করোনা ভাইরাসকে পুজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা চরা দামে বিক্রি করছে নিত্যপন্য!

প্রকাশিত: ১১:০১ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২১, ২০২০

করোনা ভাইরাসকে পুজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা চরা দামে বিক্রি করছে নিত্যপন্য!
মোঃ হাইরাজ বরগুনা প্রতিনিধি :-  করোনা ভাইরাজকে পুঁজি করে বরগুনার আমতলী ও তালতলী উপজেলার ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংঙ্কট তৈরি করে চরা দামে নিত্যপন্য বিক্রি করছে। গত দুই দিনে কেজি প্রতি চালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ৭ টাকা, পিয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুন। ৪০ টাকার পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। নিত্যপন্যে দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পরেছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ। তারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত নিত্যপন্যের দাম কমানের দাবী জানিয়েছেন। শুক্রবার বিকেলে আমতলী ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউএনও মনিরা পারভীন ও তালতলী ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভারপ্রাপ্ত ইউএনও বাজার পরিদর্শনে গেলে মুহুর্তের মধ্যে ৮০ টাকার পিয়াজ ৫০ টাকায় এবং ২৫ টাকার আলু ১৭ টাকায় নেমে আসে। জানাগেছে, করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে ছড়িয়ে পরার আশঙ্কায় অসাধু ব্যবসায়ীরা ওত পেতে বসে আছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী থেকে সড়ক পথে সকল যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার ঘোষনার পরপরই আমতলীর ও তালতলীর এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ীরা নড়েচড়ে বসেছেন। তারা বাজারে নিত্যপন্যে কৃত্রিম সংঙ্কট তৈরি করে মুল্য বৃদ্ধি করে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার আমতলী বাজারের অনেক মহাজনী আড়তে নিত্যপন্য চাল,ডাল, তেল, পিয়াজ, রোশন ও আলু পাওয়া যায়নি। তারা কৃত্রিম সঙ্কট তৈরির জন্য গুদাম থেকে অন্যত্র পন্য সরিয়ে নিয়েছে। ক্রেতারা আড়তে পন্য ক্রয় করতে গেলে তারা কোন পন্য নেই বলে জানিয়ে দেয়। কিছু আড়তে পন্য থাকলেও তারা তা চরা মুল্যে বিক্রি করছে। শুক্রবার সকালে আমতলী বাজার ঘুরে দেখাগেছে, প্রতি কেজি চালে প্রকার ভেদে ৭ থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। ৫০ কেজির এক বস্তা স্বর্ণা চাল বুধবার বিক্রি হয়েছে ১৬৫০ টাকা। ওই চাল শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ১৯৫০ টাকা। ১৮৫০ টাকার বালাম চাল ২১৮০ টাকা। ২২০০ টাকার মিনিকেট ২৫৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পিয়াজের দাম বেড়ে হয়েছে দ্বিগুন। বুধবার পিয়াজের কেজি ছিল ৪০ টাকা । শুক্রবার সকালে ওই পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। বুধবার আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা ওই আলু শুক্রবার সকালে বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। আলুতে কেজি প্রতি ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও রয়েছে কৃত্রিম সঙ্কট। এদিকে শুক্রবার বিকেলে আমতলী ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্টেট ইউএনও মনিরা পারভীন ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে বাজার পরিদর্শনে যান। খবর পেয়ে ব্যবসায়ীরা ৮০ টাকার পিয়াজ ৫০ টাকায় এবং ২৫ টাকার আলু ১৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পিয়াজের দাম কেজিতে ৩০ টাকা এবং আলু কেজিতে ৮ টাকা কমে গেছে। চাওড়া কাউনিয়া গ্রামের আল আমিন বলেন, তিন কেজি পিয়াজ ৮০ টাকা দামে এবং পাঁচ কেজি আলু ২৫ টাকা দরে ক্রয় করেছি। নজরুল ইসলাম বলেন, চালের দাম অনেক চরা। এক বস্তা স্বর্ণা চাল ১৯৫০ টাকায় ক্রয় করেছি। তিনি আরো বলেন অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্রুত এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাই। পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের সোহেল রানা বলেন, দুইদিনে গাজীপুর বাজারে চাল, ডাল, তেল, আলু ও পিয়াজসহ নিত্যপন্যের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রুত পন্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার দাবী করছি। কাউনিয়া গ্রামের খুচরা ব্যবসায়ী মোঃ আবদুস ছত্তার বলেন, চাল, ডাল, পিয়াজ ও আলুসহ সকল নিত্যপন্যের দাম বেড়েছে। এভাবে দাম বৃদ্ধি পেলে সাধারণ মানুূষের অনেক কষ্ট হবে। তিনি আরো বলেন, আমি যে দামে ক্রয় করি তার চেয়ে একটু ব্যবসা ধরে বিক্রি করি। বেশী দামে পন্য বিক্রি করি না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আড়ৎ ব্যবসায়ী বলেন, নিত্যপন্যের দাম আমরা বৃদ্ধি করি না। উত্তারাঞ্চলের মহাজনরাই পন্যের দাম বৃদ্ধি করেছে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা পারভীন বলেন, ব্যবসায়ীরা যাতে সিন্ডিকেট করে নিত্যপন্যের দাম বৃদ্ধি করতে না পারে সেদিকে সজাগ আছি। বাজার পরিদর্শন করে নিত্যপন্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে এসেছি। যদি কেউ পন্যের দাম বৃদ্ধি করতে চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ দিকে তালতলী উপজেলার ছোট বগী সহ কিছু হাটে অ-সাধু মুনাফা লোভি ব্যাবসায়ীরা চরা দামে নিত্য পন্য জিনিস চরা দামে বিক্রয় শুরু করে। এতে চরম বিপাকে পরেন তারা। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত মো. সেলিম মিঞা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে দুটি দোকানে ২ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যর বাজার নিয়ন্ত্রণে আসে। স্বস্তি নেমে আসে জনসাধারণের মাঝে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত মো. সেলিম মিঞা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে দুটি দোকানে ২ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্যর বাজার নিয়ন্ত্রণে আসে। স্বস্তি নেমে আসে জনসাধারণের মাঝে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ সেলিম মিঞা বলেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিত্যপন্যের দাম বৃদ্ধি করতে না পারে সেদিকে নজর রয়েছে । উপজেলার বিভিন্ন বাজার পরিদর্শন করে নিত্যপন্যের দাম জনসাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে এসেছি। যদি কেউ অবৈধ উপয়ে পন্যের দাম বৃদ্ধি করতে চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest