ফকিরহাটের গলদা বাগদা চিংড়ি চাষিরা পড়েছে বিপাকে

প্রকাশিত: ১:৪৪ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২০

ফকিরহাটের গলদা বাগদা চিংড়ি চাষিরা পড়েছে বিপাকে
মোঃ সাগর মল্লিক বাগেরহাট প্রতিনিধি : করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশের সাদা সোনা খ্যাত গলদা বাগদা চিংড়ির দাম মারাত্মক কম হওয়ায় ফকিরহাটে চিংড়ি চাষ পড়েছে হুমকির মুখে। উৎপাদন খরচ না উঠায় ফকিরহাটের অধিকাংশ চিংড়ি চাষীরা হতাশায় ভুগছে। এভাবে চলতে থাকলে এ রপ্তানী খাতটি বন্ধের উপক্রম হবে বলে উপজেলার চিংড়ি চাষীরা জানিয়েছেন। যে হারে খরচ হয় সেই অনুপাতে দাম না পাওয়ায় চিংড়ী চাষীদের পথে বসার উপক্রম প্রায়।জানা গেছে, ৮০’র দশক থেকে দক্ষিনাঞ্চলে ধান চাষের পাশাপাশি চিংড়ি চাষ শুরু হয়। যার থেকে সরকার প্রতি বছর আয় করছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে চিংড়ীর দাম মারাত্মকভাবে দরপতন হওয়ায় খাতটি হুমকির মুখে পড়েছে। কয়েক বছর পূর্বে চিংড়ির গ্রেড হিসেবে বাজার দাম ছিল কেজিপ্রতি ২০ গ্রেড ১২-১৪’শ টাকা। কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে দাম কমে চলে এসেছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। জেলার ফকিরহাট উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য চাষীদের সাথে কথা হলে তারা বলেন,করোনার কারণে আমরা চরম খারাপ অবস্থায় আছি। আমরা লোন নিয়ে চাষ করেছি।এনজিও থেকে কিস্তির জন্য চাপ দিচ্ছে,এদিকে মাছের কোন দাম নাই।সার,রেণূ পোনা সহ যাবতীয় খরচ উঠাতেই কষ্ট হচ্ছে।সরকার যদি আমাদের সহযোগিতা করে তবে পরিবার, পরিজন নিয়ে দুবেলা দুমূঠো খেয়ে বাচতে পারবো। তাছাড়া কিছুদিন আগে ঘুর্ণিঝড় আম্পানের কারণে ঘের ভেড়ি ঢুবে গেছে যার কারণে চাষের মাচ সব বের হয়ে গেছে। সরকার আমাদের যদি সহযোগিতা না করে তবে পরিবার পরিজন নিয়ে রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবেনা। শুধু চিংড়ী খাত নয়, হিমায়িত মৎস্য চাষীদের ও একই অবস্থা। যে মাছের মণ আগে ১৪-১৫ হাজার টাকা ছিল সেই মাছ ৫-৬ হাজার টাকা মণ বিক্রয় করতেই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উপজেলার সব থেকে বড় মৎস্য আড়ৎ ফলতিতা।সরেজমিনে গিয়ে দেখা গিয়েছে,ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে বিশাল এই মৎস্য আড়ৎ। আর বিক্রেতারা মাছ নিয়ে বসে আছে ক্রেতার অপেক্ষায়। কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে পুরোপুরি ক্রেতা শ্যুন্য হয়ে পড়েছে বাজারটি। আর যারা আসছে তার পরিবারের জন্য সামান্য কিছু ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন যাতে কোনভাবে লাভবান হচ্ছেনা মৎস্য চাষীরা। এ বিষয়ে ফকিরহাট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অভিজিৎ শীল এর সাথে কথা হলে তিনি ডেল্টা টাইমস্-কে বলেন,করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে চিংড়ী ও হিমায়িত মৎস্য চাষীরা দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে,আমরা ক্ষতিগ্রস্থ চাষীদের নাম সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ইতিমধ্যে প্রেরণ করেছি।আশা করি খুব দ্রুতই সরকার কর্তৃক প্রনোদনা পাবেন ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য চাষীরা। দেশের রাজস্ব খাতে অতুলনীয় ভুমিকা রাখা এই মৎস্য খাত-কে আরো সমৃদ্ধিশীল করতে প্রয়োজন সরকারের সহযোগিতা আর তার পাশাপাশি সহজ ঋণের ব্যাবস্থা করা।তাতে রক্ষা পাবে এই চিংড়ী খাতটি।

alokito tv

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

Pin It on Pinterest