ঢাকা ১৩ আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯ শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:৫৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৪, ২০২১
একদিকে করোনা অন্যদিকে ডেঙ্গুর প্রভাব বেড়েই চলেছে। করোনাভাইরাস আর ডেঙ্গু যেন হাতে হাত রেখে একসঙ্গে তাণ্ডব চালাচ্ছে। এমন অবস্থায় সুস্থ থাকাটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। তাই করোনার সময় যদি তীব্র জ্বর ও মাথাব্যথায় আক্রান্ত হন তাহলে ডেঙ্গুর কথা ভুলে যাবেন না। বর্ষায় রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহরের জলাবদ্ধতায় হু হু করে ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু।
করোনা ও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলোর মিল–অমিলগুলো এবার তাহলে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
করোনা আর ডেঙ্গু দুটিই মূলত ভাইরাসজনিত জ্বর (ভাইরাল ফিভার)। দেড় বছর ধরে চলছে করোনাকাল। আর বর্ষা মৌসুমে বাড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ। প্রতিদিন করোনা ও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শত শত মানুষ। জ্বর, মাথাব্যথা ও শরীরে ব্যথার মতো লক্ষণ থাকলে আপনার করোনা বা ডেঙ্গু অথবা করোনা ও ডেঙ্গু—দুটিই হতে পারে।
কোভিড ও ডেঙ্গু, দুই ধরনের সংক্রমণেই জ্বর থাকবে। জ্বরের মাত্রার তারতম্য হতে পারে। জ্বরের সঙ্গে মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, গা ম্যাজম্যাজ করা, ক্ষুধামান্দ্যর মতো প্রাথমিক উপসর্গ থাকে দুটিতেই। করোনা বারবার ধরন পাল্টাচ্ছে, তাই উপসর্গও বদলে যাচ্ছে। কখনো তীব্র অরুচি আর স্বাদহীনতা প্রকট হয়ে দেখা দেয়। কখনো উপসর্গ বলতে কেবল ডায়রিয়া আর জ্বর। কখনোবা কেবল মাথাব্যথা। করোনায় অনেকে ঘ্রাণ পায় না। ডেঙ্গু জ্বরে ঘ্রাণ থাকবে।
করোনায় এখনো জ্বরের সঙ্গে শরীরে ফুসকুড়ি আর দাঁত-নাক বা অন্য জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ হয়নি। রক্তে প্লাটিলেটের মাত্রা কমে যেতে পারে; এটাও কেবল ডেঙ্গুতেই হয়। আবার দ্রুত অক্সিজেনের লেভেল কমে যাওয়া ও শ্বাসকষ্ট হওয়া করোনার প্রকট লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম। ডেঙ্গুতে এসব লক্ষণ বিরল। হয় না বললেই চলে।
করোনার টিকা থাকলেও ডেঙ্গুর কোনো টিকা নেই। যেহেতু ডেঙ্গু ভাইরাস চার ধরনের, তাই একই সঙ্গে চারটি ভাইরাসের প্রতিরোধে কাজ করে এমন টিকা এখনো আবিষ্কৃত হয়নি।
সাধারণ লক্ষণগুলো থাকলেই সবার আগে করোনা আর ডেঙ্গু—দুটিরই পরীক্ষা করাতে হবে। চার ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাসে মূলত দুই ধরনের জ্বর হয়। ক্লিনিক্যাল ডেঙ্গু জ্বর ও হেমোরেজিক ফিভার। ডেঙ্গু জ্বর অন্যান্য ভাইরাল ফিভারের মতো নিজে থেকেই সাত দিনের মধ্যে সেরে যায়। তবে হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বর ভয়াবহ হতে পারে। শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ ১০৪ থেকে ১০৬ ডিগ্রি পর্যন্ত উঠতে পারে। চরম বিষাদগ্রস্ততা দেখা দিতে পারে। অরুচি, বমি বমি ভাব এবং ত্বক লাল হতে পারে। এ জ্বর ৩ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হয়। শরীরের চামড়ার নিচে রক্তক্ষরণ হতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ত্বকে রক্তক্ষরণজনিত উপসর্গ দেখা যায়।
ডেঙ্গুর নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা না থাকলেও এ সময় প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা, বিশ্রাম নেওয়া এবং প্রচুর তরল খাবার খাওয়া উচিত। জ্বর কমানোর জন্য কোনোমতেই প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য ওষুধ খাওয়া যাবে না। জ্বরের সঙ্গে রক্তক্ষরণের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। জ্বর কমানোর জন্য ভেজা কাপড়ে বারবার শরীর মুছে দিতে হবে।
চিকিৎসকরা বলছেন, একজন ব্যক্তি একই সঙ্গে কোভিড-১৯ এবং ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন। মশা নিধনের কার্যক্রম জোরদার করতে না পারলে পরিস্থিতি গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। বাংলাদেশে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২০ Developed By Agragami HOST