ঠাকুরগাঁওয়ের করোনা ভাইরাসের আইসোলেশনে রাখা মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু

প্রকাশিত: ১১:৪৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩০, ২০২০

ঠাকুরগাঁওয়ের করোনা ভাইরাসের আইসোলেশনে রাখা মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু

আব্দুল আউয়াল, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও শহরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের জন্য নির্ধারিত আইসোলেশন ইউনিটে শ্বাসকষ্ট ও হৃদযন্ত্রের জটিলতা নিয়ে এক মৃক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুর ৩টার দিকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নাদিরুল আজিজ চপল জানান, ওই মৃত ব্যক্তিকে ‘ভুল করে’ করোনাভাইরাস সংক্রমণের রোগীদের আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়েছিল। ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে আগের মধ্যরাতে ভর্তি হওয়ার পর ৬৫ বছর বয়সী মুক্তিযোদ্ধা মারা যান; যার বাড়ি সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মহেষপুর গ্রামে। এ হাসপাতালের সামনে ঠাকুরগাঁও টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ২০ শয্যা বিশিষ্ট করোনাভাইরাস সংক্রান্ত রোগীদের জন্য আইসোলেশন ইউনিট করা হয়েছে। এ ইউনিটে এখন পাঁচজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন; যাদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সোমবার দুপুরে সরেজমিনে হাসপাতলের জরুরি বিভাগে দেখা যায়, সোমবার রাত ২টা ১০ মিনিটে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এরপর প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে করোনাভাইরাসের আইসোলেশন ইউনিটে পাঠানো হয়। আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তির আধা ঘণ্টা পর মৃত্যু হয় তার। তবে দুপুর আড়াইটার দিকে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মাহফুজুর রহমান সরকার বলেন, রাতে ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধ ব্যক্তি মারা যান। তার হৃদযন্ত্রে সমস্যা ছিল। করোনাভাইরাসের আইসোলেশন ইউনিটে তাকে নেওয়া হয়নি, হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নাদিরুল আজিজ চপল জানান, ওই মৃত ব্যক্তি হৃদযন্ত্রের ও শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে রাত ২টা ১০ মিনিটে ভর্তি হন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে এককভাবে হাসপাতালের ওয়ার্ডে আইসোলেটেড করে রাখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ভুলবশত তাকে করোনাভাইরাসের আইসোলেশনে ইউনিটে নেওয়া হয়। আইসোলেশন ইউনিটে রাত ৩টার দিকে মারা যান তিনি। তার দাবি-বৃদ্ধ ব্যক্তি স্বাভাবিকভাবেই মারা গেছেন; তারপর স্বজনরা লাশ নিয়ে যায়। কারোনাভাইরাসের সাথে উনার কোনো সম্পর্ক নেই। ওই আইসোলেশন ইউনিটে সে সময় অবস্থানরত একজন মোবাইল ফোনে জানান, ওই বৃদ্ধ খুব শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। উনাকে অক্সিজেন দেওয়া হয়েছিল। মৃতের পাশেই বসে ছিলেন উনার স্ত্রী। ওই ইউনিটে বৃদ্ধের পাশে তার স্ত্রীকে অবস্থান করতে কেন দেওয়া হয়েছিল জানতে চাইলে ডা. নাদিরুল জানান, অন্য রোগীদের থেকে তারা এক মিটারের বেশি দূরত্বে ছিলেন। মৃত ব্যক্তির ছেলে আল মাসুদ মোবাইল ফোনে বলেন, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। উনার আগে থেকেই হৃদযন্ত্র ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। রাতে উনার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হলে হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উনাকে হাসপাতালের করোনাইউনিটে নেওয়ার আধা ঘণ্টা পর মারা যান। বিকেল ৪টার দিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তার বাবার দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানান তিনি।


মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest