুম হওয়ায় এসব পুকুরের পানি শুকিয়ে অনেকটা তলদেশে চলে গেছে। এ পরিস্থিতিতে সৃষ্টি হয়েছে একাধিক পানি ব্যবসায়ী চক্র। তাদের মানহীন বোতলজাত পানিতে বাজার এখন সয়লাব। নেই বিএসটিআই’র অনুমোদন। ওই পানি কতটা নিরাপদ তা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। স্থানীয়রা জানান, চিতলমারী উপজেলার দীর্ঘদিনের পানির সংকটকে পুঁজি করে এলাকায় বেশ কয়েকটি ‘পানি সাপ্লাই কোম্পানি’ গড়ে উঠেছে। তারা ২০ লিটারের বোতলে পানি ভরে বাজারে অবাধে পানি বিক্রি করছে। প্রতি বোতল পানি ৩৫-৪০ টাকা। অনেকে আবার খোল ড্রামে এনে বাসায় বাসায় গিয়ে পানি বিক্রি করছে। তারা এই পানি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর বিজয় কুমার মণ্ডল জানান, পানির ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই বিএসটিআই’র সনদ নিতে হবে। তারাই এর গুণগত মান পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। তার জানামতে চিতলমারীতে অধিকাংশেরই বিএসটিআই’র কোন অনুমতি নেই। এতে তার কোন হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মারুফুল আলম বলেন, বিএসটিআই’র অনুমোদন ছাড়া পানি বিক্রির কোন নিয়ম নেই। যদি কেউ অনুমোদন ছাড়া পানির ব্যবসা করে তাহলে অবশ্যই আমরা আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করব।

মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest