জয়পুরহাটে চাঁদাবাজির সময় ভূয়া দুই পুলিশ আটক

প্রকাশিত: ১১:২১ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৬, ২০২০

জয়পুরহাটে চাঁদাবাজির সময় ভূয়া দুই পুলিশ আটক
আল-কারিয়া চৌধুরী জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বিভিন্ন এলাকা লকডাউন রয়েছে। এই সুযোগে দুই তরুণ গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে দোকানদারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। তবে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁরা ধরা পড়েন আসল পুলিশের কাছে। ঘটনাটি ঘটেছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের ফুলতলী বাজারে। আটক দুই তরুণ হলেন রাজু ইসলাম (২২) ও জাকারিয়া হাবিব (২০)। তাঁরা বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার বড়িয়া মণ্ডলপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ওই দুই তরুণ আনসার ভিডিপির প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। একটি মোটরসাইকেলে সাইরেন লাগিয়ে সেটি নিয়ে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন বাজারে গিয়ে নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করেন। গতকাল সন্ধ্যায় ধরা পড়ার পর তাঁরা গণধোলাইয়ের শিকার হন। লোকজন মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাতকড়া পরিয়ে তাঁদের থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। এলাকাবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে একটি মোটরসাইকেলে সাইরেন বাজিয়ে দুই তরুণ রায়কালী ইউনিয়নের সনাতনপুর বাজারে আসেন। ওই বাজারের ওয়াসিম তাঁর কীটনাশক ও সারের দোকান খুলে বসেছিলেন। দুই তরুণ ওয়াসিমের দোকানে গিয়ে নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয় দিয়ে দোকান খুলে রাখায় তাঁকে আটক করার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করেন। ওয়াসিম তাঁদের সঙ্গে এক হাজার ৭০০ টাকায় রফা করেন। টাকার রসিদ দেওয়ার কথা বলে দুই তরুণ মোটরসাইকেল নিয়ে সেখান থেকে দ্রুত সটকে পড়েন। এতে ওয়াসিমের সন্দেহ হলে তিনি ঘটনাটি আশপাশের লোকজনকে জানান। পরে তাঁরা দুই তরুণের সন্ধানে বের হন। এর মধ্যে ওই দুই তরুণ পুন্ডরিয়া বাজারে গিয়ে আরেক সারের দোকান খোলা দেখতে পান। তাঁরা দুজন দোকানের মালিক মাসুদের কাছে দুই হাজার টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলে করে দেওড়া বাজারের দিকে যান। মাসুদ তাঁর আশপাশের লোকজনকে ঘটনাটি জানান। ওয়াসিম ও তাঁর লোকজন পুন্ডুরিয়া বাজারে এসে ঘটনাটি জানতে পারেন। পুন্ডরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক পুলিশকে মুঠোফোনে ঘটনাটি জানান। তখন পুলিশ জানায়, কোনো পুলিশ সদস্য সেখানে যাননি। এরপর লোকজন একত্রিত হয়ে ওই দুই তরুণের খোঁজে বের হয়ে ফুলতলী বাজারের দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলতে দেখেন। লোকজন দেখে সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে লোকজন তাঁদের ধরে ফেলেন। উত্তেজিত লোকজন গণধোলাই দিয়ে তাঁদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করেন। পরে তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রাত আটটায় থানায় গিয়ে দেখা যায়, কর্তব্যরত কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওই দুই তরুণের নাম-ঠিকানা জিজ্ঞাসা করছেন। দুই তরুণ পুলিশ পরিচয়ে অর্থ আদায়ের কথা স্বীকার করেন। তাঁরা জানান, লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই তাঁরা এই প্রতারণা করছেন। আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়েদ বলেন, এ ঘটনায় দোকানি ওয়াসিম বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মুজিব বর্ষ

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest