বাগেরহাটে করোনায় ভাল নেই আটকে পড়া বেদেরা

প্রকাশিত: ৫:১৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৩, ২০২০

বাগেরহাটে করোনায় ভাল নেই আটকে পড়া বেদেরা
মোঃ সাগর মল্লিক বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের খানজাহান আলী মাজার মোড় সংলগ্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন কিছু ভাসমান বেদে। জীবিকার সন্ধানে বাগেরহাটে আসার পর করোনা পরিস্থিতির কারণে আটকে পড়েন তারা। দু-চারটি নয়, এখানে আশ্রয় নিয়েছে বেদেদের ৪৪টি পরিবার। করোনা পরিস্থিতিতে দু’চোখে অন্ধকার দেখছে এসব বেদেরা। রোজগারের সকল পথও বন্ধ। এখন খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে নারী ও শিশুসহ বেদে পরিবারের দুই শতাধিক মানুষ। বেদে সম্প্রদায়ের সরদার আবুল কালাম বলেন, ‘আমরা ভাসমান মানুষ। কয়েকদিন পর পর এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। পথেই থাকতে হয় স্ত্রী সন্তান নিয়ে। তবে করোনার কারণে এবার বাগেরহাটে আটকে গেছি আমরা। কর্মহীন হয়ে তাবুতে থাকতে হচ্ছে। সরকারের সহায়তায় চাল, ডাল, তেল, লবনসহ কিছু খাদ্য সামগ্রী পেয়েছিলাম। স্বাভাবিক সময়ের থেকে কম খেয়েও ১০ দিনের বেশি নিতে পারিনি। এখন কি খাব আমরা, সেটাই চিন্তা।’ শুধু আবুল কালামই নয়, এখানের বেদেদের সবগুলো পরিবারের একই অবস্থা। বেদে সাথী বেগম, বক্কার মিয়া, বাবু পরামানিকসহ কয়েকজন জানালেন, তারা জীবিকার তাগিদে বাপ-দাদার এ পেশায় যুক্ত। দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ছুটে বেড়ান খাবারের সন্ধানে। এক সময় জীবন ছিল জলপথে নৌকায় নৌকায়। ঝাড়ফুক করে, তাবিজ ও ওষুধি গাছ-গাছড়া বিক্রি করে চলতো সংসার। নদী পথ সীমিত হওয়ায় স্থল পথে গ্রামে গ্রামে ঘুরতে হয়। ওইসব গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় দিন চলে তাদের। সাথী বেগম বলেন, ‘বাগেরহাটে এসে কয়েকদিন কাজ করার পর হঠাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগের থেকেও ভয়াবহ করোনাভাইরাস আমাদের তাবু বন্দি করে রেখেছে। ১৩-১৪ দিন আগে কিছু খাবার পেয়েছিলাম। তা ফুরিয়ে গেছে আরও দুই তিন দিন আগে। সপ্তাহ খানেক আগে হঠাৎ ভ্যানে নাম না জানা এক ব্যক্তি এক বস্তা মাছও দিয়েছিল। তাতে আমরা খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু দীর্ঘ সময় বন্দি থাকতে হবে কে বুঝতে পেরেছে। সীমানার বাইরে বের না হতে পেরে, একধরণের দমবন্ধ জীবন কাটাচ্ছি। এর মধ্যে ঘরে নেই খাবার। কি করব বুঝে উঠতে পারছি না। এভাবে আর কত দিন চলবে জানিনা।’

মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest